পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিজ্ঞপ্তির আড়াই বছর পর চূড়ান্ত গেজেট : আটকে গেছে ২১ জনের নিয়োগ : নিয়োগপ্রাপ্তদের ২২ জানুয়ারী কর্মস্থলের যোগদান করতে হবে
মালেক মল্লিক : নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২ বছর ৭ মাস পর নবম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষার উত্তীর্ণ ৭৯ জন সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগ পেলেন। গতকাল রোববার এ বিষয়ে (গেজেট প্রকাশ) প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আগামী ২২ জানুয়ারি পূর্বাহ্নে তাঁদের নামের পার্শ্বে বর্ণিত জেলার জেলা ও দায়রা জজ এর নিকট যোগদান করতে বলা হয়েছে।
আর ২১ জনের মধ্যে ১৫ জনের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গোয়েন্দা প্রতিবেদন না পাঠানো ও ৬ জনের ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যয়ন না করায় তাদের নিয়োগ আটকে গেছে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ড. মো. রেজাউল করিম ইনকিলাবকে বলেন, ৭৯ সহকারী জজ নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তাদের কর্মস্থল মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের ২৯ মে নবম বিজেএসের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১ হাজার ৪৯৬ জনের লিখিত পরীক্ষা হয় ২০১৫ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৪১৩ জন। একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এ যাচাই-বাছাই শেষ করতে এবারই প্রথম ১১ মাসেরও বেশি সময় লাগে। আর পুরো প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে লাগে ২ বছর ৭ মাস এর বেশি সময় চেয়েও বেশি বলে জানা যায়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর নবম বিজেএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১০০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে কমিশন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করতেই কেটে গেছে প্রায় এগারো মাস। যাচাই-বাছাই শেষে ৭৯ জনের ব্যাপারে ছাড়পত্র দেয় সরকারের ওই দুটি মন্ত্রণালয়। ২৭ ডিসেম্বর এই ৭৯ জনকে সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগের গেজেট জারির জন্য সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ চায় আইন মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের জিএ কমিটি ৭৯ জনকে সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। গতকাল তাদের গেজেট প্রকাশ করা হয়। নিম্নআদালতে বিচারকের সংকট ও মামলা জট নিরসরে এ নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগীয় সম্মেলনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও একাধিকবার বিচারকের সংকট দূর করতে বার বার নতুন নিয়োগের কথা বলেন।
মেধাক্রম ১ নম্বরে রয়েছে শেরপুর জেলার বাসিন্দা এলিছ জাহান, রোল নম্বর ২৭৪। তার কর্মস্থল ময়মনসিংহ। মেধাক্রম দ্বিতীয় রয়েছেন কক্সবাজারের মাসুমা জান্নাত, রোল ২৯৪৭, তার কর্মস্থল চট্রগ্রাম। মেধাক্রম ৪ নম্বরে মেহেরা মাহাবুব তার কর্মস্থল নাটোর, নূর এসরাত জাহান কর্মস্থল কুমিল্লা। এছাড়াও তাহমিনা হক নোয়াখালি, জিএম ফারহান এসতিয়াক ফেনী, মোহসিনা ইসলাম চাঁদপুরে, সাদ্দাম হোসেন বগুড়া, ইশরাত জাহান রাজবাড়ী, এসএম শরীয়ত উল্লাহ পাবনায়, আশফাকুর রহমান রংপুর, মোশাররফ হোসেন কুড়িগ্রাম, আশরাফুনানাহার রীটা চট্টগ্রাম, সৈয়দা মোসাদ্দেকা হোসেন ফেনী। এছাড়া তানিয়া রউসলাম লিপি বরিশাল, সাইফুদ্দীন হোসেন যশোর, রাবেয়া বেগম বরিশাল, রাহেলা পারভীন কুমিল্লা, দেওয়ান মনিরুজ্জামান লালমনিরহাট, আব্দুলাহ খান শরীয়তপুর, তাসমিনা খান নারায়ণগঞ্জ, নুর জাহান বেগম হবিগঞ্জে সহকারী জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া পার্থ প্রতিম শিল কুষ্টিয়া, কিশোর দত্ত দিনাজপুর, মৌসুমী সাহা ময়মনসিংহ, অপরাজিতা দাস মুন্সিগঞ্জ, ভিক্টোরিয়া চাকমা পাবনা, শান্তনু কুমার মন্ডল বাগেরহাট, সোনালী রানী উপাধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, স্বর্ণকুমার সেন কিশোরগঞ্জ ও শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গা নেত্রকোনা জেলার সহকারী জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সর্বমোট ৭৯ জন সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। নির্বাচিত প্রার্থীকে অস্থায়ী ভিত্তিতে জুডিশিয়াল সার্ভিসে সহকারী জজ পদে জুডিশিয়াল সার্ভিস আদেশ, ২০১৬ এর বেতন স্কেলের ৬ষ্ঠ গ্রেডে ৩০৯৩৫-৬৪৪৩০ বেতনক্রম অনুসারে জ্যেষ্ঠতা অক্ষুণœ রেখে শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ করা হয় এবং সুপ্রিম কোর্টের সাথে পরামর্শক্রমে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত তাঁদের নামের পার্শ্বে বর্ণিত জেলায় সহকারী জজ (শিক্ষানবিশ) হিসেবে পদায়ন করা হয়।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সব পরীক্ষা শেষে ছয় মাসের মধ্যে ২০০৮ সালের ১৭ মার্চ চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। উত্তীর্ণ ৩৯০ জন ২২ মে চাকরিতে যোগ দেন। এটি তৃতীয় বিজেএস ব্যাচ। ২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি চতুর্থ বিজেএসের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয় এর প্রায় ১ বছর ৪ মাস পর। ২১২ জনের যাচাইয়ে লাগে চার মাস। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয় প্রায় দুই বছরের বেশি। ২০১০ সালের ২৪ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা পঞ্চম বিজেএসে নিয়োগ পান ১২০ জন। এই নিয়োগে ২৬ মাস লেগেছে, এর মধ্যে যাচাইয়ে লাগে প্রায় ১ বছর। ষষ্ঠ বিজেএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০১১ সালের জুনে। ১২৫ জনের এই ব্যাচের নিয়োগে লাগে ২ বছর ৪ মাস। এর মধ্যে যাচাইয়ে যায় ১৪ মাস। সপ্তম বিজেএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের ২৬ জুলাই। এই ব্যাচে ৬৭ জনকে নিয়োগেও ২৮ মাস লাগে। এর মধ্যে যাচাই প্রতিবেদনে যায় ১০ মাস। অষ্টম বিজেএসে ৫৩ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লাগে ২৯ মাস। এর মধ্যে যাচাইয়ে লাগে প্রায় ১১ মাস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।