Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৩৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার জন্য

| প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিষয় : বাংলা (বিরচন অংশ)

শামসুল আলম
চেয়ারম্যান
ক্যারিয়ার গাইডলাইন

সারমর্ম
                     (১)
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দেখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেইÑপ্রীতি নেইÑকরুণার আলোড়ন ইন
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি,
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হয়
মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।
সারমর্ম: পৃথিবী যখন প্রীতিহীন, মমতাহীন, মনুষ্যত্বহীন অন্ধ ক্ষমতাধর মানুষদের করায়ত্ত হয় তখন শিল্প-সংস্কৃতির সাধনা হয় উপেক্ষিত, মহৎ মানুষেরা হয়ে পড়ে অসহায় ও অবহেলিত।
                  (২)
অন্ধকার গর্তে থাকে অন্ধ সরীসৃপ;
আপনার ললাটের রতন প্রদীপ
নাহি জানে, নাহি জানে সূর্যালোকলেশ।
তেমনি আঁধারে আছে এই অন্ধ দেশ।
হে দ-বিধাতা রাজাÑযে দীপ্ত রতন
পরায়ে দিয়েছ ভালে তাহার যতন
নাহি জানে, নাহি জানে তোমার আলোক।

নিত্য বহে আপনার অস্তিত্বের শোক,
জনমের গ্লানি। তব আদর্শ মহান
আপনার পরিমাপে করি খান-খান
রেখেছে ধূলিতে। প্রভু, হেরিতে তোমায়
তুলিতে হয় না মাথা ঊর্ধ্ব-পানে হায়।

যে এক তরণী লক্ষ লোকের নির্ভর
খ- খ- করি তারে তরিবে সাগর?
সারমর্ম: রতœভাস্বর এই দেশ তার ঐশ্বর্য ভুলে অজ্ঞানতার অন্ধকার ও দুঃখ-গ্লানিতে আচ্ছন্ন। বিশাল ঐতিহ্য ভুলে তা বিভেদের আবর্তে নিমগ্ন। ঐতিহ্যবোধ ও ঐক্যচেতনার শক্তিতেই এই দেশ যথার্থ গৌরব পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে।

                  (৩)
আঠারো বছর বয়সে আঘাত আসে
অবিশ্রান্ত; একে একে হয় জড়ো,
এ বয়স কালো লক্ষ দীর্ঘশ্বাসে
এ বয়স কাঁপে বেদনায় থরোথরো।
তবু আঠারোর শুনেছি জয়ধ্বনি,
এ বয়স বাঁচে দুর্যোগে আর ঝড়ে,
বিপদের মুখে এ বয়স অগ্রণী
এ বয়স তবু নতুন কিছু তো করে।
সারমর্ম: আঠারো বছর বয়স প্রবল অবেগের বয়স, জীবনে ঝুঁকি নেওয়ার বয়স। অবক্ষয়ের অজস্র অভিঘাতে এ বয়সে জীবন হয়তো হয়ে উঠতে পারে ক্ষতবিক্ষত। কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা, অদম্য প্রাণশক্তি, দুর্বার সাহসিকতা, নবজীবনের স্বপ্ন রূপায়ণে এ বয়স হতে পারে জাতির অগ্রযাত্রার চালিকাশক্তি।

                       (৪)
আমার একূল ভাঙ্গিয়াছে যেবা আমি তার কূল বাঁধি,
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি।
যে মোরে দিয়েছে বিষে ভরা বাণ,
আমি দেই তারে বুকভরা গান;
কাঁটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনমভর,Ñ
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর

মোর বুকে যেবা কবর বেঁধেছে, আমি তার বুক ভরি,
রঙিন ফুলের সোহাগ-জড়ানো ফুল-মালঞ্চ ধরি।
যে মুখে সে কহে নিঠুরিয়া বাণী,
আমি লয়ে করে তারি মুখখানি,
কত ঠাঁই হতে কত কী যে আনি, সাজাই নিরন্তরÑ
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
সরামর্ম: প্রেম ও প্রীতির শক্তিতে মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য ও মৈত্রীর সম্পর্ক রচনাই মনুষ্যত্বের লক্ষণ। পরের দেওয়া দুঃখ সহ্য করে পরকে আপন করতে পারলে, ভালোবাস দিয় শত্রুর মন জয় করতে পারলে মানুষের জীবন সুন্দর হয় এবং মানব জীবন সার্থক হয়।

                    (৫)
আমি কবি যত কামারের আর কাঁসারির আর ছুতোরের
মুটে মজুরের,
Ñ আমি কবি যত ইতরের।
আমি কবি ভাই কর্মের আর ঘর্মের,
বিলাস বিবশ মর্মের যত স্বপ্নের তরে ভাই,
সময় যে হায় নাই!
মাটি মাগে ভাই হালের আঘাত,
সাগর মাগিছে হাল,
পাতালপুরীর বন্দিনী ধাতু
মানুষের গালি কাঁদিয়া কাটায় কাল।
দুরন্ত নদীর সেতুবন্ধনে বাঁধা যে পড়িতে চায়,
নেহারি আলসে নিকিল মাধুরী
সময় নাহি সে হায়!
সারমর্ম: নবযুগের কবি কাব্যবিলাসীদের দলে নন, বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষর কর্মসাধনার সঙ্গে একাত্ম। কর্মহীন ভাবালুতায় বিভোর হওয়া নয়, বরং কর্মব্রতী মানুষের কর্মসাধনার বিপুল প্রবাহের অংশীদার হওয়াই তাঁর কাম্য। ভাব বিলাসিতার পরিবর্তে শ্রমজীবী মানুষের কর্মষজ্ঞই হবে তাঁর কবিতার উপজীব্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন