পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এম এস এমরান কাদেরী, বোয়ালখালী থেকে : চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত পরিমাণ ডাক্তার আছে, প্রয়োজনীয় পরিমাণ বরাদ্দও আছে, সুদৃশ্য ভবন আছে, আছে আধুনিক সরঞ্জামাদি। কিন্তু নেই কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা। হাসপাতাল কম্পাউন্ডের নিয়ম থাকলেও সুসজ্জিত কোয়ার্টারে থাকেন না কোনো চিকিৎসক। অনেকের বিরুদ্ধে অন্যত্র চাকরি করে এখান থেকে বেতন নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
তবে দীর্ঘ ৮ বছরে এ হাসপাতালের তেমন কোনো তদারকি বা খবরা-খবর না নিলেও নিজের ভাইয়ের অসুস্থতার কারণে হঠাৎ সেখানে যেতে হয়েছে স্থানীয় এমপি মঈন উদ্দিন খান বাদলকে। কয়েকটা সিঁড়ি বেয়ে গন্তব্যে পৌঁছলেও ভাইয়ের চিকিৎসা সেবা যথাযথ না হওয়ায় বেঁেক বসেন তিনি। এসময় হাসপাতালের অব্যবস্থাপনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এমপির অসন্তোষের জের ধরে ২ দিনপর হাজির হয় চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। তিনিও সাংসদের সুরে অসন্তোষের কথা জানিয়ে ঘুরে চলে যান। তবে এখনো যে লাউ সে কদু রয়েই গেছে বোয়ালখালী হাসপাতাল। এর আগে ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির ৪র্থতম সভায় গিয়েছিলেন এমপি বাদল। ওই সভায় মাসে মাসে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করার নির্দেশনা দিলেও গত দু-বছরে আর দেখা মেলেনি কারো। ফলে হাসপাতালের এ করুণ হালের বলি হয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় এমপি উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউকেই কখনোই তদারকি করতে দেখা যায় না। অবহেলা ও নজরদারির অভাবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না বোয়ালখালীবাসী। সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের অবহেলা ও দুর্নীতি এখন রন্ধ্রে রন্ধ্র্রে বিরাজ করছে হাসপাতালের অভ্যন্তরে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা নুরুল ইসলাম নামের এক গরিব বৃদ্ধ রোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয় প্রশাসন নামে-বেনামে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজিসহ ধরাকে সড়াজ্ঞান করার যথেষ্ট সময় পেলেও একটি মুহূর্ত হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বা কর্মযজ্ঞ দেখার ফুরসত নেই তাদের। এখানকার এমপি বা জনপ্রতিনিধিরা বক্তব্য দিতে গিয়ে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিলেও দীর্ঘ ৮ বছরের সংসদীয় জীবনে ৩ বারও খবর নেননি লাখো মানুষের সেবাস্থল হাসপাতালের। তিনি আরো বলেন, শুনেছি হাসপাতালে দামি (ডিজিটাল) একটি এক্স-রে মেশিন এসেছে প্রায় ৬ বছর। কিন্তু এর থেকে ৬ মিনিটের জন্যও সেবা পায়নি বোয়ালখালীবাসী। এর চেয়ে দুঃখের বিষয় আর কি হতে পারে তার জিজ্ঞাসা!।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ২০১০ সালে ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দামের ১টি ৫০০ এম এম ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন বরাদ্ধ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছরে ৭ মিনিটের জন্যও এমন ডিজিটাল মেশিনের এক্স-রে সেবা পায়নি বোয়ালখালীবাসী। ফলে সরকারের দেয়া বরাদ্দ কোনো কাজে আসেনি কারো। কিন্তু বিভিন্ন ইস্যু দেখিয়ে এ মেশিন বন্ধ রেখে এখানকার অসহায় রোগীদের কাছ থেকে হাসপাতালের ডাক্তাররা বাইরের প্রাইভেট প্যাথলজির চুক্তি থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭ বছর ধরে বিভিন্ন জটিলতায় পড়ে দুই কোটি ৭০ লক্ষ টাকার অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনটি চালু না করায় নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে হাসপাতালে দীর্ঘদিন এক্স-রে মেশিন না থাকায় স্থানীয় প্রাইভেট প্যাথলজিগুলো এখানকার অধিকাংশ ডাক্তারের সাথে সমান পার্সেন্টে গোপন চুক্তির মাধ্যমে নিয়মের অতিরিক্ত পরিক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারিত হচ্ছে এখানকার লাখো মানুষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা: রুহ আফরোজ ছালমা বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে ছুটিতে আছি। সে কারণে একটু এলোমেলোতো হবেই। মাথা না থাকলে যেমন হয় আর কি। ওয়ার্কারসহ কর্মী ও অবকাঠামোগত সংকটের কারণে বর্তমানের এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে ডাক্তার-নার্সের কোনো সংকট নেই বলে জানান তিনি। এক্স-রে মেশিনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি দীর্ঘদিন ধরেই নষ্ট রয়েছে। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনটি পর্যবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জানানো হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণেও এসেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।