দু’বছর পর পদ্মা লাইফে সিইও
প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েক দফা দর কষাকষির পরে অবশেষে কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পেলেন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জীবন বীমা কোম্পানি পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্সু্যুরেন্স লিমিটেড। স¤প্রতি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) কামরুল হাসানকে প্রতিষ্ঠানটির সিইও হিসেবে নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে সিইও নিয়োগ না দেওয়ায় কোম্পানিটির পরিচালনা পরিষদের সব সদস্যকে জরিমানাও করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
এদিকে আইন লঙ্ঘন করায় গত বছরের এপ্রিলে কোম্পানির চেয়ারম্যানসহ প্রত্যেক পরিচালককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করে আইডিআরএ। এরপরও প্রায় ১০ মাস খালি ছিল সিইও পদটি। সিইও নিয়োগে অনিয়মের কারণে আইডিআরএ পরিচালকদের জরিমানা করলে ওই মাসেই সিইও হিসেবে এ কে এম ইলিয়াস হোসেনের নিয়োগ অনুমোদন চেয়ে আবেদন করে পদ্মা ইসলামী লাইফের পরিচালনা পরিষদ। এরপর ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে গত ১৫ মে আইডিআরএ’র কাছে একটি অভিযোগ আসে। এতে বলা হয়, ইলিয়াস হোসেন জীবন বীমা কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম করেছেন। এ অভিযোগের পরেই ইলিয়াস হোসেনের সিইও নিয়োগ অনুমোদন আটকে দেয় আইডিআরএ।
আইডিআরএ সূত্র জানিয়েছে, পদ্মা লাইফের সিইও পদটি পূরণের জন্য আইডিআরএ থেকে প্রথম চিঠি দেওয়া হয় ২০১৪ সালের ৫ মে। ওই চিঠিতে সিইও নিয়োগের বিষয়ে বীমা আইন ২০১০’র ৮০(৪) ধারার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এরপরও পদ্মা লাইফ সিইও পদ পূরণের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকে। এরপর ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর আইডিআরএ থেকে পদ্মা লাইফকে আরও একটি চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে ৫ মে’র চিঠি মোতাবেক কোম্পানি সিইও নিয়োগ না করায় এবং কেন বিধি মোতাবেক সিইও নিয়োগ দেওয়া হয়নি তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। আইডিআরএ’র ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মা লাইফ ১৭ ডিসেম্বর এক চিঠি দেয়। আইডিআরএ’কে দেওয়া পদ্মা লাইফের ওই চিঠিতে বলা হয়, পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে সিইও পদটি পূরণ করা হবে।
পরে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি পদ্মা লাইফ থেকে সিইও হিসেবে মোহাম্মদ ওয়াসিউদ্দিনের নিয়োগ অনুমোদন চেয়ে আইডিআরএকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু বীমা কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা অনুসারে, মোহাম্মদ ওয়াসিউদ্দিনের বীমা কোম্পানির সিইও হওয়ার যোগ্যতা না থাকায় তার আবেদন বাতিল করে দেয় আইডিআরএ।
পরে গত ১ ফেব্রæয়ারি পদ্মা লাইফ কর্তৃপক্ষ কামরুল হাসানের নিয়োগ অনুমোদন চেয়ে আইডিআরএ’র কাছে আবেদন করে। এই আবেদনে সই করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. এ বি এম জাফর উল্লাহ। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ১১ ফেব্রæয়ারি কামরুল হাসানকে পদ্মা ইসলামী লাইফের সিইও হিসেবে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে ২০১৪ সালের মার্চ মাস থেকে কোম্পানিতে সিইও পদটি খালি পড়ে ছিল। দীর্ঘদিন সিইও পদ শূন্য রেখে এই প্রতিষ্ঠানটি বীমা আইন ২০১০’র ৮০(৪) ধারাও লঙ্ঘন করে। এ জন্য পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্যকে ব্যক্তিগত ভাবে জরিমানাও গুণতে হয়েছে।
অনুমোদন পত্রে সাড়ে ৩ লাখ টাকা বেতন নির্ধারণ করে আইডিআরএ কামরুল হাসানকে ৩ বছরের জন্য সিইও হিসেবে নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। বেতনের পাশাপাশি তিনি চুক্তির শর্ত অনুসারে অন্যান্য সুবিধা পাবেন। এ সময়ের মধ্যে তার বেতন ও অন্যান্য সুবিধার কোনো তারতম্য করা যাবে না।
বীমা আইন ২০১০’র ৮০(৪) ধারা লঙ্ঘন করে আসছিল পদ্মা ইসলামী লাইফ। আইনের এ ধারাটিতে বলা হয়েছে, বীমা কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ ৩ মাসের বেশি শূন্য রাখা যাবে না। তবে অপরিহার্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এ সময় আরও ৩ মাস বাড়াতে পারবে।