পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো ; ওসির ‘ইয়াবা গেস্টহাউজে’ ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে চট্টগ্রামজুড়ে তোলপাড় চলছে। নগরীর অভিজাত খুলশী এলাকার কথিত ওই গেস্টহাউজে চলত ইয়াবাসহ মদ ও দেহব্যবসা। বখে যাওয়া তরুণ-তরুণীরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওই গেস্টহাউজে মিলিত হতো ভোগ-সম্ভোগে। আর এ গেস্টহাউজের মালিক নগরীর খুলশী ও সদরঘাট থানার সাবেক ওসি মাইনুল হক ভূঁইয়া। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতার পুত্র ওসি মাইনুল দাপটের সাথে ওসিগিরি করেছেন নগর পুলিশের কয়েকটি থানায়। খুলশী থানার ওসি থাকাকালীন গেস্টহাউজ নামে মদ ও নারী ব্যবসার কেন্দ্র গড়ে তোলেন তিনি। অবশেষে সেখানে অভিযান চালিয়েছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার রাতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমানের নেতৃত্বে খুলশীর হাবিব লেনের ওই বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ‘ইয়ারা গেস্টহাউজ’ নামে এ বাড়িতে মাদক, দেহব্যবসা হয়। সদরঘাট থানার বহিষ্কৃত সাবেক ওসি মাইনুল এর মালিক। এ গেস্টহাউজ থেকে চার বোতল ভটকা, বিশ পিস ইয়াবা, ইয়াবা ও সীসা সেবনের সরঞ্জাম এবং এক লাখ চুয়াল্লিশ হাজার নয়শত নব্বই টাকা উদ্ধার করা হয়। ইয়াবা ব্যবসা, সেবন ও অসামাজিক কার্যক্রম চালানোর জন্য ১৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়েছে। জব্দকৃত মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে ও অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ইন্ডিয়ান ভিসা সেন্টারের পাশের গলি হাবিব লেন। এই লেনের শেষ মাথায় পাঁচ তলা বিল্ডিংয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ইয়ারা গেস্টহাউজ। নিচতলায় অফিস, দুই থেকে পাঁচ তলায় বিভিন্ন রুমে চলে দেহব্যবসা। প্রতি রুমে পাওয়া যায় ইয়াবা তৈরির সরঞ্জাম। নিচ তলার এক লকার থেকে চার বোতল ভটকা ও একটি কেবিনেট ভাঙা হলে সেখান থেকে এক লাখ ৯৯০ টাকা পাওয়া যায়।
পাওয়া যায় বিভিন্ন সময় এ হোটেলে আসা ব্যক্তিদের তালিকা। কল গার্লের তালিকা, বিভিন্ন তারিখে তাদের দেয়া টাকা ও টোকেন। হোটেলের মেয়েদের সাথে কথা বলে জানা যায় প্রতি পুরুষের কাছ থেকে হোটেলের মালিক এক হাজার টাকা করে নেয়, আর মেয়েদের দেয়া হয় ৫০০ টাকা করে। জীবনের তাগিদে তারা এ রাস্তায় এসেছেন। তাদের কেউ ঢাকা, কেউ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন। প্রাথমিকভাবে আটক হওয়া ১১ জন মেয়ের বয়স ২০-২৬ বছর পর্যন্ত। পরবর্তীতে মানবিক বিবেচনায় সতর্ক করে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
জেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় নাগরিক আবেদন থেকে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানে তথ্য প্রদানকারী ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ইন্সপেক্টরবৃন্দ ও নবম এপিবিএন সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, ওই গেস্টহাউজ থেকে আটক সন্দ্বীপের মগধরা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ববিও এ ব্যবসার সাথে জড়িত। তার পকেট থেকে তার ভাগের ৪৪ হাজার টাকা পাওয়া যায়। দালাল মো. মাসুম ও জাহাঙ্গীরকে ছয় মাস, পারভেজকে এক মাস, মো. ইউসুফ, মানিক ও বাহার আমজাদ, জাকারিয়া শাহাবুদ্দিন, ইমরানকে ১৫ দিন। বাবুর্চি তাহের (৬২), তার সহকারী নিত্য বড়–য়াকে (৫৮) মানবিক ও বয়স বিবেচনায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ওসি মাইনুলকে চসিক নির্বাচনের আগে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে খুলশী থেকে সরিয়ে সদরঘাট থানায় ওসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। সেখানে এক যুবলীগ নেতাকে থানায় নিয়ে মারধর করার ঘটনায় তাকে সাসপেন্ড করা হয়। খুলশী থানা থেকে প্রত্যাহার করার পরও তার এ গেস্টহাউজের কার্যক্রম চলতে থাকে। জানা গেছে, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জানলেও তা চেপে যান। অবশেষে এক পরিবহন নেতার তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হলো। একজন পুলিশ পরিদর্শকের তত্ত্বাবধানে কথিত গেস্টহাউজের নামে মদ ও নারী ব্যবসার ঘটনা উদঘাটনের পর পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।