Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এক এগারোর মতো আরেকটি ষড়যন্ত্র আকাশের চারিদিকে ঘুরছে গয়েশ্বর

| প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ২০০৭ সালের ১/১১ এর মতো আরেকটি ষড়যন্ত্র ‘আকাশের চারিদিকে’ ঘুরছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গতকাল বুধবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ১/১১ একটা ষড়যন্ত্র গেছে। আরেকটা ষড়যন্ত্র আকাশের চারিদিকে ঘুরছে। এটা আন্দোলন ব্যতিরেখে এই মাথার ওপর ষড়যন্ত্রের যে জ্বাল, এটা সরবে না, শেষটায় আঁকড়ে ধরবে।
আমাদের মধ্যে আমরা যারা দলের সাথে, নেত্রী সাথে বেঈমানি করছি, আগামী ষড়যন্ত্রে যেন আমরা সেই ফাঁদে পা না দেই। আমরা যদি আমাদের মধ্যে এক থাকতে পারি, আশা করি কোনো ষড়যন্ত্রই গ্রাস করতে পারবে না। নির্মূলের করতে করতে নিজেরাই নির্মূল হয়ে যাবে। এ নিয়ে কোনো কথা না বলাই ভালো।
গয়েশ্বর বলেন, ১/১১ কুশীলবদের বিচার এই সরকার করবে না। কারণ তারা বেনিফিসারী। তবে ওদের বিচার হবে না, এটা ঠিক নয়। কোনো না কোনো দিন জনগণের সরকার আসলে তাদের বিচার হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট-এর উদ্যোগে ‘ষড়যন্ত্র ও ওয়ান ইলেভেন সরকার’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমার পার্টির চেয়ারম্যান কয়েক দিন পর পর আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে যাবেন। রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা। এখনো বলছি, অগণিত শহীদের জীবনের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে, এখনো গণণা হয়নি। একেবারে ত্রিশ লক্ষ, এটা কমও না একটা বেশিও না। আমি সরকারকে বলব, ত্রিশ লাখ শহীদের গ্যাজেট প্রকাশ করুন। মুক্তিযুদ্ধে যে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে, যাদেরকে গণহত্যার তালিকা রাখছেন, তাদেরকে শহীদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করতে পারেন, প্রতিবছর পরিবর্তন করতে পারেন, সংশোধন করতে পারেনÑ কত লোক যুদ্ধে মারা গেলো, এই উদ্যোগটা নিলেন না কেনো? ত্রিশ লক্ষ না হয়, ত্রিশ হাজারও তো হতে পারে। একটা এ রাউন্ড ফিগার ত্রিশ লক্ষ। একজন মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্পূর্ণ অনুপস্থিত, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের কথাটা বলে ফেলছেন, এই বলাটা ভুল হলে, ভুলটা কারেকশন করলে অপরাধ হয় নাকী? কোনো অপরাধ হয় না। দুইটা তালিকা করুন, রাজাকারের তালিকা করুন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাও করুন এবং কখন কত লোক যুদ্ধক্ষেত্রে মারা গেছেন, কত লোক গণহত্যার শিকার হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ করুন। তাদেরকে শহিদী মর্যাদা ঘোষণা করুন।
সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের ফলাফল নিয়েও কথা বলেন গয়েশ্বর যিনি দলের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে একজন বেজাল ইমাম আছে যিনি ছাত্রলীগের মিটিংয়ে বলছিলেন, তোমরা কী করছ। আমার এই অফিসাররাই সরকার গঠন করছে। অর্থাৎ তার অফিসার কারা- প্রিজাইডিং অফিসার- সরকারী অফিসার। এইচ টি ইমামকে জিজ্ঞাসা করলে জানা যাবে, তিনি নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে ঘটনাটা কিভাবে ঘটাইছেন। উপরে ফকফকা, একদম ফকফকা। যেটা আমাদের চেয়ারপার্সন বলেছেন, উপরে ফিটাফাট ভেতরে সব ষড়যন্ত্র। অর্থাৎ সারাদিন দৃশ্যমান ভোট কেন্দ্রে কোনো কিছু ঘটছেÑ এই অভিযোগ আমি অভিযোগ করি না যেহেতু আমি দায়িত্বে ছিলাম। নির্বাচন দিনের বেলা নির্বাচন সুষ্ঠু কিন্তু ফলাফল আনফেয়ার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০০৭ সালেও ১/১১ যে ঘটনা ঘটলো আমি একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হিসেবে বলব, এটা একটা সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ না, এটা ক্লিয়ার মিলিটারি ক্যু অর্থাৎ সামরিক অভ্যুত্থান। ১১ জানুয়ারি থেকে ২০০৮ সালে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেকোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তখন দেখা গেছে জেনারেল ও বিগ্রেডিয়ারদের। অত্যন্ত নিরাপদে এখন তারা এমন একটি দেশে অবস্থান করছেন যেখানে আমাদের সরকারের কিছু করার আর ভবিষ্যতে সম্ভব হবে কিনা জানি না। ১/১১ দিনটাকে কালো দিবস হিসেবে চিহ্নিত করা উচিৎ। নতুন প্রজন্মের কাছে ওইভাবে উপস্থাপিত হওয়ার উচিৎ।
সংগঠনের সভাপতি সাহাদাত হোসেন সেলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস- চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুুল করীম খান, জাতীয় দলের সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ