ভাষা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রুখে দিতে হবে -ইসলামী নেতৃবৃন্দ
প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম
স্টাফ রিপোর্টার : ভাষা আন্দোলনের দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ইসলামী দলের পৃথক পৃথক আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বাংলাদেশে সকল সাংস্কৃতিক আগ্রাসন রুখে দিতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে আলেমগণকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। একই সাথে বাংলা ভাষার চর্চা ও বিকাশে সকল শ্রেণীর মানুষদের যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, মাতৃভাষা বাংলা আল্লাহর দেয়া সেরা দান। কেননা, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনও নিজ-ভাষাভাষিদের কাছে যখন কোন নবীগণকে (সা.) পাঠিয়েছেন তাকে সে ভাষা দিয়েই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কাজেই ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও মাতৃভাষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। যারা আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়ে ভিন্ন ভাষা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল ওরা জালিম। এদের আগ্রাসন রুখে দিতে হবে। তিনি বলেন, ভাষার জন্য শাহাদাতবরণকারী সালাম, জব্বার, বরকত, রফিকরা নিজ জীবন বিলিয়ে দিয়ে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। কিন্তু আজ বাংলা ভাষার সর্বত্র প্রচলন হচ্ছে না। অধ্যক্ষ ইউনুছ আহমাদ আরো বলেন, একুশের চেতনায় চলমান সঙ্কট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আমাদের দেশের শাসক শ্রেণীর দুর্বলতার কারণে ভিনদেশী সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে দেশ। আমাদেরকে ভারতীয় ও পশ্চিমা সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে জর্জরিত করেছে। নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চার পরিবর্তে ভিনদেশী সংস্কৃতির আমদানী করছি। নব্য নাস্তিক-মুরতাদ ও নবীর দুশমনসহ সকল ষড়যন্ত্রকারী শক্তিকে রুখে দিতে হবে। ভাষা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ দান। মুখের ভাষাকে যারা কেড়ে নিতে চেয়েছিল তারা আসলেই মানবতার শত্রু। এই মানবতার শত্রুদের যেভাবে বাংলার দামাল ছেলেরা পরাজিত করে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তেমনিভাবে মহানবীর দুশমন নব্য নাস্তিকদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে।
গতকাল বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। পুরানা পল্টনস্থ অফিস মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর সভাপতি অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ আলতাফ হোসেন, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, শ্রমিক নেতা সৈয়দ ওমর ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মু. মোশাররফ হোসেন, এইচ এম সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম
স্টাফ রিপোর্টার : সাংস্কৃতিক সকল আগ্রাসন রুখে দাঁড়াতে হবে। যুগ যুগ ধরে এ দেশের মুসলমানরা নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির পরিম-লে থেকে ধর্ম-কর্ম পালন করে আসছে। কিন্তু ইদানীং ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির নামে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বেহায়ামী ও অশ্লীলতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যে কোন মূল্যে বিজাতীয় ভাষা ও সাংস্কৃতিক এ আগ্রাসনের মোকাবেলায় সর্বস্তরের জনতাকে এগিয়ে আসতে হবে। ভাষা দিবস উপলক্ষে গতকাল সকালে জামিয়া মাদানীয়া বারিধারা মাদরাসা মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর জমিয়তের নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে দলের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাশেমী এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত সব নবীই (সা.) নিজ নিজ মাতৃভাষায় স্বজাতির কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছেন। অথচ আলেমদের মাতৃভাষার প্রতি অনীহা মাতৃভাষাও দ্বীনের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। বাংলা ভাষাভাষি মুসলমানদের কাছে মাতৃভাষায় ইসলামের শাশ্বত বাণী পৌঁছানোর দায়িত্ব আলেম-উলামাদের। সুতরাং বাংলা ভাষার চর্চা ও বিকাশে আলেমসহ সকল শ্রেণীর অগ্রণী ভূমিকা পালন করা এখন সময়ের দাবি।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, ঢাকা মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, মাওলানা মাহবুবুল আলম, মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম, হাফেজ ওমর ফারুক, বোরহান উদ্দীন প্রমুখ।
খিলগাঁও থানা কমিটি গঠন
খিলগাঁওস্থ মেরাদিয়া মাহমুদীয়া মাদরাসা মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ খিলগাঁও থানার কাউন্সিলে মাওলানা মুস্তফা মাহমুদীকে সভাপতি ও মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক, মাওলানা বিন ইয়ামিনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম খিলগাঁও থানা কমিটি গঠন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, উপস্থিত ছিলেন মাওলানা হেদায়েতুল ইসলাম, মাওলানা মাহবুবুল আলম, মাওলানা তাজুল ইসলাম, মাওলানা বশিরুল হাসান, মাওলানা ওমর আলী, মাওলানা বোরহান উদ্দীন, সুহাইল আহমদ প্রমুখ।