Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাতাসে উড়ছে অবৈধ কোটি কোটি টাকা-দুদক চেয়ারম্যান

| প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : ঢাকা শহরের বাতাসে উড়ে বেড়ায় অবৈধ কোটি কোটি টাকা। শহরের জুয়ার আসরে তিনশ’ কোটি টাকা কোথা থেকে আসে? বৈধ টাকা দিয়ে কেউ জুয়া খেলে না। সুতরাং নিজেরা সর্তক হোন। সময় এসেছে, আর কাউকে ছাড় দেয়ার সময় নেই। অবৈধ আয় যাতে কেউ করতে না পারে, সেজন্য এনবিআরের সহযোগিতা চাই, উদ্যোগ চাই।
গতকাল বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডর সম্মেলন কক্ষে ‘শুদ্ধাচার ও নৈতিকতা’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতির জন্য সময়টা ভালো নয়। সময় এসেছে সতর্কতার সাথে দেশ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করার ও নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর। এনবিআর রাষ্ট্রের ব্লাড সঞ্চালন করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ও দুর্বলতা হলো যতটুকু ব্লাড সরবরাহের প্রয়োজন তা করতে পারে না।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দেশে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য থাকবে। তবে আশার কথা, ভারত ও চীন থেকে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে এ পার্থক্য দূর করার দায়িত্ব এনবিআরের। করদাতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এ দেশের মালিক হবেন না তা হতে পারে না। মালিক হবেন তখনই, যখন সরকারের খাতায় আপনার নাম থাকবে। শুধু আইডি কার্ড থাকলে এ দেশের মালিক হবেন না। দেশে শেয়ার থাকতে হবে। সে শেয়ার হচ্ছে ট্যাক্স।
কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করে তিনি বলেন, সমস্ত কালো টাকা জমি ক্রয়ে চলে যাচ্ছে। গুলশানে ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি দুই কোটি টাকায় রেজিস্ট্রেশন হয়।  কালো টাকা একবার ঢুকে গেলে তা বের করা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, প্রত্যেক নাগরিক এনবিআরে সঠিকভাবে ট্যাক্স ফাইল জমা দিলে সম্পত্তি ও অর্থের উৎস জানতে পারব। এখন তো জিজ্ঞাসা করতে পারি না, কারণ দুদকের সেই সক্ষমতা নেই। এনবিআর জিজ্ঞাসা করতে পারে। দুদক ট্যাক্স চাই না, সম্পত্তির হিসাব চাই।
তিনি আরো বলেছেন, এনবিআর ও দুদকের কোনো কর্মকর্তা যদি অনৈতিক আয় করে আটক বা গ্রেফতার হয়, তাহলে কষ্ট পাই। জেলখানার মানবেতর জীবন। সবাইকে বলি, আমরা যেন জেলখানায় না যান। তাই কারাগারের কষ্টের কথা বিবেচনা করে সবাইকে দুর্নীতি থেকে বিরত থাকতে হবে। সেমিনারে এনবিআর ও দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে আমরা সুশাসন ও উন্নততর আধুনিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করেছি। এটাই এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সকল পর্যায়ে সঞ্চালিত হচ্ছে। সকল ক্ষেত্রে সুশাসনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আমরা সকল প্রকার দুর্নীতি, হয়রানি, অসদাচরণ ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছি।
তিনি আরো বলেন, ‘দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে। বিশেষ করে যারা করদাতাদের অযথা হয়রানি করেন, বারবার সতর্ক করার পরও সংশোধন হয়নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ইতোমধ্যে অনেক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দৃষ্টান্তস্বরূপ কমিশনার থেকে যুগ্ম-কমিশনার করা হয়েছে। তাই দুর্নীতিকে সমূলে উপড়ে ফেলার জন্য আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সূদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুলতান-উল ইসলাম চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্যবর্গ, কমিশনারগণসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুদক চেয়ারম্যান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ