পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ডোমার (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা : নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) উৎপাদন করা হচ্ছে। সরকারি কৃষিবিদ থেকে জৈব সার কোম্পানির স্বত্বাধিকারী সবাই বলছেন, সরকার এইদিকে একটু মনোযোগ দিলে; ইউরিয়া সার আমদানিতে ভর্তুকি কিংবা খাদ্যের বিষমাত্রা থেকে কিছুটা হলেও জাতি রেহাই পেত। তাছাড়া এই সার ভূমির স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের শক্তি রাখে বলে তারা মনে করেন। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উদ্ভিত ও প্রাণীর পচনশীল বর্জ্য যেমন গোবর, কচুরিপানা, খৈল বিভিন্ন ধরণের ফসলে অবশিষ্টাংশ বিশেষ প্রজাতির কেঁচো দ্বারা খাওয়ার পর মল ও কেঁচোর মৃত অবশেষ, ডিম বা কোকুন, সুক্ষজীবাণু ইত্যাদির মিশ্রণকে কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট বলে। যা চা পাতার মত দানাদার ও ঝুরঝুরে হয়। ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) মাটির অণুজৈবিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, গাছের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের খাদ্য উপাদান থাকায় গাছের দ্রুত বিকাশ করে। এতে জৈব পদার্থের পরিমাণ অন্য জৈবসারের তুলনায় অনেক বেশি থাকে, যা মাটির জন্য খুব উপকারী এবং মাটিতে পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মাটির তাপমাত্রা, আদ্রতা ও অমøতা নিয়ন্ত্রণ করে। ডোমার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার অন্নপূর্ণা জৈবসার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ডোমার, বোড়াগাড়ী, পাঙ্গামটুকপুর, জোড়াবাড়ী, বামুনিয়া, হরিণচড়া, সোনারায় ইউনিয়নসহ ডোমার পৌরসভার গ্রাম গুলোতে প্রায় ৩০০ পরিবার কেঁচোসার উৎপাদন করছে। ডোমার ইউনিয়নের বড়রাউতা গ্রামের সরস্বতী, পাঙ্গামটুকপুর ইউনিয়নের মেম্বারপাড়া গ্রামের বিউটি, ডোমার পৌরসভার উদয়ন পাড়া গ্রামের অলিমা বেগম, বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানা গ্রামের জগদীশ চন্দ্র জানান, তারা মূলত নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে স্থানীয় জৈবসার কোম্পানিতে ভার্মি কম্পোস্ট বিক্রি করে প্রতিমাসে ৩-৪ হাজার টাকা আয় করছে। গোবর, খড়, গাছের ডাল, লতাপাতা ও গৃহস্থলি বর্জ্য কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করতে হয় বলে সার বিক্রির সবটাই তাদের লাভ। স্বাস্থ্যকর ও উন্নত একটি সার নিজের ঘরে উৎপাদনের মধ্যে দিয়ে অভাব-অনটন জড়ানো এসব প্রত্যন্ত গ্রাম্যমানুষ এখন উন্নয়নের স্বাদ পাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম অনুমোদনপ্রাপ্ত জৈব সার উৎপাদনকারী কোম্পানির কর্ণধার ও এ অঞ্চলের কৃষকদের দ্বারা ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনের অন্যতম উদ্যোক্তা রামনিওয়াশ আগরওয়ালা বলেন বর্তমানে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ মারাত্বক বিপদজনক পর্যায়ে আছে। দুই একটি কোম্পানির উদ্যোগ তেমন কোনো কাজে আসবে না এবং এ সমস্যার সমাধান কৃষকদের হাতেই রয়েছে, কারণ স্বল্পমূল্যে জৈবসার উৎপাদনের সর্বোত্তম ও সর্বোচ্চ কাঁচামালসহ প্রয়োজনীয় শ্রম প্রদানের ক্ষমতা কৃষকদেরই আছে। ভার্মি কম্পোস্ট শিল্প এ এলাকায় নতুন ধরনের কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করছে যা একসময় অনেকে কল্পনা’ই করেননি।
নীলফামারী জেলার কৃষিসম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জি এম ইদ্রিস জানান ,ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার শতকরা ১০ ভাগ ইউরিয়া ব্যবহার কমিয়ে দিতে পারে এবং গুরুত্ব পেলে রফতানিমুখী একটি পণ্য হতে পারে। যা থেকে প্রচুর পরিমাণ বিদেশি অর্থ উপার্জন করা সম্ভব । প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্র, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশীষ কুমার সাহা জানান, পর্যায়ক্রমে রাসায়নিক সারের অধিক ব্যবহার মাটির উর্বরতা শক্তি ফসল উৎপাদনের মূল নিয়ামক জৈব পদার্থকে শূন্যের কোটায় নিয়ে এসেছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে মাটি থেকে ফসল উৎপাদন দুস্কর হবে। তাই কৃষক, উৎপাদনকারী, বিক্রেতাসহ সরকারি, বেসরকারি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে জৈবসার উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধিকল্পে আরও বেশি উদ্দ্যোগী হতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।