পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত আওয়ামী লীগদলীয় গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের নামাজে জানাজায় অংশ নিয়ে বর্বর এই হত্যাকেন্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। তারা মন্ত্রীদের মতো তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান। এছাড়া এমপিদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া।
গতকাল সোমবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মরহুম লিটনের নামাজে জানাজায় অংশ নিয়ে তারা এই দাবি জানান। নামাজে জানাজা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিটনের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শোকার্ত শেখ হাসিনা প্রথমে সরকারপ্রধান হিসেবে ও পরে দলীয় নেতাদের নিয়ে দলীয় প্রধান হিসেবে কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে তিনি নিহতের পরিবারের সদস্যদের সান্ত¦না দেন। এসময় দক্ষিণ প্লাজাজুড়ে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রেসিডেন্টের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল সারোয়ার হোসেন, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো: ফজলে রাব্বী মিয়া, হুইপদের সঙ্গে নিয়ে চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার পক্ষে বিরোধীদলীয় হুইপ মো: নূরুল ইসলাম ওমর এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, সরকাদলীয় এমপি মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, বি এম মোজাম্মেল হক এমপি ও শামীম ওসমান এমপিসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এসময় সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এমপিরা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন। অনেকেই ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনও করেছেন। কেউ কেউ নিরাপত্তা রক্ষী নিয়েছেন। কিন্তু সব সদস্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এতে এমপিরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন কি না জানাতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নিরাপত্তা নিয়ে চলছি না? মন্ত্রীরাও তো চলছেন। নিরাপত্তা সবার আগে।
এমপি লিটন হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছি না। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। আমার ঘরে ঢুকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করে পালিয়ে যাবে, তাহলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাজ কি?
হত্যাকান্ডের সঙ্গে জামায়াত-শিবির জড়িত দাবি করে ডেপুটি স্পিকার বলেন, তিনি (লিটন) ছিলেন স্পষ্টভাষী, যে কারণে জামায়াত-শিবির তাকে ভয় পেত। একসময় গোলাম আজম সুন্দরগঞ্জে জনসভা করতে চেয়েছিল, কিন্তু এমপি লিটন করতে দেয়নি। এমনকি চেষ্টা করেও গোলাম আজম সেখানে পা রাখতে পারেনি। সেখান থেকেই তার প্রতি একটা আক্রোশের শুরু। দ্রুত ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা গ্রেফতার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
নামাজে জানাজা শেষে লিটনের কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, জনপ্রতিনিধিদের তাদের নির্বাচনী এলাকায় যেতে হয়। বিভিন্নভাবে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হয়। এ জন্য জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়াও বিরোধীদলীয় সদস্য নূরুল ইসলাম সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। এসময় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এমপি লিটনের ভগ্নিপতি আনন্দ গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. আবদুল্লাহেল বারী। তিনি বলেন, জামায়াত-শিবির ও জঙ্গিগোষ্ঠী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এই মোল্লা ও উগ্রবাদীদের অস্তিত্ব মুছে ফেলতে প্রয়োজনে আনন্দ গ্রুপের সব সম্পত্তি ব্যবহার করা হবে।
নামাজে জানাজা পরিচালনা করেন জাতীয় সংসদ সচিবালয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো: নূরুল ইসলাম। নামাজে জানাজা শেষে মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। সকাল ১০টায় জানাজার জন্য মরহুম লিটনের লাশ দক্ষিণ প্লাজায় আনা হয়। জানাজা শেষে সুন্দরগঞ্জ পাঠানোর জন্য কফিন বিমানবন্দরে নেয়া হয়।
এদিকে এমপি লিটনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।