পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারীর বিয়ে দেয়া যাবে
হাবিবুর রহমান : আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসহ মহলের আপত্তি সত্ত্বেও তবে বিধান বহাল রেখেই বহুল আলোচিত ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৬’ শীর্ষক বিলটি সংসদে পাসের সুপারিশ করেছে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
জাতীয় সংসদ ভবনে গতকাল অনুষ্ঠিত নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিলের রিপোর্ট চূড়ান্ত করে এ সুপারিশ করা হয়। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপনের পর অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। গতকাল বুধবার কমিটি বিলটি চূড়ান্ত করে। বিলে বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলেদের বয়স ন্যূনতম ২১ বছর ও মেয়েদের বয়স ১৮ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ‘তবে’ যুক্ত করে বিশেষ বিধানের কথাও বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোনো নারীর সর্বোত্তম স্বার্থে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না।
সূত্র জানা গেছে, গত ২৪ নভেম্বর মন্ত্রিসভায় আলোচিত এই বিলটি অনুমোদন দেয়া হয়। প্রস্তাবিত আইনে বিয়ের জন্য ছেলের বয়স ২১ ও মেয়ের বয়স ১৮ বছর করা হলেও ‘বিশেষ কেইসের’ জন্য বিশেষ বিধান রাখা হয়। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ (এইচআরডাব্লিউ) বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও বেসরকারি সংগঠনের পক্ষ থেকে এই বিশেষ বিধান বাতিলের দাবি জানানো হয়। সংসদে উত্থাপিত বিলের ৩ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জাতীয়, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি সমন্বয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে পারবে। এই আইনের বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা বাল্যবিবাহ বন্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
বিলের ৫ নম্বর ধারায় বাল্যবিবাহ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আদালতকে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করলে অনধিক ছয় মাসের কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগের জন্য একই দ-ের বিধান রাখা হয়েছে। বিলে কোনো নারী ও পুরুষ বাল্যবিবাহ করলে দুই বছরের কারাদ- বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদ- অথবা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছে। আর এ ধরনের বিয়েকে মাতা-পিতাসহ অন্যদের শাস্তি দুই বছরের কারাদ- বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছে। একইভাবে বাল্যবিবাহ নিবন্ধনের জন্য শাস্তি ও কাজীর লাইসেন্স বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি রেবেকা মমিনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ, ফজিলাতুন নেসা, আমিনা আহমেদ ও মনোয়ারা বেগম অংশ নেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।