পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে এখনই একটি আইন অথবা অধ্যাদেশ জারি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং প্রবর্তনসহ প্রেসিডেন্টকে চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এর আগে বিকেল চারটায় বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সংলাপ শেষ হয়। বিকেল চারটায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল প্রবেশ করে। বৈঠক চলে বিকেল ৪টা ৫ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত।
নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রেসিডেন্টকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সময় স্বল্পতার কারণে আগামী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের সময় যেন এর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। কাদের বলেন, সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে এখন থেকেই সে উদ্যোগ গ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু করা যায়।
ই-ভোটিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমানে বিরাজমান সব বিধি-বিধানের সঙ্গে জনমানুষের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং প্রবর্তন করতে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সংবিধান ও বিরাজমান সব আইনকানুনের ওপর শ্রদ্ধাশীল। প্রেসিডেন্টের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সুগভীর প্রজ্ঞা ও সুবিবেচনার প্রতি আওয়ামী লীগের পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে প্রেসিডেন্ট গৃহীত যে কোনো ন্যায়সংগত উদ্যোগের প্রতি এই দলের পরিপূর্ণ সমর্থন থাকবে। এর আগে বৈঠক শেষে বঙ্গভবন থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ওবায়দুল কাদের জানান, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের আশা প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ। নতুন ইসি গঠন নিয়ে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপকালে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে জয়নাল আবেদীন বলেন, প্রেসিডেন্ট আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন গুরুত্বপূর্ণ। অবাধ নির্বাচনে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব।
দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল বুধবার বেলা সাড়ে ৪টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ই-ভোটিং’ ব্যবস্থা চালু ও নির্বাচন কমিশন গঠনে স্থায়ী পদ্ধতি হিসেবে এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করেছে বলেও প্রেস সচিব জানান।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রেস সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভবিষ্যতে নির্বাচন নিয়ে কোনও বিতর্ক হোক এটা তিনি চান না। জনগণ যাদের চাইবে, তারাই নির্বাচিত হয়ে সরকার পরিচালনা করবে। সেটাই আওয়ামী লীগ চায় বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রেসিডেন্টের গৃহীত যেকোনও ন্যায়সঙ্গত উদ্যোগের প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিপূর্ণ সমর্থন থাকবে বলেও সংলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেন।
আওয়ামী লীগের চার দফা প্রস্তাব ঃ
প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে সংলাপে চার দফা প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, এসব প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রেসিডেন্ট সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণে একক এখতিয়ার প্রদান এবং সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে বৈঠকে অংশ নেয়। এসময় দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন গঠনে চার দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। প্রেসিডেন্টের কাছে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবগুলো হচ্ছে প্রথমঃ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর বিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন। দ্বিতীয়তঃ প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট যা উপয্ক্তু বিবেচনা করবেন, সে প্রক্রিয়ায় তিনি নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন। তৃতীয়তঃ প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগের লক্ষ্যে সম্ভব হলে এখনই একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন অথবা অধ্যাদেশ জারি করা যেতে পারে। সময় স্বল্পতার কারণে ইসি পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় যেন এর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়, সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে এখন থেকেই সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা। চতুর্থতঃ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিরাজমান সব বিধিবিধানের সঙ্গে জনগণের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং চালু করা।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট তাকে স্বাগত জানান। তার আগেই প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা বঙ্গভবনে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে প্রেসিডেন্ট বঙ্গভবনের দরবার হলে পৌঁছানোর পর বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে আলোচনা শুরু হয়। শুরুতে প্রেসিডেন্ট আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান এবং প্রধানমন্ত্রী তাকে ধন্যবাদ দেন।
এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আবুল মাল আবদুল মুহিত, এইচ টি ইমাম, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মোহাম্মদ জমির। সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন।
সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন রাষ্ট্র প্রধান আবদুল হামিদ। ২০১২ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ‘সার্চ কমিটির’ মাধ্যমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে এ কমিশনের মেয়াদ শেষে নতুন যে ইসি দায়িত্ব নেবে, তাদের অধীনে ২০১৯ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।