পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিম র্কোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রীক দেবীর মুর্র্তি স্থাপন, পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম ধর্মের বিষয়সমুহ বাদ দেয়ার দাবি নিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা এবং বাঙালী মুসলিম ভারতীয় টিভি চ্যানেল অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে আওয়ামী ওলামালীগ ও সমমনা ১৩ দল গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
মানববন্ধনে ওলামালীগের সভাপতি মাওলানা আখতার হুসাইন বুখারি বলেছেন, প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের সামনে মূর্তি স্থাপন বন্ধ না করলে ওলামালীগ কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে। প্রয়োজনে সবার আগে আমি রক্ত দেব। সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন বন্ধ করতেই হবে।
মানববন্ধনে ওলামালীগের কার্যনির্বাহি সভাপতি আলহাজ হাফেজ আব্দুস সাত্তার বলেছেন, যদি সুপ্রিম কোর্টের মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা না হয় তাহলে সারাদেশে আমাদের সব কর্মী রাস্তায় নেমে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। এদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিকে হেয় করা, অবজ্ঞা করা চলবে না। অনতিবিলম্বে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বামপন্থী মিডিয়া ও বিশেষ মহলটির মিথ্যা অভিযোগের সিন্ডিকেট নিউজ বন্ধ এবং নতুন পাঠ্যপুস্তকে মৌলবাদী হিন্দুত্ববাদী এবং ইসলামী মূল্যবোধ ও এদেশীয় ঐতিহ্যবিরোধী যেসব বিষয় রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে হিন্দু আধিপত্যবাদ বন্ধ করতে হবে। বামমহলের পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও কর্মসূচির প্রতিবাদে আওয়ামী ওলামা লীগসহ ১৩ দল আজ ১৫ জানুয়ারি পাল্টা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গ্রীক দেবী থেমিসের মুর্তি দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতির উপর চরম আঘাত। কারণ দ্বীন ইসলামে যেকোন ধরনের মুর্তি তৈরি করা সম্পূর্ণ রূপে হারাম। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আমি মূর্তি এবং বাদ্যযন্ত্র ধ্বংস করার জন্য প্রেরিত হয়েছি’। সুতরাং দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে মূর্র্তি স্থাপন করা সরকারকে বিতর্কিত করারই চক্রান্ত ।
মানববন্ধনের দাবিসমুহ হচ্ছে : ৯৫ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের ধর্ম বিশ্বাসের খেলাফ এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলামে হারাম ঘোষিত মূর্তি সুপ্রিম কোর্টে স্থাপন করে জামাত-জোটের কাছে সরকারবিরোধী ইস্যু তুলে দেয়া যাবেনা এবং সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণদের ক্ষেপিয়ে তোলার সুযোগ দেয়া যাবে না।
পরকীয়ার জন্য সন্তান হন্তারক মা তৈরিকারী, পিতা-মাতা হন্তারক সন্তান তৈরিকারী; পারিবারিক বন্ধন ও শান্তি ধ্বংসকারী, কিশোর অপরাধী তৈরিকারী, আত্মহত্যা ও হত্যায় উদ্বুদ্ধকারী, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ও ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ধ্বংসকারী, সংবিধান বিরোধী- “স্টার জলসা, জি-বাংলা, স্টার প্লাস, সনি টিভি, জিটিভি, জি’সিনেমা’সহ সব ভারতীয় টিভি চ্যানেল অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বক্তারা বলেন, প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে মূর্তি স্থাপনের বিষয়ে আইনজীবিদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি।’ এ কথা বলেছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার। অন্যান্য আইনজীবিরাও বলেছেন, এই মূর্তি নিয়ে আইনজীবী এবং সাধারণ মানুষের আপত্তি রয়েছে। সুতরাং কারো নিজস্ব চিন্তা চেতনায় বিধর্মী মূর্তি মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত সংবিধান বিরোধী।
বক্তারা বলেন, সরকারই এদেশে অবাধ ভারতীয় সংস্কৃতির লালন ও প্রসার করছে, যা সংবিধানের ২৩নং অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট খেলাপ। সংবিধানের ২৩নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার রক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
মানববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, পাঠ্যপুস্তক থেকে সব হিন্দুত্ববাদী ও নাস্তিক্যবাদী পাঠ্যক্রম বাদ দেয়া হয়নি। শুধু ৬ষ্ঠ শ্রেণির ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ বইয়ে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ বিষয়ে ২৪টি ভূল রয়েছে। বাংলাভাষার স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জণবর্ণ মিলে মোট ৪৯টি বর্ণের উদাহারণ দিতে ৩৪%-এরও বেশি হিন্দুত্ববাদী ও বিজাতীয় সংস্কৃতি শেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা না করে উপজাতি নৃ-গোষ্ঠীর ভাষায় পাঠ্যবই ছাপানো হয়েছে। এমনকি শিশুদের ১ম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে ছবির মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদেরকে যৌনতার পাঠ দেয়া হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, নতুন পাঠ্যক্রমে ‘ও’ অক্ষরে ‘ওড়না’ শব্দ ব্যবহার নিয়ে একটি কুচক্রী মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। ওড়না মুসলমানদের ধর্মীয় পোশাক হওয়ায় তারা সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ করছে। অথচ একই পাঠ্যক্রমে ঋ-তে ‘ঋষি’। র-তে শেখানো হচ্ছে ‘রথ টানি’। এরূপ আরো অনেক হিন্দুয়ানী শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। বক্তারা আরো বলেন, পাঠ্যপুস্তকে যেসব কবিতা, প্রবন্ধ পুণর্বহাল করা হয়েছে সেগুলো ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও পাঠ্য ছিলো।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, পীরজাদা, পীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান বিপ্লবী জননেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, (পীর সাহেব, টাঙ্গাইল), সভাপতি- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামালীগ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন- আলহাজ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামালীগ, আলহাজ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সভাপতি- সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামালীগ, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি সহ-সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামালীগ। হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটি হুযূর-সভাপতি বাংলাদেশ এতিমখানা কল্যাণ সমিতি, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল জলিলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।