Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নৌ-দস্যু নোয়া বাহিনীর আত্মসমর্পণ

২৫ আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ১০৫ রাউন্ড গুলি জমা

| প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কলাপাড়া উপজেলা সংবাদদাতা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন সুন্দরবনের কুখ্যাত নৌদস্যু ‘নোয়া ভাই’ বাহিনীর প্রধান মো. বাকী বিল্লাহ ওরফে নোয়াসহ ১২ জন সদস্য। সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশায় শনিবার দুপুরে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা রাখাইন মার্কেট মাঠে র‌্যাব-৮ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ১শ’ ৫ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে আত্মসমর্পণ করা ৭ দস্যু বাহিনীর ৬০ জন সদস্যকে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে আর্থিক অনুদান এবং শীত বস্ত্র বিতরণ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
গত শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-৮’র একটি দল সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের পুটিয়া খালে জলদস্যুবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে র‌্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ‘নোয়া ভাই’ বাহিনী প্রধানসহ ১২ জলদস্যু। এ সময় তারা অন্ধকার জগত ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশায় তাদের হেফাজতে থাকা ২৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ১শ’ ৫ রাউন্ড গুলি র‌্যাব-৮ এর কাছে সমর্পণ করেন।
জলদস্যু আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল এখনও যারা সুন্দরবনের গহীনে লুকিয়ে রয়েছে তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। মন্ত্রী বলেন, সরকার অহেতুক রক্তপাত চায় না। তাই প্রাণে বাঁচতে হলে সুন্দরবন দাপিয়ে বেড়ানো অন্যান্য জলদস্যু বাহিনীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ করে আইনের আশ্রয় গ্রহণের আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরো বলেন, সুন্দরবন হলো পৃথিবীর বিখ্যাত স্থান। জীবিকার জন্য জেলেরা সুন্দরবনে মৎস্য আহরণ করে। এছাড়া দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন দেখতে আসে। তাই সুন্দরবনকে সুরক্ষা করতে সরকার বদ্ধপরিকর। শুধুমাত্র র‌্যাব নয়, সরকারের অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকেও শক্তিশালী করা হচ্ছে। সরকার যেভাবে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করেছে, ঠিক তেমনি জনগণের সহায়তায় সুন্দরবনও জলদস্যু মুক্ত করার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ইতিপূর্বে আত্মসমর্পণকারী ৭ দস্যু বাহিনীর ৬০ সদস্যকে সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে এসে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী দিক নির্দেশনা দিয়েছে। সরকার তাদের পুনবার্সনের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তিনি স্থানীয় জনগণের সহায়তা কামনা করেন।
র‌্যাব-৮ কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মো. আনোয়ার উজ-জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ বলেন, এখনও পূর্ব সুন্দরবনে ২টি এবং পশ্চিম সুন্দরবনে ৬টি নৌদস্যু গ্রুপ সক্রিয়। তারা র‌্যাবের নজরদারিতে রয়েছে। প্রাণে বাঁচতে চাইলে তাদের দ্রুত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান তিনি। একই সাথে স্বাভাবিক জীবনের আশায় আত্মসমর্পণ করা সাবেক জলদস্যুরা যাতে সমাজের সাথে মিলেমিশে থাকতে পারে, সে লক্ষ্যে তিনি স্থানীয় প্রশাসনসহ জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।  
র‌্যাব-৮’র উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বরিশাল রেঞ্জে ডিআইজি শেখ মারুফ হাসান, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক কেএম শামীমুল হক সিদ্দিকী এবং পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
আত্মসমর্পণ করা ‘নোয়া বাহিনীর’ প্রধান মো. বাকী বিল্লাহ ওরফে নোয়া বলেন, কু-পরামর্শে অন্ধকার জগতে গিয়েছিলেন। দস্যুতা করে তেমন কিছুই করতে পারেননি। অনিশ্চিত জীবন ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপনের আশায় সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনিসহ অন্যান্যরা যাতে স্বাভাবিক জীবনে থাকতে পারেন, সেই লক্ষ্যে সরকার সহ জনগনের সহায়তা চেয়েছেন বাকী বিল্লাহ সহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান এবং র‌্যাব সদর দপ্তরের পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল মাহবুবুল আলম উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ