Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিও হিসাব খোলার হিড়িক

| প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলছে। গত ৫ মাসে সূচকের যে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে ২০১০ এর মহাধ্বসের পর ছয় বছরে এমন দেখা যায়নি। এর সাথে তাল মিলিয়ে বেড়েই চলেছে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর। এতে দীর্ঘদিন লোকসানের ভারে ন্যুব্জ বিনিয়োগকারীরা মুনাফার মুখ দেখতে শুরু করেছেন। তাতে বাজারের প্রতি তাদের হারিয়ে যাওয়া আস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছে। আর আস্থা ফিরে আসার প্রমাণ পাওয়া গেছে বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব খোলার হিড়িক দেখে।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লি: (সিডিবিএল) জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৫ মাসে বিনিয়োগকারীরা নতুন ৩৬ হাজার ৬৮৩টি বিও হিসাব খুলেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি বিনিয়োগকারী ২৭ হাজার ৩৪১ জন এবং প্রবাসী ৮ হাজার ৮১০ জন নতুন বিও হিসাব খুলেছেন। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোও নতুন ৫৪২টি নতুন বিও হিসাব খুলেছে। সিডিবিএল সূত্র জানায়, ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বিও হিসাব সংখ্যা হয়েছে ২৯ লাখ ৪৭ হাজার ৯৫২টি। যা গত বছরের আগস্ট মাস শেষে ছিল ২৯ লাখ ১১ হাজার ২৬৯টি। এর মধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব ২১ লাখ ৪১ হাজার ৬৮টি। যা আগস্ট শেষে ছিল ২১ লাখ ১৩ হাজার ৫৬২টি। অর্থাৎ আলোচিত সময়ে পুরুষ বিনিয়োগকারীরা ২৭ হাজার ৫০৬টি নতুন বিও হিসাব খুলেছেন। জানুয়ারি, ২০১৭ পর্যন্ত নারী বিনিয়োগকারীর বিও হিসাবের সংখ্যা ৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৩টি। যা এর আগের বছর আগস্ট মাস শেষে ছিল ৭ লাখ ৮৭ হাজার ১২৮টি। অর্থাৎ আলোচিত সময়ে নারী বিনিয়োগকারীরা ৮ হাজার ৬৪৫টি নতুন বিও হিসাব খুলেছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত একক বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯৭০টি। যা গত বছরের আগস্ট মাস শেষে ছিল ১৮ লাখ ১৪ হাজার ২২৯টি। অর্থাৎ একক বিও হিসাব বেড়েছে ২৭ হাজার ৭৪১টি। পাশাপাশি জানুয়ারি পর্যন্ত যৌথ বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৮৭১টি। যা এর আগের বছর আগস্ট মাস শেষে ছিল ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৪৬১টি। অর্থাৎ যৌথ বিও হিসাব বেড়েছে ১১ হাজার ৪১০টি। বর্তমানে বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫টি এবং প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার ২৩৬টি। এছাড়া কোম্পানির অধীনে বিও হিসাব রয়েছে ১১ হাজার ১১১টি। যা এর আগের বছর আগস্ট মাস শেষে ছিল যথাক্রমে ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ২৬৪টি, ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬টি এবং ১০ হাজার ৫৬৯টি।
এ বিষয়ে সিডিবিএলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ২০১০ সালের মহাধ্বসের পর বিও হিসাবের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমেছিল।
তবে গত কয়েক মাস ধরে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় রয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লাও হালকা হয়ে আসছে। তাই বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের হারানো আস্থা ফিরে আসতে শুরু করেছে। এর জেরেই নতুন বিও হিসাব খোলার হারও বেড়েছে। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, বর্তমান বাজার সম্পূর্ণ স্থিতিশীল রয়েছে। এ স্থিতিশীলতা বজায় রেখে বাজার সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এছাড়া সরকার পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের শিক্ষিত করতে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। তাতে বর্তমান বাজার সম্পর্কে তাদের ভালভাবে দীক্ষা দেয়া হয়েছে। এতে তারা বিও হিসাব ফি এবং বিভিন্ন চার্জ কমিয়ে নতুন নীতিমালা জারি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তাই বিও হিসাব খোলার হার বেড়েছে। পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থা ফিরে পাচ্ছে। তাছাড়া এর আগে, গত বছরের জুন মাস শেষে নবায়ন ফি পরিশোধ না করায় প্রায় ৬ লাখ বিও হিসাব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাজারের দীর্ঘ মন্দাভাবের কারণে এমনটি ঘটেছিল বলেছিলেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এবার বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দৈনিক লেনদেন এখন দুই হাজার কোটি টাকা। তাছাড়া বিনিয়োগকারীদের জন্য বাজার এখন অনেক সুরক্ষিত।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছর ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ডিএসই’র প্রধান সূচক বেড়েছে ৯৮৪ পয়েন্ট। এ সময় অধিকাংশ কোম্পানিরই শেয়ারদর ব্যাপক হারে বেড়েছে। তাছাড়া স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বাজারকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সম্প্রতি সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন। -ওয়েবসাইট



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ