পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার বার্তার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত রাখাইন রাজ্যে ওআইসি প্রতিনিধিদলকে সফরের অনুমতি দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। গত বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা ইস্যুতে মালয়েশিয়ায় আয়োজিত ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বিশেষ বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
কয়েক দশক ধরে কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান তারা। বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে তাদের ওপর হামলা বন্ধ করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান মুসলিম বিশ্বের নেতারা। আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলার প্রতি মিয়ানমারকে আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে রাখাইনে প্রতিনিধিদল পাঠাবেন ওআইসি মহাসচিব। তাদের সফর নির্বিঘœ করতে মিয়ানমার সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। এ বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ওআইসির ওয়েবসাইটে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংস হামলার ঘটনা বিষয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে দেশটির ১৯৮২ সালের নাগরিক আইন সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে আইন অনুযায়ী চলা ও সহিংসতায় জড়িত অপরাধীদের বিচারের দাবি জানিয়েছে ওআইসি।
জাতিসংঘ ও আসিয়ানের সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের যৌথভাবে কোনো উদ্যোগ নেয়া যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য ওআইসি মহাসচিবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া যেসব দেশে উদ্বাস্তু হিসেবে রোহিঙ্গারা বসবাস করছে, তাদের খরচের বোঝা লাঘবের জন্য মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে আসতে বলেছে ওআইসি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ৩৩ হাজারের মতো নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রয়েছে। এর বাইরেও প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বসবাস করে আসছে বলে ধারণা করা হয়। গত অক্টোবরে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে সরকার বলছে।
চলতি মাসেই মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির বিশেষ দূত হিসেবে দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী উ চ থিন ঢাকা সফরে এলে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে একটি কর্মসূচির প্রস্তাব দেয় ঢাকা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুয়ালালামপুরের বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার রক্ষার পাশাপাশি শরণার্থী হওয়া ও বাস্তুচ্যুতদের তাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করতে ওআইসির প্রতি আহ্বান জানান তিনি। রোহিঙ্গা মুসলিমদের অব্যাহত দুর্ভোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চুপ থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।
বৈঠক উদ্বোধনী বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা ও মৌলিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চনা শেষ হওয়ার দাবি করেন তিনি। মিয়ানমারে ওআইসির বিশেষ দূত সৈয়দ হামিদ আলবার রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
রোহিঙ্গাদের নৃশংসতার শিকার হওয়া, ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লংঘন এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সহিংসতার মাধ্যমে তাদের শাস্তি দেয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। মিয়ানমারের সঙ্গে মানবাধিকার কাউন্সিলসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন হামিদ আলবার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।