চিঠিপত্র : ফসলি জমিতে পুকুর খনন বন্ধ হোক
প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম
রাজশাহীর গোদাগাড়িতে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। এতে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। চাষাবাদ হুমকির মুখ পড়েছে। গোদাগাড়ি উপজেলার রাহি, বড়শীপাড়া, ধাতমা, গোগ্রাম প্রভৃতি এলাকার ফসলি জমিতে খননযন্ত্র বসিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরেই পুকুর খোঁড়া হচ্ছে। অথচ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ রয়েছে, জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না। উল্লিখিত এলাকাগুলোতে কৃষিজমির প্রকৃতি পরিবর্তন করে প্রায় ৮টি পুকুর খনন করা হয়েছে এবং আরো অন্তত ৪টি পুকুরের খনন কাজ চলছে। ১ ফেব্রুয়ারি সরেজমিন দেখা গেছে, রাহিতে চারটি এবং গোগ্রাম ইউনিয়নের বড়শীপাড়া ও ধাতমায় পাশাপাশি দুই জায়গায় ফসলি জমি কেটে দুটি পুকুর খনন করা হয়েছে। গোগ্রামের শাকপালে খাড়ির পাশে ফসলি জমির মধ্যে বিশাল আকারের পাঁচটি পুকুর কাটার কাজ চলছে। আবার শাকপালে রাস্তার পাশেই প্রায় ১০ বিঘাজুড়ে আরেকটি পুকুর কাটার প্রস্তুতি চলছে। এসব পুকুর কাটার উদ্দেশ্য মাছ চাষ করা বলা হলেও প্রকৃত উদ্দেশ্য অন্য কিছু। কারণ এসব জায়গায় অনেকগুলো খাস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর থাকলেও সেসব সংস্কার করে মাছ চাষ করার জন্য কারো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সম্প্রতি বাগমারা উপজেলায় পুকুর কাটার হিড়িক পড়ে গেলে উপজেলা প্রশাসন থেকে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে। ফলে সেখানে বর্তমানে পুকুর কাটা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু গোদাগাড়িতে ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর কাটা বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় ফসলি জমিতে পুকুর কাটা রোধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করছি।
মো. শাহিন আলী
ডাইংপাড়া মোড়, গোদাগাড়ি, রাজশাহী।
ওয়াসার বিল পরিশোধ প্রসঙ্গে
পুরনো ঢাকার গে-ারিয়া ঘনবসতি এলাকা। এখানকার ওয়াসার গ্রাহকগণ ফরিদাবাদ এলাকার জনতা ব্যাংকের বিল কালেকশন বুথে গত কয়েক বছর ধরে বিল জমা দিতেন। কিন্তু হঠাৎ করে জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের বিল কালেকশন বুথটি বন্ধ করে দেয় এবং বুথটি জনতা ব্যাংকের ফরাসগঞ্জের শাখায় স্থানান্তর করে। এতে করে গে-ারিয়া এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিষয়টি ওয়াসার চেয়ারম্যান সমীপে যথাসময়ে লিখিতভাবে জানানো হলেও এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গে-ারিয়াতে ডিস্টিলারি রোডে সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের দুটি শাখা চালু আছে। এক্ষেত্রে ফরাসগঞ্জে জনতা ব্যাংকের বিল কালেকশন বুথের পরিবর্তে গে-ারিয়া জনতা ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকের যে কোনো একটি শাখায় ওয়াসার বিল জমা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রসঙ্গত আরামবাগের ওয়াসা অফিস প্রাঙ্গণে রূপালী ব্যাংকের শাখায় যদি সব এলাকার ওয়াসা বিল জমা নেওয়া যায়, তাহলে গে-ারিয়ায় লোহারপুর এলাকার রূপালী ব্যাংকের শাখায় গে-ারিয়া এলাকার ওয়াসা বিল নেওয়া যাবে না কেন? গে-ারিয়া এলাকাবাসীর দুর্ভোগ ঘোচাতে বিষয়টি বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
খন্দকার আবদুর রাশেদ,
২৭ শরাফতগঞ্জ লেন, গে-ারিয়া, ঢাকা-১২০৪।
বিষাক্ত পানি
পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে বিষাক্ত পানির অপর নাম মৃত্যু। আমি বলছি, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার কোলঘেঁষা হাওয়াল ভাংগী গ্রামের কথা। যেখানে দুই-তিন হাজার লোকের বসবাস। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আমরা খাবার জন্য বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারি না। প্রতি বছর নদীর বাঁধ ভাঙার কারণে নদী থেকে বিষাক্ত লোনা পানি গ্রামে প্রবেশ করায় কোথাও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে অনেক সময় লোনা পানিই পান করতে হয়। তাছাড়া বিশুদ্ধ পানি পান করা অনেক ব্যয়বহুল। গ্রাম থেকে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার দূর থেকে পায়ে হেঁটে মাথায় করে পানি নিয়ে আসতে হয়। তাও আবার দীর্ঘ লাইন দিয়ে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে হয়। এ কারণে বিষাক্ত পানি পান করে প্রতি বছর শিশু, বৃদ্ধ ও নানান বয়সের মানুষ ডায়রিয়া ও কলেরাসহ নানা রকম পেটের সমস্যয় ভোগে। ভোটের সময় নেতা-কর্মীরা গ্রামের সাধারণ মানুষকে নানাভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন যে, তাদের জন্য ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করা হবে, শহর থেকে সাপ্লাই পানির ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু কে রাখে কার খোঁজ? পাস করলেই ভুলে যান তাদের প্রতিশ্রুতির কথা। ফলে এই অসহায় মানুষদের দুর্ভোগের শেষ নেই। আমাদের এই পানি সঙ্কট নিরসনের জন্য সরকারের কাছে আকুল প্রার্থনা জানাই। আইলা দুর্গত এই নদী ভাঙন এলাকার মানুষেরা যদি দিনের পর দিন বিশুদ্ধ পানির পরিবর্তে লোনা তথা বিষাক্ত পানি পান করতে থাকে তা তাহলে একদিন তাদের অস্তিÍত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে। দরিদ্র দিনমজুরদের বিশুদ্ধ পানি কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। যারা ছেলেমেয়েদের দু’বেলা দু’মুঠো খাবার দিতে পারে না, পোশাক কিনে দিতে পারে না, স্কুলে পড়ানোর সামর্থ্য নেই বলে ছেলেমেয়েরা ইটের ভাটা, মাটি কাটা প্রভৃতি কাজ করে, তারা বিশুদ্ধ পানি কিনে খাবে কিভাবে? গ্রামটিতে গভীর নলকূপ স্থাপন অথবা পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে খাবার পানি সরবরাহ করা হোক যাতে করে ডায়রিয়া-কলেরার মতো রোগ থেকে তারা রেহাই পেতে পাারে। বাঁচার জন্য বিশুদ্ধ পানি চাই, নদী ভাঙন ও লোনা পানির প্রভাব থেকে বাঁচতে চাই।
মোখলেছুর রহমান মুকুল
আইন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।