Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শহীদ জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ড্যাবের সভা

জনপ্রত্যাশিত ইসি না হলে রাজপথে নামবে বিএনপি : ড. মোশাররফ

| প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার ঃ জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন না হলে বিএনপি রাজপথে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে এক আলোচনা সভায় ডক্টরস এসোসিয়েশনের পেশাজীবী চিকিৎসকদের বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এরকম প্রস্তুতির কথা জানান।
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে রকীবউদ্দিন মার্কা নির্বাচন কমিশনের সময়কাল শেষ। আমরা দেখতে চাই যে, মহামান্য প্রেসিডেন্ট কী করেন? তিনি যে সার্চ কমিটি করবেন, তারাই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। তখন জনগণ থেকে শুরু করে পেশাজীবীরাসহ সকলে বুঝতে পারবে যে, এটা আওয়ামী লীগের রকীবউদ্দিন মার্কা নির্বাচন কমিশন হয়েছে, নাকী জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে হয়েছে।
জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন না হলে বুঝা যাবে, এই সরকার আগের খেলায় রয়েছে। আমরা বলতে চাই, সরকারের ওই রকম পরিকল্পনা বা খায়েশ থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আমরা রাস্তায় নামবো।
কাজী রকীবউদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। সংবিধান অনুযায়ী নতুন ইসি গঠনের এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের। সেজন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত শুনে সার্চ কমিটি গঠন করে নতুন ইসি নিয়োগ দেবেন। গত ১৮ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ শুরু করেন প্রেসিডেন্ট আব্দুুল হামিদ।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গভবনে সংলাপ করেন। ২০১২ সালে রাজনৈতিকদলগুলোর সাথে সংলাপ করে ‘সার্চ কমিটি’র মাধ্যমে কাজী রকীবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে নিয়োগ  দেন প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান।
জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব এর উদ্যোগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ, গণতন্ত্র ও জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রেসিডেন্টের সংলাপের প্রসঙ্গে টেনে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,  আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আগে-ভাগেই কীভাবে নির্বাচন কমিশন হবে, এই কমিশন গঠনের জন্য কীভাবে সার্চ কমিটি হবে- সুনির্দিষ্ট একটা প্রস্তাবনা দিয়েছেন, ছক দিয়েছেন। সেটাকে অনার করে মহামান্য প্রেসিডেন্ট আজকে সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। মহামান্য প্রেসিডেন্ট আমাদের প্রথম ডেকেছিলেন। দেশ-বিদেশকে আমরা দেখাতে চাই, আমরা গণতান্ত্রিকভাবে সমাধান চাই। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক উদার রাজনৈতিক দল। এই দল, এই দলের প্রতিষ্ঠাতা বাকশালের নাগপাশ থেকে মুক্ত করে এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন। আমাদের ওপর এটা পবিত্র দায়িত্ব এই গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা, দেশের মানুষকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। এটার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের মামলার নিম্ন আদালতের রায় সম্পর্কে তিনি বলেন, গত সোমবার   দেখেছেন একটি মামলায় র‌্যাবের কতগুলো অফিসারকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে। তারা কারা? বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য। এর মাধ্যমে সরকার বুঝাতে চায়, দেশে আইনের শাসন আছে। আসলে তা নয়।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এমনভাবে ঘটনা ঘটেছে যে, তারা এটাকে কোনোক্রমে আর লুকাতে পারেনি। সেজন্য এই বিচারটা হয়েছে। আর এতো যে গুম-খুন-হত্যাকা- ঘটছে, কোন বিচারটা হয়েছে। সাগর-রুনি সাংবাদিক হত্যাকা- কখন হয়েছে, কত বছর হয়েছে, এখন পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্ট নাই। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম গুম হয়ে গেলো- কোনো তদন্ত রিপোর্ট নেই। এই সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, সেজন্য তারা ফ্যাসিস্ট কাজ করে চলেছে।
উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত পর্যন্ত দলীয়করণের কারণে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সিনিয়র সদস্য।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবন-ইতিহাস তুলে ধরে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, জিয়াউর রহমানকে আওয়ামী লীগ ভয় পায় বলেই বিএনপির ওপর এতো অত্যাচার-নির্যাতন। গণতন্ত্র দেশে থাকুক না থাকুক বিএনপিকে দুর্বল করতে হবে- এটা হচ্ছে সরকারের পলিসি। আজকে তারা গণতন্ত্রকে বাক্সবন্দি করেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি প্রহসনের  ভোটবিহীন নির্বাচন করে ক্ষমতাকে দখল করে আছে।
ড্যাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক আব্দুুল মান্নান মিয়া, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম লাবলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ