Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রায়পুরায় ফকিরভক্ত ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১, পুলিশসহ আহত ১৪

দুই মাসে নিহতের সংখ্যা ৫

| প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : এক ফকিরের চল্লিশা উপলক্ষে বাউল গানের আয়োজনকে কেন্দ্র করে ফকিরভক্ত জনতা ও পুলিশের মধ্যে সৃষ্ট এক সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে জালাল (৩০) নামে এক ব্যক্তি নিহত এবং পুলিশসহ অন্তত ১৪ ব্যক্তি আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ফকিরভক্তরা আহত হয়েছে পুলিশের গুলিতে এবং পুলিশ আহত হয়েছে ফকিরভক্তদের হাতে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ও ইটপাটকেলের আঘাতে। গতকাল রবিবার বিকেল পৌনে ৪টায় রায়পুরার নিলক্ষার চরের দড়িকান্দি দক্ষিণপাড়া হাদীর বাড়িতে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা সংঘটিত হয়। আহতদের মধ্যে শামসু নামে এক ব্যক্তির নাম জানা গেছে। বাকিদের নাম জানা যায়নি। তারা গোপন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। পক্ষান্তরে আহতদের মধ্যে টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় এসআই রফিজুল ইসলামসহ আহত ৫ পুলিশকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্য পুলিশদের মধ্যে রয়েছেন নায়েক কাজী শাহজাহান, কনস্টেবল এস এম মালেক, রাসেল মিয়া ও রাহিম। এ নিয়ে ২ মাসে রায়পুরার নিলক্ষার চরে গুলিতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ জনে।
জানা গেছে, নিলক্ষার চরের দড়িকান্দী গ্রামের খালেক ফকির নামে কথিত এক আধ্যাত্মিক ফকির ৪০ দিন পূর্বে মারা যান। এই খালেক ফকিরের চল্লিশা উপলক্ষে তার ভক্তরা গ্রামে হাদীর বাড়িতে দু’দিনব্যাপী দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও এক বাউল গানের আয়োজন করে। এতে গান পরিবেশনের কথা ছিল প্রথম দিন বাউল শিল্পী সুনিল কর্মকার ও মো: কারী বারেক বৈদেশী। দ্বিতীয় দিন মো: আরিফ দেওয়ান ও মো: রজ্জব দেওয়ান। এই বাউল গানের ব্যাপারে থানা পুলিশের সাথে ফকিরভক্তদের একটি সমঝোতা তথা রফাদফাও হয়েছিল বলে জানা যায়।
যার ফলে এ কর্মসূচি উপলক্ষে খালেক ফকিরভক্তরা এলাকায় ব্যাপকভাবে পোস্টারিং করে প্রচারণা চালায় এবং হাদীর বাড়িতে বৈঠক গানের বিশাল মঞ্চ তৈরি করে। মঞ্চের সামনে বসার জন্য বিশাল ব্যবস্থা করা হয়। ভক্তদের আপ্যায়নের জন্য গরু জবাই করে খিচুরি রান্নার ব্যবস্থাও করা হয়। এ উপলক্ষে আশপাশের বহুসংখ্যক হকার সকাল থেকেই গ্রামে গিয়ে দোকান পেতে বসে। রবিবার বিকেল পৌনে ৪টায় একদল দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভক্তদের মারধরসহ এসব মঞ্চ, দোকানপাট, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করতে থাকে। এ সময় ফকিরভক্তরা পুলিশকে বাধা দিলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ জনতাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে জালাল পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যায়। পুলিশের গুলিতে শামসুসহ ১০ জন আহত হয়। এতে ফকিরভক্তরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা ৩ জন পুলিশকে আটক করে মারধর করে। তারা এসআই রফিজুল ইসলামকে টেঁটাবিদ্ধ করে আহত করে।
এ অবস্থায় পুলিশ এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় আটক পুলিশদের উদ্ধার করে। একপর্যায়ে ফকিরভক্তরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে সংঘর্ষ থেমে যায়।
তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানা পুলিশের ওসি আজহারুল ইসলাম সরকারের মোবাইল নাম্বারে ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ