Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আবদুল কাদের জিলানী (রাঃ)’র আবির্ভাব ছিল নব-সূর্যের উদয়-আল্লামা আহমদ শাহ্

জামেয়া ময়দানে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম মাহফিল

| প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট, চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপনায় গত সোমবার বাদ ফজর হতে পবিত্র কোরআন খতম, খতমে মুজমুয়ায়ে সালাওয়াতে রাসূল (সা.), খতমে বোখারী ও খতমে গাউসিয়া অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে বাদ মাগরিব থেকে গেয়ারভী মাহফিল অনুষ্ঠানের পর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্’র সভাপতিত্বে এবং প্রধান মেহমান আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ ও বিশেষ মেহমান আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ আহমদ শাহ্’র উপস্থিতিতে নগরীর ষোলশহরস্থ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা ময়দানে হযরত গাউসুল আযম দস্তগীর (রহ.)’র পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার ওলামায়ে কেরামগণ বক্তব্য রাখেন।
এতে বিশেষ মেহমান আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ মুহাম্মদ আহমদ শাহ্ বলেন, ইসলামের সোনালী যুগের অবসানের পর বিশ্বব্যাপী মাথাচাড়া দিয়ে উঠে নানা ভ্রান্ত মতবাদ নীতি নৈতিকতা ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে মুসলিম সমাজে দেখা দেয় উদাসীনতা ও নির্লিপ্ততা। শাসকদের মধ্যে বেড়ে যায় স্বেচ্ছাচারিতা ও ভোগ-বিলাসিতা। এমন ক্রান্তিকালে মুসলমানদের সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদানে অপরিহার্য হয়ে পড়ে একজন পথ প্রদর্শকের। এ অবস্থায় দিকভ্রান্ত মানুষের মাঝে আশার আলো জ্বালাতে ৪৭১ হিজরিতে বিশ্বের বুকে তশরিফ আনেন হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) এবং হযরত মাওলানা আলী শেরে খোদা (রা.)’র পবিত্র রক্তধারার উত্তরাধিকারী পীরানে পীর দস্তগীর, হযরত সৈয়্যদ আবু মুহাম্মদ মুহিউদ্দীন আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)।
মাতৃগর্ভের অলি হযরত গাউসুল আযম জিলানী (রহঃ)’র আবির্ভাব ছিল অন্ধকার পৃথিবীতে এক নব-সূর্যের উদয়। তার শুভাগমনে মৃত প্রায় ইসলাম পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠে। এজন্য ‘মুহিউদ্দিন’ নামে লকব তাঁর নামের সাথে শোভিত-যুক্ত হয়েছে। ইলমে শরিয়তের পা-িত্য অর্জন সত্ত্বেও এ শিক্ষায় তিনি পরিপূর্ণ তৃপ্ত হতে পারেননি। মনোনিবেশ করলেন আধ্যাত্মিক জ্ঞান অন্বেষণে। দীর্ঘ সময় কঠিন রেয়াজতে মগ্ন হলেন। সাধনার এক পর্যায়ে উপনীত হন আধ্যাত্মিকতার শ্রেষ্ঠ এক স্তরে। এ সম্পর্কে তারই পবিত্র মুখ নিঃসৃত বাণী। ‘আনাল হাসানী ওয়াল মাখদা মাকামী, ওয়া আকদামী আলা উনকির রেজালী’ অর্থাৎ ‘আমি হযরত হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহুর বংশধর। মাখদা নামের বেলায়তের গূঢ় রহস্যের এক সোপান প্রকোষ্ট হলো আমার মর্যাদার উচ্চাসন। আর আমার কদম সকল অলীর কাঁধের উপর।’
মুসলমানরা যাতে ইসলামের সঠিক পথের দিশা পায় এ লক্ষ্যে পীরানে পীর গাউসে পাক (রহ.) প্রবর্তন করেন এক বরকতময় সিলসিলার। যা সিলসিলায়ে কাদেরিয়া নামে সুবিদিত। তিনি এ জগৎ থেকে পর্দা করার পর তার মনোনীত খলিফারা এ সিলসিলার কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেন। ফলে প্রধান চার তরিকার মধ্যে এ তরিকার অনুসারীর সংখ্যাই বেশি। আওলাদে রাসূল, হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) প্রবর্তিত এ সিলসিলা এ দেশে প্রচারে প্রধান ভূমিকা রাখেন আরেকজন আওলাদে রাসূল, হযরতুল আল্লামা সৈয়দ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.), তিনি পর্দা করার পর তার সুযোগ্য ছাহেবজাদা আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এ তরিকার প্রসার ঘটান। এরপর বর্তমানে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মা.জি.আ.)’র পবিত্র হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে বিভিন্ন প্রান্তের অগণিত মানুষ এ হক্কানী সিলসিলায় দাখিল হয়ে ধন্য হচ্ছেন।
এতে আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এডিশনাল জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সামশুদ্দিন, জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, এ্যাসিসটেন্ট জেনারেল সেক্রেটারি এস এম গিয়াস উদ্দিন শাকের, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ সিরাজুল হক, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি প্রফেসর কাজী সামশুর রহমান, কেন্দ্রীয় গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ সোলাইমান আনসারী, শায়খুল হাদীস মাওলানা মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী, আনজুমান ট্রাস্টের সদস্য মুহাম্মদ নূরুল আমিন, সাহাজাদ ইবনে দিদার, মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, শেখ নাসির উদ্দিন আহমেদ, মুহাম্মদ তৈয়বুর রহমান, মুহাম্মদ আবুল কাশেম, নূর মোহাম্মদ কন্ট্রাক্টর, মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, আবদুল মোনাফ সিকদার, মুহাম্মদ আবদুল হাই মাসুম, প্রফেসর মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মুহাম্মদ কমর উদ্দিন সবুরসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, গাউসিয়া কমিটির কেন্দ্রীয় পর্ষদের যুগ্ম সচিব এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ এ মহান দিবস উপলক্ষে বিশেষ দোয়াসহ দেশ, জাতি ও সমগ্র মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করেন এবং অনুষ্ঠান শেষে তাবারুক বিতরণ করা হয়।
আজ তাহের শাহ স্বদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন
আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ ও আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ আহমদ শাহ্ পবিত্র জস্নে জুলুসে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে গত ৬ ডিসেম্বও ’১৬, বাংলাদেশে আসেন এবং গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত আজিমুশ্শান মাহফিলে যোগদান শেষে আজ বুধবার রাত ৮-৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্বদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ