পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এস কে এম নুর হোসেন, পটিয়া থেকে : ছোট-বড় সবার কাছে টাকার লোভ আছে। টাকা নামের এই সোনার হরিণের পেছনে ছুটছে মানুষ প্রাচ্য থেকে প্রতিচ্যে। সামান্য ১শ’ ২শ’ টাকার লোভে মানুষ একে অপরকে খুন করে। টাকার লোভে অনেক শিক্ষিত জ্ঞানী ব্যক্তির বিবেকও লোপ পায়। কিন্তু টাকার লোভ গ্রাস করতে পারেনি ১৩ বছরের শিশু আলমকে। ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা বাজারে কুড়িয়ে পেয়ে প্রকৃত মালিকের কাছে তুলে দিয়েছে শিশু আলম। সততার এ বিরল দৃষ্টান্তের ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজারে।
জানা যায়, পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে শিশু আলম পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজারে সবজির দোকানে শ্রমিকের কাজ করে। গত ৯ জানুয়ারি রাত ৯টায় বাজারে দোকানদারসহ ক্রেতা-বিক্রেতা না থাকায় আলম বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এ সময় লেদু মিয়ার পিঁয়াজের দোকানের ডালার ওপর একটি কাগজের ব্যাগ দেখতে পায় আলম। ব্যাগটি নিয়ে আলম খুলে দেখে সেখানে ১শ’ ও ১ হাজার টাকার বেশ কয়েকটি বান্ডিল। এতগুলো টাকা দেখে আলম বাজারের এক পাশে শসা বিক্রেতা জাফরকে গিয়ে টাকাগুলো দেখায়। তখন জাফর বিষয়টি কলা ব্যবসায়ী বাবলুকে বলে। বাবলু আলমের মালিক সবজির দোকানদার নুরুল ইসলাম বাচাকে জানায়। অতঃপর তারা তিনজন উপস্থিত হয়ে টাকাগুলো বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম খোকনের কাছে জমা দেয়। এ ঘটনার ১০-১৫ মিনিট পরই টাকার প্রকৃত মালিক পটিয়া উপজেলার আজিমপুর গ্রামের খোরশেদ টাকাগুলো খুঁজতে গিয়ে খোকনের কাছে টাকার সন্ধান পায়। পরে উপযুক্ত প্রমাণ পেয়ে টাকাগুলো মালিক খোরশেদের হাতে তুলে দেয়। খোরশেদ জানায়, সে বিকাশের ব্যবসা করে। পরের দিন ব্যাংকে জমা দেয়ার উদ্দেশ্যে টাকাগুলো তার হাতে ছিল এবং মুন্সেফ বাজার থেকে কিছু কাঁচা তরকারি কিনতে গিয়ে হঠাৎ একটি ফোন আসায় টাকার ব্যাগটি পিঁয়াজের দোকানের ডালায় রেখে কথা বলতে বলতে আরেক জায়গায় চলে যায়। ব্যাগ নিতে তার খেয়াল ছিল না। শিশু আলমের বাড়ি ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলায়। নদীভাঙনের কারণে তার বাবা সামশুদ্দিন পটিয়ায় এসে দীর্ঘ ১৩-১৪ বছর ধরে অবস্থান করে আসছে। তার বাবা কিছুদিন লবণ মিলে শ্রমিকের কাজ করার পর ময়দার মিলে চাকরি করে। বর্তমানে তার বাবা অসুস্থ। তারা চার ভাই দুই বোনের মধ্যে আলম ছিল সবার ছোট। বাজার কমিটির সেক্রেটারি শাহ আলম খোকন কিছু দিন আগে আলমকে পটিয়া ঝরে পড়া নিকেতন নামের একটি বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার জন্য ভর্তি করে দেয়। আলমের বাবা সামশুদ্দিন পটিয়া হাদু তালুকদার বাড়ির ইদ্রিস পানুর ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছে। টাকার মালিক খোরশেদ কিছু টাকা আলমকে বকশিস দিতে চাইলেও সে নেয়নি। শিশু আলমের সততার এ দৃষ্টান্ত সবার জন্য অনুকরণীয় বলে বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম খোকন ও লোকজনের অভিমত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।