Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সাভারে নারী স্বাস্থ্য কর্মীর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার

| প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্বামী-শ্বশুর আটক
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে : ঢাকার সাভারে নিখোঁজের পাঁচ দিন পরে এক স্বাস্থ্য কর্মীর হাত-পা বাঁধা ভাসমান লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করেছে। সোমবার দুপুরে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের তুরাগ নদী থেকে হাত-পা বাঁধা ভাসমান লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তানিয়া আক্তার লিজা (২৪) সাভার আমিনবাজারের সালেপুর এলাকার হযরত আলীর কন্যা। সে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধানে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজ করতো।
আটক নিহতের স্বামী ওমর ফারুক ও শ্বশুর মজিবুর রহমানের বাড়ীও একই এলাকায়।
আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্য উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাছেদ মিয়া নিহতের পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, গত বুধবার (৪ জানুয়ারী) তানিয়ার দেবর ইয়াসিন রহমান (অপু) পারিবারিক দ্বন্দ্ব মেটানোর কথা বলে মুঠফোনে তাকে ব্যাংক কলোনী এলাকায় ডেকে আনে। সেখানে পৌঁছার পর তানিয়া তার মাকে মুঠফোনে জানায়, ‘আমি ব্যাংক কলোনী আছি অপুর সাথে’। এখানে অপুর আরও কয়েকজন বন্ধুও রয়েছে। এরপর থেকেই গৃহবধূর তানিয়ার ফোনটি বন্ধ থাকায় সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করেও কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
শনিবার তানিয়া নিখোঁজের ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন তার ভগ্নিপতি মো: সোহরাব। পরে মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে অপু ডেকে নেয়ার পর থেকেই তানিয়া নিখোঁজ এমনকি তার মুঠফোনও বন্ধ।
গতকাল দুপুরে বড়দেশী গ্রামের তুরাগ নদীতে তানিয়ার হাত-পা বাঁধা লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশের খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এসআই বাসেদ আরো জানান, তানিয়াকে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এ হত্যাকা-ের সাথে জড়িত সন্দেহে নিহতের স্বামী ওমর ফারুক ও শ্বশুর মজিবুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া নিহতের দেবর অপুকেও আটকের চেষ্টা চলছে।
তবে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিহতের স্বামী ওমর ফারুক দাবি করেছে ৬/৭ মাস আগে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়েছে এবং এ হত্যাকা-ের সে জড়িত নয়।
তবে তাদের ছাড়াছাড়ির বিষয়টি নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এদিকে নিহতের ভগ্নিপতি আমিনবাজার ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মো: সোহরাব জানান, প্রায় এক বছর আগে তানিয়া ও ফারুক ভালবেসে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করে। ফারুক চট্টগ্রামে নৌবাহিনীতে চাকরি করে। আর তানিয়া পরিবার-পরিকল্পনার স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে সালেপুর, বড়দেশী ও চাঁনপুর মহল্লায় কাজ করতো।
বিয়ের কিছুদিন যাওয়ার পর ফারুক তানিয়ার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকা না দেয়ায় তার উপর নির্যাতন করতো। প্রায় ৭ মাস আগে তানিয়া ফারুকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। এরপর থেকেই দুইজনে আলাদা হয়ে যায়।
তিনি ধারণা করছেন, মামলা দায়ের করায় ফারুক ও পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে তানিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
আমিনবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, ছেলে-মেয়ে দুইজনের বাড়িই তার ইউনিয়নে। স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে ঝড়ার জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে তিনি শুনেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ