পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : আগামী নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের ইশতেহার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য দলের নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, টানা আট বছর ক্ষমতায় থাকায় এখন আরো কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। গতকাল শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামীলীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সভাকক্ষে দলটির সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিন বছর পূর্ণ করে সরকার চার বছরে পা রেখেছে। আগের নির্বাচনে আমরা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তার অধিকাংশই পূরণ করেছি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতির চেয়েও বেশি কাজ করেছি। সামনের নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই। তাই এখন থেকেই নির্বাচনের জন্য কাজ করতে হবে। তার জন্য ইশতেহার ঠিক করব। সেটা এখনই ঠিক করতে হবে। এখন থেকেই নির্বাচনি ম্যানিফেস্টো (ইশতেহার) ঠিক করতে হবে। দলীয় ইশতিহার তৈরির জন্য বিষয়ভিত্তিক সেল গঠন করতে উপদেষ্টাম-লীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সরকারের তিন বছর পার হয়েছে, আমরা চার বছরে পা রেখেছি। সামনে আরও কঠিন সময় মোকাবিলা করতে হবে। তবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চলতে হবে, সততা নিয়ে কাজ করতে হবে। মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে, মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করতে হবে। দেশের জন্য আত্মত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে খুন-খারাবি বেড়ে যায়। আওয়ামী লীগ এলে উন্নয়ন হয়। তিনি আরও বলেন, তিন বছরে যে কাজ করার কথা ছিল, তার চেয়ে বেশি কাজ করেছি। আওয়ামী লীগ যা বলে, তা-ই করে। আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে লুটপাট হয়, হাওয়া ভবন খোলে। মানুষ খুন, সন্ত্রাস, লুটপাট ছাড়া বিএনপি আর কিছুই দিতে পারে না। মানুষকে এটাও বলতে হবে, সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে দেশের উন্নতি হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দায়িত্ববোধ থেকেই কাজ করে। আওয়ামী লীগ নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য কাজ করে। এটাই হলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে পার্থক্য।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- জনগণের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি সততার সঙ্গে তাদের পাশে থেকে কাজ করুন। নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে গিয়ে জনমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর নির্দেশনাও দেন তিনি।
জনগণের জন্য, জনগণের ভাগ্য গড়ার জন্য রাজনীতি করেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের সবাইকে মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলতে হবে, মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করতে হবে। দেশ ও মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করতে হবে। আমি চাই সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে আপনারা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন। আমাদের মূল লক্ষ্য হবে মানুষের সেবা।
সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময়কালে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির আলোচনার প্রস্তাব প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কার সঙ্গে আলোচনা করব? যারা একুশে আগস্ট আমাকে হত্যার উদ্দেশে গ্রেনেড হামলা করেছিল? তাদের সঙ্গে? যারা আমার দলের অসংখ্য নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে তাদের সঙ্গে? বিএনপি নেত্রীর ছেলে মারা গেছে-আমি তাকে সান্ত¦না দিতে গেলাম। বাসার গেট বন্ধ করে আমাকে ঢুকতে দেওয়া হলো না। অপমান করা হলো- আমি গেয়েছিলাম-সান্ত¦না দিতে... অথচ আমাকে ঢুকতে দেয়া হলো না। যারা সামান্য সৌজন্যবোধ জানে না তাদের সঙ্গে সংলাপ? কোন খুনির সঙ্গে সংলাপে বসতে পারি না। তাদের হাতে রক্ত। তারা খুনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন যথাসময়েই হবে। বিএনপি অংশ নেবে কি নেবে না? সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমরা কি বিএনপিকে বাঁচানোর দায়িত্ব নিয়েছি? বিএনপি বাঁচানো প্রজেক্ট আমাদের না।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আইন করার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এত তাড়াহুড়া করে তো আর আইন করা যাবে না। সাত দিনের মধ্যে তো আর কোন আইন করা যাবে না। তবে আমরা আইন করার সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করবো। আগামী নির্বাচন কমিশন যেন আইনের মধ্যে থেকে করা যায় সে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এসময় যারা বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকার করে না-বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানে না তাদেরকে কোন পুরস্কার দেওয়া যাবে না-দলে উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য এমন প্রস্তাব উত্থাপন করলে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা স্বাগত জানান।
বৈঠক শেষে তিনি তার কার্যালয়টি ঘুরে দেখেন এবং কার্যালয় স্টাফদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে দলীয় কার্যালয়ে এসেছি। জনস্বার্থেই কম আসা হয়। পার্টির কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু অনেকদিন এখানে আসি না। মনটা চাচ্ছিল এখানে আসি। তাই চলে এসেছি।
আজ শনিবার বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসে পৌঁছান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে স্বাগত জানান। এর আগে সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৭ নভেম্বর বিকালে ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।