পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বেদখলকৃত ১ হাজার ২৯টি সরকারী বাড়ি উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নেই। রহসহ্যজনক কারণে থমকে গেছে উদ্ধার ও উচ্ছেদ অভিযান। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, রাজউক, গণপূর্ত ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকেই উচ্ছেদ ও উদ্ধার অভিযান আটকা পড়ে আছে। আদৌ কয়েক হাজার কোটি টাকার এসব বাড়ি উদ্ধার হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। রাজউক বলছে, বেদখলকৃত বাড়িগুলোর হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া রাজধানী ঢাকায় ৩২১টি ঝুঁকিপূর্ণ উচ্ছেদ অভিযানও থেমে গেছে। গত ডিসেম্বরের মধ্যে এসব ভবন ভেঙে ফেলার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী রাজউককে নির্দেশ দেয়া হলেও তা আজো কার্যকর হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাল-জালিয়াতি ও সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় অবস্থিত সরকারি প্রায় এক হাজার বাড়ি দখলে নিয়েছে প্রভাবশালী ভূমিদস্যু ও কালো টাকার মালিকদের সিন্ডিকেট। আর এসব বাড়ি প্রায় এক দশক ধরে অবৈধভাবেই এই জালিয়াত চক্রের সদস্যরা দখল করে আছে। অভিযোগ রয়েছে, দখলবাজদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ তিনটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তাদের অবৈধ দখলবাজিকে উৎসাহিত করেছেন। আর এইসব মূল্যবান বাড়ির সামান্য কয়েকটি উদ্ধারের চেষ্টা রহস্যজনক কারণে থমকে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজউক, গণপূর্ত অধিদফতর ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ এই তিনটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণেই সরকারি ১ হাজার ৬৯টি বাড়ি অবৈধ দখলে চলে গেছে। এসব বাড়ি উদ্ধারে পূর্ত মন্ত্রণালয়ের নথিতেই ১ হাজার ৬৯টি বাড়ির মধ্যে ১ হাজার ১৯টির কোনো হদিস নেই। ওই বাড়িগুলোর মধ্যে রাজউক গুলশান-বনানী এলাকায় ৪২টি মূল্যবান বাড়ি উদ্ধারের চেষ্টা করলেও মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপেই তা ব্যর্থ যায় গত বছরই। এরপর আর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি রহস্যজনক কারণে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ইচ্ছ করলেই রাজউক বা মন্ত্রণালয় এসব বাড়ি উদ্ধার করতে পারবে না। কারণ অবৈধ দখলদারদের তালিকায় রয়েছেন রাঘব বোয়ালেরা। এছাড়া অনেক বাড়ি ইতোমধ্যে কয়েক দফায় কেনা-বেচা হয়ে হাত বদল হয়ে গেছে।
মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র অনুসন্ধানে দেখা যায়, তালিকায় বেদখল বাড়িগুলোরও কোনো হদিস নেই। সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজউকের দুর্নীতির কারণে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব আয় হারানোর পাশাপাশি সরকারও প্রায় ২০ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজধানীতে পরিত্যক্ত বাড়ির সংখ্যা ৬ হাজার ৫৬৭টি। এর মধ্যে আগে সরকারিভাবে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭৭৪টি। ব্যক্তিপর্যায়ে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে দীর্ঘমেয়াদি লিজ দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৪৬৬টি। সরকারের পদস্থ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসনে ব্যবহার করা হচ্ছে ২৪৪টি। এছাড়া সাবেক মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাইয়ের পর অবমুক্ত করা হয়েছে ১ হাজার ১৪টি বাড়ি। বাকি ১ হাজার ৬৯টি বাড়ি অবৈধ দখলে রয়েছে। এ অবৈধ দখলে থাকা বাড়ির তালিকা নিয়ে উদ্ধারের নামে দীর্ঘ সময় ধরে চলছে রহস্যময় খেলা। ২০০০ সালের তালিকায় ১ হাজার ৬৯টি বাড়ির অবৈধ তালিকা ২০০৪ সালে ৫৫০টিতে নেমে আসে, ২০০৮ সালে ২৫০টিতে, বর্তমানে অবৈধ দখলের তালিকায় আছে মাত্র ৫০টি বাড়ি। বাড়িগুলোর অবৈধ দখল নির্বিঘœ করতে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এসব বাড়ির নথিপত্র গায়েব করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে প্রক্রিয়াতেই তালিকা থেকে ১ হাজার ৬৯টি বাড়ি উধাও হয়ে এখন ৫০টিতে এসে নেমেছে। অবৈধ দখলে থাকা তালিকার বাড়ি নিয়ে রাজনৈতিক চাপ, কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও একের পর এক মামলায় রাজউকের উদ্ধার তৎপরতাও ব্যর্থ হয়ে যায়।
রাজউক সূত্র জানায়, গুলশান-বনানী এলাকার একেকটি বিতর্কিত বাড়ির আমমোক্তার নিয়োগ, অবমুক্তকরণ, দখলমুক্তকরণ প্রভৃতি কাজের জন্য এস্টেট বিভাগের সহকারী পরিচালক থেকে পরিচালক পর্যন্ত ফাইল যেতে ঘুষ লেনদেনের পরিমাণ ন্যূনতম ১ কোটি টাকা। রাজউকের পূর্বাচল ও ঝিলমিল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ এবং প্লট পরিবর্তন বাণিজ্য ওপেনসিক্রেট।
সম্প্রতি রাজউকের দুর্নীতি নিয়ে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটির কর্মকর্তারা। সভার কার্যপত্রে বলা হয়, মূল নথির অস্তিত্ব না রেখে রাজধানীর গুলশান-বনানী এলাকায় ১৬২টি পরিত্যক্ত প্লট হস্তান্তর এবং বিভিন্ন এলাকায় অনিয়মের মাধ্যমে বহুতল ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এতে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব আয় হারানোর পাশাপাশি সরকারও প্রায় ২০ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেছেন, খুব দ্রুত ঝঁকিপূর্ণ ভবন উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। এ ব্যাপারে পুনরায় তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেদখলকৃত বাড়ি ও জায়গা জমিও উদ্ধার করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।