Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জাতিসংঘে রুশ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়া সরকার ও এর মিত্রদেশগুলো কয়েকটি শর্ত মানলে সাময়িকভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি বলে জানিয়েছে সিরিয়ার বেশ কয়েকটি বিরোধী পক্ষ। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমান হামলা বন্ধ করা। অবরোধ তুলে নেওয়া এবং দেশব্যাপী ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেওয়া। সিরিয়া শান্তি আলোচনা সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গত শনিবার বলেন, সিরিয়ার বিরোধীপক্ষ দুই থেকে তিন সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছে। কিন্তু অবিলম্বে রাশিয়ার বিমান হামলা বন্ধ করার সম্ভাবনা নেই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলে দিয়েছেন, রাশিয়া সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন ও সহযোগিতা করে যাওয়ার ব্যাপারে অটল রয়েছে। অপরদিকে, সিরিয়ার ভূখ-ে কুর্দি যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে তুরস্কের গোলাবর্ষণ অবিলম্বে বন্ধ করার ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার আনা একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। গত শুক্রবার রাতে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর গত শনিবার সিরিয়া সীমান্তে তুরস্কের গোলাগুলির ব্যাপারে আবারো নিজেদের উদ্বেগ জানিয়েছে রাশিয়া। এদিকে জাতিসংঘে রুশ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাঁদ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতি রাশিয়ার সমর্থন দেয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষ হয়ে গত সেপ্টেম্বর থেকে দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। এতে করে আসাদের বিরুদ্ধে সিরীয় বিদ্রোহী ও বিরোধীপক্ষকে সহায়তা করে আসা যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা হতাশ হয়ে পড়ছে। গত শনিবার সিরিয়ার বেশ কয়েকটি বিরোধী দল আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার মধ্য দিয়ে সাময়িকভাবে যুদ্ধবিরতি করা সম্ভব বলে এতে রাজি থাকার আভাস দেয়। কিন্তু এর জন্য জাতিসংঘকে সিরিয়ায় রাশিয়া, ইরান এবং অন্যান্য মিলিশিয়া গোষ্ঠীর হামলা বন্ধের নিশ্চয়তা দিতে হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হাই নেগোশিয়েশনস্ কমিটি।
অপর এক খবরে বলা হয়, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে শুক্রবার রাতে এক জরুরি বৈঠক ডেকে সিরিয়ায় তুর্কি হামলা বন্ধের জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে রাশিয়া। এতে অবিলম্বে সীমান্তের ওপার থেকে তুর্কি হামলা বন্ধ করে সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষার দাবি জানানো হয়। কিন্তু এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে পশ্চিমারা। বৈঠকের পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত বলেন, আমার সংক্ষিপ্ত উত্তর হচ্ছেÑ না। তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সমর্থন জোগানোর রুশ নীতি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলেও মন্তব্য করেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি সামান্থা পাওয়ার এই প্রস্তাবকে মূল বিষয় থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা বলে অভিহিত করেন। তিনি এর বদলে আগে সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া জাতিসংঘের প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের জন্য রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান। এদিকে প্রস্তাব বাতিল হওয়ায় হতাশ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রুশ প্রতিনিধি।
এদিকে সিরিয়া সংঘাতের গতিপ্রকৃতি বদলের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমধ্যসাগরে স্থায়ীভাবে কালিবার ক্রুজ মিসাইলবাহী রণতরী মোতায়েনের পরিকল্পনা করেছে রাশিয়া। রুশ নৌবাহিনীর কমান্ডার অ্যাডমিরাল আলেকজান্দার ভিতকো শনিবার এ কথা জানান। তিনি বলেন, রাশিয়া পর্যায়ক্রমে ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজ পাঠাবে। এসব রণতরীতে বিভিন্ন অস্ত্র থাকবে এবং সেটা দিয়ে অনেক ধরনের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে। স্থায়ীভাবে এই মিসাইলবাহী রণতরী মোতায়েন রাখার জন্য কৃষ্ণসাগরের রুশ নৌবহর থেকে পর্যায়ক্রমে জাহাজ ভূমধ্যসাগরে পাঠানো হবে। শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির কালিবার ক্রুজ মিসাইল জটিল বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দূরে শত্রুর অবস্থানে নিখুঁত আঘাত হানতে পারে। গত শুক্রবার রাতে ফ্রান্স ইন্টার রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওলাঁদ বলেন, বাশার আল-আসাদকে এককভাবে সমর্থন দিয়ে রাশিয়া সফল হতে পারবে না। কারণ, এতে কোনো ফল আসবে না, কোনো আলোচনা হবে না, সেখানে যুদ্ধ চলতেই থাকবে। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি বরং আমরা সবাই মিলে দেখব। তিনি আরো বলেন, অবশ্যই মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে সিরিয়া-বিষয়ক শান্তি আলোচনা শুরু হতে পারে। আল-জাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘে রুশ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ