পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শফিউল আলম : চলমান শীতকাল এবার অতিবাহিত হতে পারে ‘গরমে’। পৌষ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ চলছে। এখন হাঁড় কনকনে শীত অনুভূত হওয়ার কথা। অথচ ‘স্বাভাবিক’ শীতের আমেজ নেই কোথাও। লেপ-কম্বল ও শীতবস্ত্রের ব্যবহার তেমনটি নেই। অনেক জায়গায় মানুষজন ঘামাচ্ছে। চালাতে হচ্ছে ফ্যান। শীত না থাকায় শীত-পিঠার মজাও মিলছে না। গতকাল (সোমবার) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ১০.৫, আর সর্বোচ্চ টেকনাফে ৩০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে দেশের অনেক জায়গায় মধ্যরাত থেকে সকাল অবধি কুয়াশা পড়ছে। কুয়াশা আর সন্ধ্যা-রাতের বেলায় কিছুটা হিমেল হাওয়ার কথাটা বাদ দিলে এখন যে ‘শীতকাল’ তা মেনে নেয়ার মতোই নয়! আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুদূর উত্তরের হিমশীতল অঞ্চল সাইবেরীয়া থেকে শীতল বায়ুমালা এখনও আসেনি। তাছাড়া ঊর্ধ্বাকাশের হিমেল জেটবায়ু নিচের স্থলভাগের দিকে নামছে না। এ কারণে ভরা শীতেও শীতকালের আমেজ এখনও অনুপস্থিত।
এ অবস্থায় গতকাল আবহাওয়া দপ্তর চলতি জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ) মাসে হঠাৎ করে ক’দিন মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শীত পড়তে পারে এমনটি পূর্বাভাস দিয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, চলতি জানুয়ারি মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১টি মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। দেশের অন্যত্র ১ থেকে ২টি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে সার্বিকভাবে এ মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে।
অর্থাৎ অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাস থেকে ঋতুচক্রে ‘শীতকালে’র পঞ্জিকার ছক ভেঙে অস্বাভাবিক উঁচুতে থাকা চলমান আবহাওয়ার খেয়ালি আচরণ অব্যাহত থাকতে পারে। সার্বিকভাবে ডিসেম্বর মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি ছিল। চলতি জানুয়ারি মাসে হঠাৎ করে যদি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়, তাহলে তাপমাত্রার পারদ ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। আর মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রার পারদ ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সে. এবং মৃদু শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সে. থাকতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রদানের লক্ষ্যে গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির নিয়মিত বৈঠকে চলতি জানুয়ারি মাসের উপরোক্ত পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের এ বৈঠকে প্রাপ্ত আবহাওয়া-জলবায়ুর তথ্য-উপাত্ত, ঊর্ধ্বাকাশের আবহাওয়া বিন্যাস, বায়ুম-লের বিভিন্ন স্তরের বিশ্লেষিত আবহাওয়া মানচিত্র, জলবায়ুর রিগ্রেশন ও এনালগ মডেল, বৈশ্বিক আবহাওয়া-জলবায়ুর সর্বশেষ গতি-প্রকৃতি, আবহাওয়াম-লে এল-নিনো কিংবা লানিনা অবস্থা ইত্যাদির বিশ্লেষণ করা হয়।
এ বৈঠকে দেয়া পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, জানুয়ারি মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গত ডিসেম্বর মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়। চলতি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে। কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসে দেশে দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ২ থেকে ৩ মিলিমিটার এবং গড় সূর্য কিরণকাল সাড়ে ৫ থেকে সাড়ে ৬ ঘণ্টাকাল স্থায়ী থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞ কমিটির উক্ত বৈঠকে গত ডিসেম্বর মাসের আবহাওয়া পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। এতে জানা গেছে, ডিসেম্বর মাসে সারাদেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ডিসেম্বরে পশ্চিমা লঘুচাপ দুর্বল থাকায় এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ভারদাহ’ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম না করার কারণে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। ১২ থেকে ১৪ ডিসেম্বর দেশের পশ্চিম-মধ্যাঞ্চলের উপর দিয়ে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। এ সময় গত ১৩ ডিসেম্বর ঈশ্বরদীতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯.৪ ডিগ্রি সে.। সার্বিকভাবে ডিসেম্বর মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি ছিল। এ মাসে দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা খেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়ে। বৃষ্টিপাত ছাড়া তাপমাত্রা, কুয়াশা, কৃষি আবহাওয়া এবং দেশের নদ-নদীর অবস্থা ডিসেম্বর মাসের পূর্বাভাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল বলে জানায় আবহাওয়া বিভাগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।