Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রীর গতানুগতিক ভাষণ আত্মতুষ্টি ও আত্মস্তূতিতে ভরা : মির্জা ফখরুল

| প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : চলমান সঙ্কট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে ‘রাজনৈতিক সমঝোতা’র কোনো আভাস না থাকায় হতাশ হয়েছে বিএনপি। সরকারের তিন বছরপূর্তিতে গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের পর রাতে গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণটা একেবারেই গতানুগতিক, আত্মতুষ্টি ও আত্মস্তূতিতে ভরা।
তিনি বলেন, সকলের আশা ছিলো, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার আভাস দেবেন। তার ভাষণে তা না থাকায় এই বক্তব্য সময়ের চাহিদা মেটাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমি বলতে চাই, দেশবাসী এই ভাষণে সম্পূর্ণ হতাশ হয়েছেন, আমরাও হতাশ হয়েছি।
সরকারের তিন বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ভাষণে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-সহ প্রেসিডেন্টের সংলাপের উদ্যোগ ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়াবলী উঠে আসে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। তাদের বর্জন ও প্রতিহতের হুমকির মধ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয় নিয়ে ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ।
ভাষণের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের বৈধতা ও নৈতিকতার সঙ্কট দেশের প্রধান সমস্যা। অথচ প্রধান সেই রাজনৈতিক সঙ্কট তিনি এড়িয়ে গেছেন। দেশের উন্নয়নের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার একটি ধারাবাহিকতা। বৈধ কিংবা অবৈধ সব সরকারকেই সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য কিছু কাজ করতে হয়। কিছু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে হয়। জাতীয় উন্নয়নের চিত্র হিসেবে সে সবের ফিরিস্তি দিলে মানুষ হতাশ হয় বলে আমরা মনে করি। উন্নয়নে যে ফিরিস্তি প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে দিয়েছেন, তার অনেক কিছুই ভুল, অসত্য, ভিত্তিহীন এবং এতে রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁক। দেশের মানুষ তাদের দৈনিন্দিন অভিজ্ঞতায় ভালো করে বুঝেন দেশ উন্নয়ন নাকি অবনতির পথে এগুচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, একতরফা দোষারোপের মাধ্যমে তার ভাষণে প্রচ্ছন্নভাবে অগণতান্ত্রিক ও একদলীয় মানসিকতাই ফুটে উঠেছে। হামলা-মামলা, জেল-জুলুমে বিপর্যস্ত বিরোধী দলগুলো সকল গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ডেমোক্রেটিক স্পেস প্রতিদিন সঙ্কুচিত হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধবংস হয়ে গেছে। দুর্নীতি, লুন্ঠন অবাধে চলছে। ব্যাংকগুলো ও শেয়ারবাজার লুট হয়ে গেছে। জনজীবনে নিরাপত্তা নেই, সুবিচার ও আইনের শাসন নেই, শিক্ষার মান নেমে গেছে। আয়ের বৈষম্য বেড়েছে। শিশুদের পুস্তক ভুলে ভরা। গুম, খুন, অপহরণ, শিশু হত্যা, নারী ধর্ষণ নিত্যকার ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী সব কিছু সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন।
রাষ্ট্রীয় শাসকদলীয় সন্ত্রাসে দেশে ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধী দলের কর্মসূচিতেও তারা (ক্ষমতাসীন) একের পর এক হামলা ও অন্তর্ঘাতের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী এজন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব জানান, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে দুই-একদিনের মধ্যে দলের প্রতিক্রিয়া জানাবে।
গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার ও প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।





 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ৯:১৮ এএম says : 0
    আমি ফকরুল সাহের একটা কথাকে স্বাগত জানাই সেটা হচ্ছে তিনি বলেছেন “দেশবাসী এই ভাষণে সম্পূর্ণ হতাশ হয়েছেন, আমরাও হতাশ হয়েছি”। তিনি পূর্বে ওনার দলের মতবাদকে জনগণের মতবাত বলে চালিয়ে দিতেন যানা কি ওনার মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কিন্তু আজ উনি দেশবাসীর সাথে ওনার দলের কথা বলেছেন আমি মনে করি আস্তে আস্তে তিনি সড়া সড়ি ভাবে আর দেশবাসীকে টানবেন না। কোন দলের মত দেশবাসীর মত হতে পারেনা এটা একটা মস্তবড় মিথ্যা কথা। সরকারি দল যদি বলেন মানা যায় এমনকি বিরোধী দলও যদি বলেন মানা যায় কারন সরকারি দল দেশের বৃহত্তম জনগণের অংশের প্রতিনিধিত্ব করেন আর বিরোধী দল ক্ষদ্রতম আংশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এর বাইরে রাজনৈতিক দল যারা আছেন তার তাদের নিজেদের দলের পক্ষ থেকে কথা বলতে পারেন দেশবাসীর পক্ষে নয়। মহাসচিবের জান দরকার গত নির্বাচনে অংশ না নেয়াতে তারা আর দেশবাসীর প্রতিনিধিত্ব করেন না। এর বাইরে তিনি বলেছেন গতানুগতিক উন্নয়ন কিন্তু এটাকে তিনি ব্যাখা দেন নি। আমি আশা করেছিলাম তিনি উন্নয়ন নিয়ে হয়ত কোন কথা বলবেন না কিন্তু বলতে হবে তাই বলে দিলেন গতানুগতিক উন্নয়ন। তাই যদি হয় তবে ওনার উচিৎ ছিল ওনাদের শাসন আমলের উন্নয়নের ফিরিস্তি দেয়া এবং শেখ হাসিনার ফিরিস্তির সাথে তুলনা করা। যেহেতু ওনাদের ঝুলিতে উন্নয়নের তেমন কিছু নেই তাই তিনি গতানুগতিক ভাবে প্রতিপক্ষকে ছোট করার জন্য বলে দিলেন আত্মতুষ্টি ও আত্মস্তূতিতে ভরা। তিনি বললেন রাজনৈতিক সমঝতা, এটা আবার কি??? দলগুলো নিজের নীতি মতোবেক রাজনীতি করবে এখানে আবার সমঝোতার কি আছে। এখানে নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতানৈক রয়েছে সে সম্পর্কে শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনা রয়েছে এটা আবার ফকরুল সাহেব বলেছেন তাহলে আর কি চান বিএনপি সেটা তাদেরকে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ্য করা দরকার। দূর্নিতির উপর ফকরুল সাহেব কোন দিক নির্দেশন দেখেনি!!! আমি বলতে চাই সন্ত্রাস শব্দে সকল প্রকার দূর্নিতী অন্তর্ভুক্ত এটা মহাসচিব ভুলে গেছেন!!!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ