পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : রুশবান্ধব হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার ওপর থেকে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে সেই শর্ত প্রত্যাহারের বিপরীতে জুড়ে দিয়েছেন এক শর্ত। পারমাণবিক অস্ত্র হ্রাসের ব্যাপারে রুশ-মার্কিন সঙ্গে একমত হতে পারলেই কেবল রাশিয়ার ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম লন্ডন টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত রোববার লন্ডন টাইমসের অনলাইন ভার্সনে ট্রাম্পের সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়। ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়াকে ছিনিয়ে নেয়ায় মস্কোর বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রতি মূলত সেটিই প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। সঙ্গে রাশিয়াকে শর্ত হিসেবে জুড়ে দেন পরমাণু অস্ত্র হ্রাস নিয়ে চুক্তি করার বিষয়টি। সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের আগের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও নিজের অসন্তোষের কথা জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ইরাকে আগ্রাসন ছিল মার্কিন ইতিহাসের এক মারাত্মক ভুল। এটা যেন ‘মৌচাকে ঢিল মারা’র মতো অবস্থা।
২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দায়িত্ব গ্রহণকে সামনে রেখে এই প্রথম তিনি পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব দিলেন। সর্বশেষ ২০১০ সালে রাশিয়ার সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশন ট্রিটি নামে চুক্তি সম্পাদন করেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এখন রাশিয়ার সঙ্গে নতুন চুক্তিতে যেতে চাইছেন ‘রুশবান্ধব’ হিসেবে পরিচিত নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
লন্ডন টাইমসকে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। দেখা যাক এখন আমরা কিছু ভালো চুক্তি করতে পারি কি না। আমি মনে করি, পরমাণু অস্ত্র উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানো উচিত। নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া এখন বেশ বাজেভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। কিন্তু আমি মনে করি, এমন কিছু ঘটতে পারে, যাতে অনেক মানুষ উপকৃত হবেন। এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বর্তমানে এক হাজার ৩৬৭টি পরমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। আর রাশিয়ার হাতে রয়েছে এক হাজার ৭৯৬টি পরমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র।
১৯৯৯ সালে রাশিয়ার ক্ষমতায় আসেন দেশটির এক সময়ের ঝানু গোয়েন্দা ভøাদিমির পুতিন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই পুতিন-ভক্ত হিসেবে পরিচিতি রয়েছে ট্রাম্পের। বিষয়টি নিজ দেশেও সমালোচনা রয়েছে তার। তবে সমালোচনা সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সূত্রের বরাত দিয়ে সম্প্রতি একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার হাতে ট্রাম্পের স্পর্শকাতর গোপন তথ্য রয়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো এ বিষয়টি মাথায় রেখেই মস্কোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে অগ্রসর নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরকালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা রয়েছে ট্রাম্পের। ইউরোপের দেশ আইসল্যান্ডে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে আইসল্যান্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত পরিকল্পনার ব্যাপারে তাদের কিছু জানা নেই। তবে ওয়াশিংটন-মস্কোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা করতে দেশটি আগ্রহী। এর আগে ১৯৮৬ সালে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে আইসল্যান্ডের রিকজাভিকে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্ভাচেভের সঙ্গে রোনাল্ড রিগান বৈঠক করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ন্যাশনাল কমিটির কম্পিউটার ও ইমেইল হ্যাকিংয়ে রাশিয়ার নাম জড়িয়ে পড়ে। পরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রতিবেদন দেয় যে, ট্রাম্পকে জেতাতে ও মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশে এ হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হ্যাকিংয়ে রাশিয়া জড়িত এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেশটির ৩৫ জন কূটনীতিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করেন এবং বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তবে লন্ডন টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে খোলাখুলিভাবেই রাশিয়ার ওপর আরোপিত কিছু মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা বলেছেন ট্রাম্প। তবে সেটা ঠিক কতটুকু বাস্তবায়িত হবে বা কি প্রক্রিয়ায় এর বাস্তবায়ন করা হবে সেটা হয়তো সময়ই বলে দেবে। সূত্র : আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।