Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেউ খবর রাখেনি!

কর্তব্যরত অবস্থায় রেলকর্মী নিখোঁজ বেওয়ারিশ হিসাবে দাফন

| প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : কর্তব্যকাজে ট্রেনযোগে ঢাকা থেকে পাহাড়তলী যাওয়ার সময় হঠাৎ নিখোঁজ হন কমলাপুর ক্যারেজ ডিপোর কার্পেন্টার করিম বক্স (৫০)। গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে পাহাড়তলীগামী একটি বিশেষ ট্রেনের ড্যামেজ বগীর স্কট (পাহারাদার) হিসাবে তাকে পাঠানো হয়। পথিমধ্যে দুর্বৃত্তরা তাকে খুন করে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে পূবাইল রেল গেইটের কাছে ফেলে রাখে। একদিন পর রেলওয়ে পুলিশ তাকে বেওয়ারিশ হিসাবে নরসিংদী রেল স্টেশনের পাশে দাফন করে। একজন রেলকর্মী কর্তব্যপালনকালে নিখোঁজ হলেও কেউ তার খবর রাখেনি। পরে পুলিশের তোলা লাশের ছবি দেখে পরিবারের সদস্যরা করিম বক্সকে সনাক্ত করেন। মর্মান্তিক এ ঘটনা জানার পর ঢাকার রেলওয়ে ক্যারেজ ও ডিপোর কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাদের প্রশ্ন-ঐ রাতে আখাউড়াতে পৌঁছার পর ট্রেনের বগীর হিসাব নেয়া হলো কিন্তু বগীর দায়িত্বে থাকা মানুষটার খবর কেনো নেয়া হলো না। রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনী থাকার পরেও একজন কার্পেন্টারকে কেনো এতোবড় ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্বে পাঠানো হলো। রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার আড়িখোলা ও পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলার পূবাইলে সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্য বিচরণ বহুদিন ধরেই। এ অংশে তেলবাহী ট্রেন দাঁড় করিয়ে সন্ত্রাসীরা ট্রেনের চালক ও গার্ডকে জিম্মি করে প্রায়ই শত শত লিটার তেল লুট করে নিয়ে যায়। অনেকের ধারণা ঘটনার রাতেও ওই সব সন্ত্রাসীরাই করিম বক্সের মোবাইল ফোনসহ সাথে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে তাকে খুন করে রেল লাইনের পাশে ফেলে রাখে। এর আগে গত বছরের ৩০ নভেম্বর রাতে কমলাপুর থেকে চট্টগ্রামগামী কন্টেইনার ট্রেন (চট্টগ্রাম-৮১০) নিয়ে আড়িখোলা গিয়ে থামলে সন্ত্রাসীরা ওই ট্রেনের চালক হেমায়েত হোসেনকে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে  ইঞ্জিন থেকে ২৮০ লিটার তেল লুট করে নিয়ে যায়। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কন্ট্রোল সেকশন, রেলওয়ে পুলিশ ও স্টেশন মাস্টারদের যোগসাজশ এবং থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে আড়িখোলা ও পূবাইল রেলওয়ে স্টেশন ও এর আশপাশের এলাকা থেকে তেল চুরির ঘটনা ঘটছে। ট্রেনের চোরাই তেলকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ চক্রটি কালীগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া সড়কসহ কালীগঞ্জের আনাচে-কানাচে বেশ কিছু খোলা তেলের দোকান গড়ে তুলেছে। আলাপকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে চলাচলকারী একাধিক ট্রেনের চালক ও গার্ড বলেছেন, রাতের ট্রেনে তারা মোটেও নিরাপদ নন। বিশেষ করে টঙ্গী পার হওয়ার পর কখন যে ট্রেন থামিয়ে দেয়া হয় সেজন্য আতঙ্কে থাকেন। সন্ত্রাসীরা শিকল ট্রেনে অথবা কন্ট্রোলের সাথে যোগসাজশ করে রাতের অন্ধকারে আউটার সিগনালে ট্রেন দাঁড় করায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ