পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : মানুষের সেবা ও উন্নয়নে জেলা পরিষদের হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সরকারের উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বুধবার সকালে তার তেজগাঁও কার্যালয়ে জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথ পাঠ করানো শেষে দেয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান।
সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ আইনটি ২০০০ সালে পাস হওয়ার ১৬ বছর পর গত ২৮ ডিসেম্বর ৫৯টি জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এটিই ছিল জেলা পরিষদের ১৩১ বছরের ইতিহাসে প্রথম সরাসরি নির্বাচন। এদিন ৫৯ জন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে শপথ পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা যাতে বজায় থাকে; আমি চাই, আপনারা (জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানরা) অন্তত সেই দায়িত্বটা ভালোভাবে পালন করবেন। দেশ ও জাতির সেবায় আপনাদের নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের ওপর এটাই দায়িত্ব থাকবে যে, প্রতিটি উন্নয়নের কাজ যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয় এবং স্ব-স্ব জেলার সার্বিক উন্নয়ন এবং সমস্যাবলী খুঁজে বের করা। কি করলে পরে সেই জেলার আরো উন্নতি হতে পারে সেই দিকে দৃষ্টি দেয়া এবং দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়েই আপনাদের কাজ করে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তাই মানুষের সেবা নিশ্চিত করার জন্য তার সেই লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে উদ্যোগ নিই এবং স্থানীয় সরকার আইন পাস করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেলা পরিষদে নির্বাচন এবারই প্রথম হলো। আমরা ইলেকট্রোরাল কলেজের মাধ্যমে এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইন পাস করি এবং সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বিধায় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য জনসেবা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের মানুষকে সেবা দেয়া। আমরা যখন স্বাধীনতা অর্জন করি, তখন দেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ছিল। আজকে ১৬ কোটি মানুষ। আমাদের ভূখ- সীমিত, তার মাঝে এত মানুষের কাছে সেবা পৌঁছানো সত্যিই খুব কষ্টসাধ্য।
’৭৫ পরবর্তীতে এদেশের মানুষের বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদেরকে মনে রাখতে হবেÑ এ দেশের মানুষ দীর্ঘদিন শোষিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত ছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর থেকে এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছিল। কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরই বাংলাদেশের জনগণ প্রথম জানতে পারে যে, সরকার জনগণের সেবা করে এবং জনগণ তার সুফল পায়। সরকার শুধু নিজেদের ক্ষমতা ভোগ করতে আসে না এবং সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রিকরণ করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তাই মানুষের সেবা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর সেই লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে উদ্যোগ নেই এবং স্থানীয় সরকার আইন পাশ করি। জেলা পরিষদে নির্বাচন এবারই প্রথম হলো। আমরা ইলেকট্রোরাল কলেজের মাধ্যমে এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইন পাশ করি এবং সেভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বিধায় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য জনসেবা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের মানুষকে সেবা দেয়া। আমরা যখন স্বাধীনতা অর্জন করি তখন দেশে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ ছিল। আজকে ১৬ কোটি মানুষ। আমাদের ভূখ- সীমিত, তার মাঝে এত মানুষের কাছে সেবা পৌঁছনো সত্যিই খুব কষ্টসাধ্য।
তিনি বলেন, আমরা সবসময় মনে করি ক্ষমতাটাকে যতটা সম্ভব বিকেন্দ্রিকরণ করতে পারবো জনসেবাও তত নিশ্চিত হবে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।
রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলেই জনগণের সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উন্নয়নের পথে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনের পরে আমরা যখন সরকারে আসি তখন যেভাবে যে অবস্থায় বাংলাদেশকে পেয়েছিলামÑ সে অবস্থা থেকে সর্বক্ষেত্রে একটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে একটা উন্নয়নের অগ্রযাত্রা আমরা শুরু করেছি। কারণ সকলের উন্নয়ন নিশ্চিত করাটাই আমাদের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ এর পর ২০১৪ সালে যখন নির্বাচন হলো সেই নির্বাচনেও জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলো। যার ফলে আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থেকেছে। যে কারণে আজ বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
তার লক্ষ্য বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তোলা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ যদি ক্ষুধার্ত থাকে, দরিদ্র থাকে, তারা যদি রোগে-শোকে ভুগে মারা যায়, তাহলে সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য অর্জন কখনও সম্ভব হবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমরা জোর গলায় বলতে পারিÑ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। চিকিৎসা সেবা জনগণের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। শিক্ষার যেন অগ্রগতি হয় তার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। তারমধ্যে রয়েছেÑ আমরা বিনামূল্যে প্রিপ্রাইমারী থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্য বই দিচ্ছি। বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি, স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা অবকাঠামো গড়ে তুলছি। বিভিন্ন টেনিং সেন্টার, টেনিং ইনস্টিটিউট গড়ে তুলে বিভিন্নমুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে।
স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছে এবং ‘যেতে হবে বহু দূর’ এমন অভিমত ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজকে স্বাধীন দেশ। তবে, ৪৫ বছর কিন্তু স্বাধীনতার পার হয়ে গিয়েছে। এখনো অনেক কাজ বাকী, দেশের দুঃখী মানুষের মুখে আমাদের হাসি ফোটাতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, যদি ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জীবনে না আসতো তাহলে বাংলাদেশ আরো ২৫-৩০ বছর আগেই উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠতো। জাতির পিতা গড়ে তুলতেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর সেই কাজ সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। কাজেই দায়িত্ব এখন আমাদের। আমরা তাঁর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে চাই। সে জন্যই আমরা দিন-রাত অত্যন্ত পরিশ্রম করে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিয়ে, নীতিমালা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। যার সুফল দেশ পাচ্ছে, দেশের মানুষ ভোগ করছে।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের শপথ গ্রহণ
প্রথমবারের মতো নির্বাচিত ৫৯ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজ শপথ গ্রহণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তাদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করান। ২০০০ সালে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ আইনটি পাসের ১৬ বছর পর গত ২৮ ডিসেম্বর ৫৯টি জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পরিষদের ১৩১ বছরের ইতিহাসে এটিই ছিল জেলা পরিষদের প্রথম সরাসরি নির্বাচন। আইনি জটিলতার কারণে কুষ্টিয়া ও বগুড়া জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন পৃথক আইনে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আগামী ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। এলজিআরডি সচিব আবদুল মালেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।