Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খুলনাঞ্চলে জলবায়ু ফান্ডের ২৩ কোটি টাকার প্র্রকল্পে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনাঞ্চলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীন নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গৃহিত তিনটি প্রকল্পের দু’টি কাজ শেষ হতেই ভাঙতে শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার নদীর তীর। ২৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পে চরম অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে বলে একাধিক সূত্রের অভিযোগ। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
পাউবো সূত্র জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ডের আওতায় খুলনা জেলার রূপসা উপজেলায় দু’টি ও দাকোপ উপজেলায় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এরমধ্যে রূপসা উপজেলার রামনগর ও রহিমনগর এলাকার আঠারবেকী নদীর তীর সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণে এক কিলোমিটারব্যাপী সংস্কার কাজ ও ব্লক স্থাপন কাজ হাতে নেয় পাউবো। এ কাজের জন্য বরাদ্দ রাখা হয় ১৮ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে হাতে নেয়া এ প্রকল্প শেষ হয় ২০১৬ সালের জুন মাসে। কাজ শেষের ৬ মাস যেতে না যেতেই ব্লকগুলোতে ফাটল দেখা দেয়। স্থানীয় এলাকাবাসী কিছু স্থানে বালুর বস্তা দিয়ে ফাটলরোধ করার চেষ্টা করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্দিষ্ট স্থান থেকে ব্লকগুলো সরে গিয়ে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। নদী তীর থেকে ব্লকগুলো আলগা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। বর্ষা মৌসুমে এ এলাকা আবারও ভাঙার আশাক্সক্ষা করেছেন এলাকাবাসী।
রূপসার নৈহাটী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন বুলবুল বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় কাজ শেষ হয়েছে মাত্র কয়েকমাস হল। এরমধ্যে সরতে শুরু করেছে নদী তীরের ব্লকগুলো। সঠিক তদারকির অভাবে কাজগুলো বাস্তবায়ন হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মাত্র এক কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ করা যাবে নাÑ এটা অসম্ভব ব্যাপার। এখানকার কাজে পুকুরচুরি হয়েছে। ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের যোগসাজসে লুটপাট করেছে কাজটিতে।
স্থানীয় অধিবাসী মনিরুল ইসলাম বলেন, মাস ছয়েক আগে কাজটি শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে ভাঙতে শুরু করায় আমরা কয়েকজন মিলে বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি।
এদিকে, দাকোপ উপজেলার চালনা বাজার সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৮০০ মিটার বাঁধনির্মাণ ও ৬০০ মিটার ব্লক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি টাকা। এ প্রকল্পটিও শেষ হয় গেল বছরের জুন মাসে। এরমধ্যে ৮০০ মিটার বাঁধনির্মাণে তিন কোটি টাকা এবং ব্লক নির্মাণে দুই কোটি টাকা। কাজটি শেষ না হতেই ভাঙন দেখা দিয়েছে।
চালনা বাজার পৌর মেয়র সনৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, পৌর এলাকায় মাছ কোম্পানীর নিকটে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কাজ শেষ হয়েছে মাত্র কয়েক মাস হলো। এরমধ্যে ভাঙন দেখা দেয়ায় স্থানীয় লোকজনও একাধিকবার অভিযোগ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণেই এ দশা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এছাড়াও পূর্ব রূপসা পাড়ের চর রূপসা এলাকা ও তৎসংলগ্ন এলাকার নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এখানে মাত্র ৮০ মিটার কাজ বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা। চলতি বছর জুন মাসে কাজটি শেষ হবে।
প্রকল্প পরিচালক পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, কিছু কিছু স্থানে ব্লক উঠে যেতে পারে। তবে সেগুলো তদারকিতে রয়েছে। আমরা পুনরায় সংস্কার করবো। তাছাড়া এসব কাজে সব টাকা এখনও শেষ হয়নি। প্রকল্পে মোট ২৩ কোটি টাকার মধ্যে এখনো ৩৮ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। যে টাকা সংস্কার বাবদ ব্যয় করা হবে।



 

Show all comments
  • Md mukul mia ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:৪৫ পিএম says : 0
    এ সংবাদটি প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ