Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহাকাশে ভ্রমণ নিয়ে প্রতিযোগিতা!

প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভার্জিন আটলান্টিক তার নতুন বাণিজ্যিক স্পেসশিপ উদ্বোধন করলো দু’দিন আগে। মহাকাশে অভিযাত্রার একটি সময় ছিলো শুধু কয়েকটি দেশের জাতীয় গর্বের বিষয়। আর মহাকাশে যাওয়ার সৌভাগ্য জুটতো শুধু নভোচারীদের। কিন্তু হয়তো শীঘ্রই সৌভাগ্য হতে পারে সাধারণ কোন মানুষের। অঢেল অর্থ-সম্পদের মালিক হলে আপনিও মহাকাশে বেড়াতে যেতে পারবেন। সেই ভবিষ্যতের দিকে একটু একটু করে এগুচ্ছে পৃথিবী। আর সে লক্ষ্যে ইদানিং বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতায় নেমেছে বেশ কয়েকটি কোম্পানী।
কিভাবে চলছে মহাকাশে পর্যটনের প্রতিযোগিতা?
দেখতে খানিকটা ছোট প্রাইভেট জেটের মতো। একটা গাড়ি দিয়ে তাকে মঞ্চে টেনে আনা হচ্ছে। গাড়িতে রয়েছেন ভার্জিন গ্যালাকটিকের স্বত্বাধিকারী স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন। নিজের কোম্পানির তৈরী নতুন স্পেসশীপ ঠঝঝ ইউনিটিকে বিশ্বের সামনে প্রথমবারের মতো উপস্থাপন করলেন তিনি। আগে মহাকাশে যাওয়ার সৌভাগ্য জুটতো শুধু নভোচারীদের, কিন্তু ইদানিং তা পাল্টেছে। করতালি আর উল্লাস দিয়ে ইউনিটিকে স্বাগত জানালো উপস্থিত অতিথিবৃন্দ।
বাণিজ্যিকভাবে তারার দেশে মহাকাশযান পাঠানোর কাজের শুরুটা অবশ্য অতটা সহজ ছিলো না ভার্জিন গ্যালাকটিকের জন্য। দু’বছর আগে পরীক্ষামূলক যাত্রার সময় মরুভূমিতে বিধ্বস্ত হয়েছিলো স্পেস শিপটির আগের ভার্সন এন্টারপ্রাইজ। নিহত হয়েছিলো তার পাইলট। কিন্তু তাতে থেমে যাননি স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন। “১৫ মাস আগে আমরা যে বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছিলাম তাতে আমরা অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনার পরদিন থেকেই সবাই আবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছিলো। এই মহাকাশযানটিকে তৈরী করতে তারা দিনরাত্রি অবিরাম কাজ করেছেন। যার ফল হলো আমরা ঠঝঝ ইউনিটিকে তৈরী করতে পারলাম”।
পৃথিবী থেকে ১০০ কিলোমিটার উপরে যাত্রার ক্ষমতা দিয়ে বানানো হয়েছে ইউনিটি। এর যাত্রী ধারণ ক্ষমতা মোটে ছয়জন। অন্য মহাকাশযান সরাসরি ভূমি থেকেই যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ইউনিটিকে মহাকাশ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসবে অন্য আর একটি বাহন যাকে বলা হচ্ছে মাদারশিপ।
তা সে যেমন করেই হোক মহাকাশে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই টিকিট কিনেছেন কয়েকজন। ব্যাপক ধৈর্য ধরে তাদের অপেক্ষাও করতে হচ্ছে। দু’বছর আগে পরীক্ষামূলক যাত্রার সময় মরুভূমিতে বিধ্বস্ত হয়েছিলো স্পেস শিপটির আগের ভার্সন এন্টারপ্রাইজ। নিহত হয়েছিলো তার পাইলট।
সবচেয়ে প্রথম দিকে যারা টিকেট কিনেছেন নরফোকের রিচার্ড বার তাদের একজন। “আমি দশ বছর আগে টিকেট কিনেছি। যার দাম ছিলো ২ লাখ ডলার। আশা করি হয়ত আগামী দু’বছরের মধ্যে অন্তত আমার আশা পূরণ হবে। তবে যদি আরো অপেক্ষা করতে হয় তাতেও আমার দুঃখ নেই। কারণ এমন অসাধারণ কিছু করার সুযোগ যে কোনদিন মিলবে সেটাই তো কোনদিন ভাবতে পারিনি”।
১৯৬০ দশক থেকে অনেক দূর এগিয়েছে মহাকাশ অভিযানের প্রক্রিয়া। তখন শুধু কয়েকটি দেশের জাতীয় গর্বের বিষয় ছিলো সেটি। কিন্তু এখন মহাকাশ অভিযানের নতুন ধাপ শুরু হয়েছে। বেশ ক’টি কোম্পানি ইতিমধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশযান পাঠানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল এয়ার এ্যান্ড স্পেস মিউজিয়ামের কর্মকর্তা ভ্যালারি নিইল, মহাকাশযাত্রার নতুন ধাপকে স্পেস ট্যুরিজম বলে বর্ণনা করলেন। “বেশ শক্ত প্রতিযোগিতা চলছে বলতে হবে। ধরুন কোন এয়ারলাইনের ফ্লাইটে যাত্রার বিষয়টা যেমন সহজ, ঠিক সেরকম সহজ মহাকাশ পর্যটন চালু হবে। আর তা নিয়ে যে ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে তা খুবই চমকপ্রদ একটি বিষয়” একসময় মহাকাশে যাওয়ার দুর্লভ সৌভাগ্য হতো শুধু নভোচারীদের। অনেক পরীক্ষা দিয়ে দীর্ঘদিনের কঠিন প্রশিক্ষণের পরেই তাদের পাঠানো হতো। কিন্তু রহস্যে ঘেরা মহাকাশে বেড়াতে যাওয়ার স্বপ্ন ছিলো বহু মানুষের। সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার দিকে হয়ত একটু একটু করে এগুচ্ছে পৃথিবী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহাকাশে ভ্রমণ নিয়ে প্রতিযোগিতা!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ