পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : ৭ খুন মামলার রায়ে ২৩ আসামির মৃত্যুদ- ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদ- দিয়েছেন আদালত। এই রায় নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল অপহরণের পর খুন করে ফেলা সাতজনের স্বজনরা। নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিমের বাবা বলেন, ‘রায়ে আমি খুশি না। কারণ এই ঘটনা মূল আসামি মজিবর এখনও ধরা পড়েনি। মজিবর আর মজিবরের ছেলে হাক্কা এই দু’জনকে শাস্তি দিলে সন্তুষ্ট হতাম।’
নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদ চেয়ারম্যান জানান, রায়ে তিনি আংশিক খুশি। মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মামলার এজাহারে যাদের নাম দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম কেটে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। তিন বলেন, ‘ইকবাল ও আশিক মূল পরিকল্পনাকারী ছিল।’
নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আমি রায়ে সন্তুষ্ট। আমরা আশা করবো উচ্চ আদালতে রায়টি বহাল থাকবে এবং দ্রুত রায় কার্যকর হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও স্বজনহারা। তাই স্বজন হারানোর কষ্ট তিনি নিজেও বোঝেন। আমি প্রধানমন্ত্রী কাছে কৃতজ্ঞ এবং পাশাপাশি তাকে আহ্বান জানাবো, রায় কার্যকর করার ব্যাপারে তিনি যেন প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।’ চন্দন সরকার মেয়ে সুষমিতা সরকার বলেন, ‘রায়ে আমি সন্তুষ্ট। উচ্চ আদালতে রায় বহাল থাকবে সেটি আমাদের প্রত্যাশা।’ এছাড়া নিহত স্বপনের ভাই মিজানুর রহমান ও তাজুলের বাবা আবুল খায়ের তারাও এ রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইজীবী পিপি অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, ‘আদালতে নির্ভুল ও গ্রহণযোগ্য রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আমার প্রত্যাশা উচ্চ আদালতেও রায় বহাল থাকবে। এতে ভুক্তভোগীরা ন্যায় বিচার পাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে আমি কোনও চাপ অনুভব করি নাই। এই রায়ে বাংলাদেশ তো বটেই, সারা বিশ্বের মানুষের দৃষ্টি ছিল।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা আশা করবো উচ্চ আদালতে রায়টি বহাল থাকবে। এই মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। আমারা আশা কববো উচ্চ আদালতেও যথার্থ ন্যায় বিচার পাবো।’ এদিকে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আবেগপ্রবণ হয়ে রায় দিয়েছেন আদালত। আমার মক্কেল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় নাই। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।’ আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী সুলতানুজ্জামান বলেন, ‘আমার মক্কেল মনে করেন এই আদালতে তিনি ন্যায়বিচার পাননি। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।’
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নজরুল ইসলামের স্ত্রী। ওই মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেনকে প্রধান করে ৬ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ের জামাই বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় আরও একটি মামলা করেন। ৩০ এপ্রিল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন এবং ১ মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে স্বজনরা লাশগুলো শনাক্ত করেন। মামলার চার্জশিটভুক্ত ৩৫ আসামির মধ্যে ১২ জন পলাতক রয়েছেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, নৌ-বাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানা রয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।