পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দি নিউ ইয়র্ক টাইমস : আফিম আসক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে মহামারীর রূপ নিয়েছে। চোরাচালানকৃত সহজলভ্য হেরোইনের রূপে তা আন্তঃঅঙ্গরাজ্যের মহাসড়কগুলোতে ছড়িয়ে গেছে এবং ‘পিল মিল’ ক্লিনিকগুলোতেও তা মিলছে যেখানে ক্যান্ডির ন্যায় বেদনানাশক ওষুধ ব্যবহৃত হয়। তা এখন নিউ ইংল্যান্ডের শহরগুলোতেও ছড়িয়ে গেছে যেখানে অনেক লোক তা অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করছে। পাশাপাশি তা কয়লাখনি রাজ্যগুলোকেও ছারখার করছে যেগুলোতে নেশাগ্রস্তরা রোগ চিকিৎসায় প্রেসক্রিপশনের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত একক চিকিৎসকদের কাছে দ্রুত টেলিফোন করে।
সরকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্মকর্তারা বর্তমান আফিম মহামারীকে আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ মাদক সংকট বলে আখ্যায়িত করেছেন যাতে শুধু ২০১৫ সালেই ৩৩ হাজার মানুষ মারা গেছে। অতিরিক্ত মাদক সেবনে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত লোকদের সংখ্যাও প্রায় সমান সংখ্যক। ২০১৫ সালে হেরোইন নেশাগ্রস্তদের মৃত্যুর সংখ্যা গোলাগুলিতে নিহতদের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায়।
দেশব্যাপী অঙ্গরাজ্যগুলোতে নিউইয়র্ক টাইমসের একদল সাংবাদিক সরেজমিন পরীক্ষার পর দেখেছেন যে এ মহামারী হ্রাসের কোনো লক্ষণ নেই। নিউ ইংল্যান্ড থেকে প্রশান্ত উত্তর-পশ্চিমের ‘নিরাপদ ইনজেকশন’ এলাকাগুলো পর্যন্ত জনসমাজগুলো অনিষ্কৃতিযোগ্য এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পথ সন্ধান করছে।
এখানে কয়েকটি রাজ্যের কয়েকজন নেশাগ্রস্তের বিবরণ উপস্থাপন করা হলঃ
মার্বেলহেড, ম্যাসাচুসেটস
সাবারবিয়া, ‘সব ব্যাপারেই ক্লান্ত’
কেটি হার্ভে সে বাড়িটি থেকে বেরিয়ে এলেন যেটাতে তিনি তার বন্ধুদের সাথে থাকতেন। নিজের ডাফেল ব্যাগটি তিনি তার মায়ের গাড়িতে ছুঁড়ে দিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। মা মরিন কাভানাগকে বললেনঃ আমার মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত হওয়া প্রয়োজন। সব ব্যাপারেই আমি ক্লান্ত।
২৪ বছর বয়স্কা কেটি তিন বছর আগে হেরোইন নেয়া শুরু করেন। সব মিলিয়ে আটবার তিনি মাদক মুক্ত ও মাদকাসক্ত হন। তা ছিল অন্যের উৎসাহ। তাতে কাজ হয়নি।
এবার কেটি নিজেই তার সম্ভাব্য মুক্তির ব্যবস্থা করেন। নিজের জীবনের প্রতি ঘৃণা এসে গিয়েছিল তার। বড় হওয়ার জন্য কিছু করার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু অসুস্থ হয়ে যাতে না পড়ি সেটুকু করতাম।
মাদকমুক্তির প্রচেষ্টা শুরু করার আগে কেটি উত্তর বোস্টনের বিত্তবানদের বসত এলাকায় তার মায়ের বাড়ির লিভিং রুমে কাউচে শুয়ে থাকতেন। তার মনে পড়ত বিগত দিনগুলোর কথাঃ মডেল হওয়ার যোগ্য চেহারা থাকা সত্ত্বেও কিছু করতে না পারা, পরিবারের সাথে অসংখ্য মিথ্যা কথা বলা, কিভাবে মায়ের অলংকারগুলো লোপাট করেছেন এবং নেশার পয়সা জোটাতে অচেনা পুরুষদের নিজের দেহ ভোগ করতে দিয়েছেন।
কথা বলার সময় তার চোখ দিয়ে অশ্রুস্রোত বইছিল। সোয়েটারের হাতা দিয়ে চোখ মুছলেন। তার হাতে ট্যাট্টু আঁকা। লেখা স্বাধীনতা। মাদকাসক্তির কারাগার থেকে মুক্তিলাভই এখন তার অন্বিষ্ট।
কেটি ছিলেন মেধাবি অনার্স ছাত্রী। হঠাৎ তিনি ক্ষুধামন্দা রোগে আক্রান্ত হন। তারপর মদ ধরেন। ২১ বছর বয়সে আসক্ত হয়ে পড়েন হেরোইনে।
২০১৫ সালে তিনি পতিতাবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হন। প্রবল অনুশোচনাবোধ থেকে তিনি অনলাইনে তার পরিবার ও বন্ধুদের কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এখনো তিনি নেশামুক্ত নন। তিনি হিসাব করে দেখেছেন যে নেশাগ্রস্ততার সবচেয়ে খারাপ সময়ে তিনি দিনে ১৫ বার পর্যন্ত মাদক নিয়েছেনÑ হেরোইন, কোকেইন, ফেন্টানিল। পাঁচবার তিনি ওভারডোজ নিতেন। ম্যাসাচুসেটসে ওভারডোজের জন্য প্রতিদিন পাঁচজন নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি মারা যায়।
কেটি বলেন, বিশ^াস করুন, আমি কিভাবে বেঁচে আছি জানি না।
অক্টোবরের সে রাতে তিনি নেশামুক্ত হওয়ার চিকিৎসা নিতে যান। চারদিন পর ফেরেন। তিনি তার বন্ধুদের ও মাদকের কাছে ফিরে যান। তার হাতে ফোঁড়ার সৃষ্টি হয়, সম্ভবত নোংরা সূঁচ ফোটানোর কারণে।
দু’ সপ্তাহ পর আবার তিনি মাদক মুক্ত চিকিৎসা শুরু করেন। এবার তিনি টিকে থাকলেন এবং ৩০ দিনের চিকিৎসা কর্মসূচিতে প্রবেশ করেন।
মাদক মুক্তির চিকিৎসায় কেটির ফিরে আসা তার মায়ের জন্য ছিল আবেগপূর্ণ ব্যাপার। মাদকাসক্ত ও তাদের পরিবারদের সাহায্যের জন্য তিনি ‘ম্যাগনোলিয়া নব সূচনা’ নামে একটি গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন।
তার উপদেশ বাণীর মধ্যে আছেঃ আপনার সন্তানকে বলুন আপনি তাদের ভালোবাসেন , কারণ ‘এটাই হতে পারে তাদের প্রতি বলা আপনার শেষ কথা।’ Ñ ক্যাথারিন কিউ. সিলি।
মার্শালটাউন, আইওয়া
বাস্তবে সাহায্য অপর্যাপ্ত হতে পারে
ভাগ্যবতীদের মধ্যে একজন হচ্ছেন অ্যান্ড্রিয়া স্টিন। ২৮ হাজার লোকের গ্রামীণ জন সমাজের মধ্যে হেরোইন আসক্ত কারো মাদকমুক্তির চিকিৎসা কেন্দ্রে যাবার জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়।
এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় এক বছর আগে যখন দু’জন ডাক্তার সাবোক্সন প্রেসক্রিপশন করার লাইসেন্স নিয়ে সেখানে পৌঁছেন। এ অষুধটি মাদকাসক্তদের চিকিৎসায় সহায়ক। এখন স্টিন তাদের একজন রোগী। প্রতি মাসে তিনি একবার তাদের সাথে দেখা করেন ও নতুন প্রেসক্রিপশন নেন।
বর্তমান মহামারিটি নানা কারণে অতীতের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে পৃথক। তার একটি কারণ হচ্ছে নেশাগ্রস্তদের চিকিৎসার দাবি ক্রমবর্ধমান যা নেশাগ্রস্তদের উপর আসক্তির প্রভাব মূল্যায়নে সহায়তা করে।
বিভিন্ন ওষুধের একটি হচ্ছে নারকান নামে পরিচিত নালোক্সোন। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিডোট যা শত শত ওভারডোজ ব্যবহারকারীর জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে। আরেকটি হচ্ছে বিউপ্রেনোরফাইন যা সাধারণত সাবোক্সন হিসেবেই বিক্রি হয়। (অসমাপ্ত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।