আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ‘ক্ষমতাহীন’লেনিনের আক্ষেপ
প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম
স্টাফ রিপোর্টার : ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েও প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণপত্র পান না দলটির সিনিয়র নেতা নূহ-উল-আলম লেনিন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজের দেয়া স্ট্যাটাসে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটির নয়জনের একজন এ নেতা নিজেকে ‘ক্ষমতাহীন’ বলেও উল্লেখ করেছেন।
শনিবার একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে যোগদানের ইচ্ছে থাকলেও আমন্ত্রণপত্র না পাওয়ায় যোগ দিতে পারেননি বলে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন। স্ট্যাটাসটি তিনি পোস্ট করেছেন বিকাল সাড়ে চারটার দিকে।
শুধু এই অনুষ্ঠান নয়, এমন আক্ষেপের কথা জানিয়েছেন অমর একুশে গ্রন্থমেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের যোগদানের বিষয়েও। অবশ্য, গ্রন্থমেলার অনুষ্ঠানে ‘বলে-কয়ে’ আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন বলেও স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেছেন।
নূহ-উল-আলম লেনিন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আজ একটা স্মরণীয় দিন ছিল। আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একুশে পদক প্রদান করেছেন। আমি সাধারণত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান থেকে দূরে থাকি। কিন্তু একুশের অনুষ্ঠান হলে ভিন্ন কথা। এবার খুব ইচ্ছে ছিল অনুষ্ঠানে যাব। আমার খুব প্রিয় ও ঘনিষ্ঠ কয়েকজন একুশে পদক পাওয়ায় আগ্রহটা বেশি ছিল।’ তিনি লিখেছেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হলেই যে আমন্ত্রণলিপি পাব, এমন কোনো কথা নেই। ক্ষমতাহীন হলে যা হয়! বাংলা একাডেমির কার্ড ১ তারিখের আগের রাতে বলে-কয়ে সংগ্রহ করতে হয়েছে। বুঝতে পারছি না ইদানীং প্রায়ই এমনটি ঘটছে!’
২০১৬ সালে একুশে পদক পাওয়া অনেকের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে লেনিন তার স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করেন, সেই ১৯৬৫ থেকে মফিদুলের সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব। মুক্তিযুদ্ধকালে এক সাথে ছিলাম অবরুদ্ধ বাংলাদেশে। এক সাথে ছাত্র ইউনিয়ন, কমিউনিস্ট পার্টি করতাম। এক সময়ে কমিউনিস্ট পার্টি ছেড়েছি। আমি আওয়ামী লীগে যোগ দেই, মফিদুল আর কোনো দল করেনি। আমাদের বন্ধুত্ব এখনো অটুট।’ তিনি লিখেছেন, ‘জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, হায়াৎ মামুদ, হাবিবুল্লাহ সিরাজী আমার আত্মার আত্মীয়। শাহীন সামাদ ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নে ছিল। ১৯৭৩-এ আমরা তাকে বার্লিন দশম বিশ্ব যুব উৎসবে নিয়ে গিয়েছিলাম। ওরা সবাই একুশে পদক পাওয়ায় আমি গর্বিত। অনুষ্ঠানে যাওয়ার কার্ড না পাওয়ায় যাওয়া হয়নি।’
স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, ‘এটা নিয়ে রাজনীতির কিছু নেই। সরকারি কাজই এমন। একুশে বই মেলায় বলে-কয়ে আমন্ত্রণপত্র সংগ্রহ করে অংশ নিয়েছি। অথচ আমার নামে ইস্যু করা কার্ড এসেছে অনুষ্ঠানের পরের দিন। এইগুলো হচ্ছে ওইসব প্রতিষ্ঠানের টেকনিক্যাল প্রবেøম।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তব্যে অবহেলার কারণে এইগুলো হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক দল বা আওয়ামী লীগের কোনো সংযোগ নেই। কারণ সরকার এবং দল এক নয়। অনেক মন্ত্রণালয়ের অন্ষ্ঠুানের কার্ড পাই অনুষ্ঠানের তিন দিন পর।’ যদিও তিনি কোনো মন্ত্রণালয়ের নাম উল্লেখ করেননি। বেসরকারি আমন্ত্রণপত্রের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটে উল্লেখ করে নূহ-উল আলম লেনিন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আবুল মাল আবদুল মুহিতের আত্মজীবনীমূলক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পেয়েছি অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার ঘণ্টা তিনেক পরে।’