পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সংবাদদাতা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ ভাতা থেকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণ প্রতি বছর প্রায় ৫ লাখ কেড়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ উপজেলায় মোট ৭টি ক্লাস্টার রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ১ হাজার ২শ’। একজন শিক্ষকের জন্য বছরে ৪ বার সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণের বাজেট আসে। প্রতি তিন মাস পর পর ত্রিশজন শিক্ষক নিয়ে একটি সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। একেক স্কুলে একেকবার এ সাব-ক্লাস্টার অনুষ্ঠিত হয়। যে স্কুলকে ভেন্যু হিসেবে নির্ধারণ করা হয়- সে স্কুলকেই দুপুরের খাবার ও নাস্তার আয়োজন করতে হয়। পূর্ব থেকে ভেন্যুকৃত স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে দেয়া হয় এবং শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে তারা খাবার ও নাস্তার আয়োজন করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিকাংশ শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, প্রতি সাব-ক্লাস্টারে প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ ২শ’ ৭০ টাকা। এর মধ্যে ৩০ টাকা কলম, ফাইলপত্রাদির জন্য। বাকি ২শ’ ৪০ টাকা হলো খাবার ভাতা। কিন্তু অসাধু ও অতিলোভী দুর্নীতিবাজ সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাগণ শিক্ষকদের এ টাকা লুটপাট করে খাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ টাকা বরাদ্দের মধ্যে শিক্ষকদের দিচ্ছেন ৪ টাকা দামের একটি কলম ও ৫ টাকা মূল্যের কয়েক শিট কাগজ। এভাবে ৩০ টাকার মধ্যে খরচ হয় মাত্র ৯ টাকা। শিক্ষা কর্মকর্তার পকেটে যাচ্ছে বাকি ২১ টাকা। খাবার ভাতার টাকা ভেন্যু স্কুলের প্রধান শিক্ষককে দিচ্ছেন মাথাপিছু প্রায় ১শ’ ৫০ টাকা। খাবার ভাতা থেকে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পকেটে রাখছেন মাথাপিছু ৯০ টাকা করে। অর্থাৎ ২শ’ ৭০ টাকা থেকে একজন শিক্ষক পাচ্ছেন ১শ’ ৫৯ টাকা। আর কর্মকর্তার পকেটে যাচ্ছে মাথাপিছু ১শ’ ১১ টাকা করে। তাছাড়া শিক্ষা কর্মকর্তার নিজের জন্য বরাদ্দকৃত টাকাতো নিচ্ছেন। তাহলে উপজেলার মোট ১ হাজার ২শ’ জন শিক্ষক থেকে একটি সাব-ক্লাস্টারে দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ২শ’ টাকা। এভাবে এক বছরে চার সাব-ক্লাস্টারে শিক্ষা কর্মকর্তা হাতিয়ে নিচ্ছেন ৫ লাখ ৩২ হাজার ৮শ’ টাকা। প্রতি ৩০ জনের সাব-ক্লাস্টারে শিক্ষা কর্মকর্তার সহকারী হিসেবে দুইজন শিক্ষক থাকেন। তাদের জন্য বরাদ্দ ৮শ’ টাকা। সে টাকারও হদিস নেই।
শিক্ষকদের অভিযোগ, সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণে ভাত খাওয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে ভেন্যু স্কুল এ আয়োজন করেন।
এদিকে সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে শিক্ষকদের টাকা বুঝে পাওয়ার শিট চালিয়ে দেন বিজ্ঞ প্রশিক্ষক। তখন শিক্ষকরা খাবার ভাতা ২শ’ ৪০ টাকা এবং ৩০ টাকা মূল্যের কলম, প্যাড ও ফাইলপত্র বুঝে পেল মর্মে- নিরূপায় হয়ে স্বাক্ষর দেয়। বিন্দু বিন্দু জল যখন সিন্দু হয়Ñ তা আর চোখের দৃষ্টি সীমার বাইরে থাকতে পারে না। শিক্ষকদের এ মোটা অঙ্কের টাকা প্রতি বছর জালিয়াতি করে নিচ্ছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা। তাদের এ দুর্নীতির খবর আজ চা দোকান থেকে বিদ্যালয় সবখানে আলোচনা হচ্ছে। শিক্ষকদের জন্য সামান্য খাবার ভাতার টাকা কিছু দুর্নীতিবাজ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা অজগরের মতো গিলে খাচ্ছেন। আর শিক্ষকরা অসহায়ের মতো সহ্য করে যাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে হয়রানির শিকার হতে হবে, তাই শিক্ষকরা আজ নীরব। শিক্ষকদের দাবিÑ এভাবে খাওয়ার আয়োজন না করে বরাদ্দকৃত টাকা সরাসরি দেয়াই ভালো। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ভুক্তভোগী ও অসহায় শিক্ষক সমাজ।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা নাসরিন জানান, ‘আমার কাছে বরাদ্দকৃত টাকা আসার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিকট ভাগ করে দেয়া হয়েছে। কোথাও দুর্নীতি হয়েছে কিনা সেটা আমার জানা নেই’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।