পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রামীণ ব্যাংককে নতুন ভূমিকায় চান মুহিত
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : নতুন বছরে বিনিয়োগই বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ২০১৭ সালের প্রথম দিন রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংকিং বিভাগের অনুষ্ঠানে এই কথা জানান তিনি। এসময় গ্রামীণ ব্যাংককে নতুন ভূমিকায় পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ শুরু করার কথা জানান মুহিত।
নতুন বছরের প্রধান চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, চ্যালেঞ্জ এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ। আমরা ২০১৬ সালে একটা ভালো বছর পার করেছি। আশা করছি, ২০১৭ সালও একইভাবে ভালো কাটবে।
‘আমাদের যে ধরনের পরিকল্পনা প্রস্তুতি আছে, তাতে আমরা এগিয়ে যাবো। আমার মনে হয়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার জন্য আমরা যে সব হিসাব করেছি, সেটা পেরিয়ে আমরা অনেক দূর যেতে পারবো।’
দারিদ্র্য বিমোচন, প্রবৃদ্ধি, রিজার্ভ ও মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি থাকলেও ২০১৬ সালে বেসরকারি খাতে আশানুরূপ বিনিয়োগ টানতে পারেনি সরকার।
অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকারি বিনিয়োগ বাড়লে বেসরকারি খাতেও বিনিয়োগে গতি আসার কথা। কিন্তু গত পাঁচ বছর সরকারি বিনিয়োগ ব্যাপক বাড়লেও বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ২২ শতাংশের ঘরেই আটকে আছে; আশানুরূপ বাড়ছে না বিদেশি বিনিয়োাগও।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিল্পে গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগে বাধার কারণে অনেকে বিনিয়োগ প্রকল্প হাতে নিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেছেন। তার সঙ্গে রয়েছে অনুন্নত অবকাঠামো।
বেসরকারি খাতে পিছিয়ে থাকলেও সরকারি খাতে বেশ কিছু বড় বিনিয়োগ রয়েছে ২০১৬ সালে। বছর শেষে দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ এরই মধ্যে ৪০ ভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমানের নেতৃত্বে বিভাগের কর্মকর্তারা মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। অনুষ্ঠানে কর্মকর্তারা মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে খ্রিস্টীয় নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। মন্ত্রী কর্মকর্তাদের আনা দুটি কেকও কাটেন।
গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “ইউনূস সাহেবের বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতামূলক কাজকর্ম থাকা সত্ত্বেও আমরা গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে ভাবছি। আমরা অবশ্যই এটাকে পুনরুজ্জীবিত করবো। কিভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য একটা নতুন রোল সৃষ্টি করা যায় তা নিয়ে কাজ করার জন্য আমি ইতোমধ্যে কয়েকজনকে দায়িত্ব দিয়েছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সাবেক শিক্ষক ড. ইউনূস ৮০-এর দশকে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। এই দায়িত্ব পালনের মধ্যেই ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পান তিনি।
মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালের ২ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ইউনূসকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়েও হেরে যান তিনি। তারপর থেকে সরকারের সঙ্গে নোবেলজয়ী এই বাংলাদেশির সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। পাল্টাপাল্টি বক্তব্যও এসেছে বিভিন্ন সময়।
অপসারণের পরও ইউনূসের কারণেই গ্রামীণ ব্যাংকের বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছিল না বলে অর্থমন্ত্রী অভিযোগ করে আসছিলেন। অপসারণের পরও পাঁচ বছর রাজধানীর মিরপুরের গ্রামীণ ব্যাংক কমপ্লেক্সেই ছিলেন ইউনূস। সম্প্রতি তিনি ওই বাসা ছাড়েন।
ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাকালীন সময়েও অর্থমন্ত্রীর পদে ছিলেন মুহিত। এই ব্যাংকটির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা সরকারের হাতে।
মুহিত বলেন, ‘আমরা বহুদিন এই সম্পর্কে কোনো কিছু করি নাই। এখন ঠিক করেছি, না এটাকে এভাবে ছেড়ে দেয়া যায় না। এটাকে এখন মানুষ করা দরকার।’
ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের এই ব্যাংকে এখন সাপ্তাহিক কিস্তি আদায় তুলে দেয়ার পক্ষপাতি অর্থমন্ত্রী। তার মতে, এক সময় প্রয়োজন থাকলেও এখন তার কোনো প্রয়োজন নেই।
‘এখন যেটা খেলাপি হয়, সেটা প্রায় ১০ শতাংশ বা তারও কম। ৮২ সালে আমি যখন প্রথম মন্ত্রী হই, তখন এটা ৪০ শতাংশের বেশি ছিল। যে জায়গায় এখন এটা ৮-৯-১০ শতাংশ হয়। আরও কমানো উচিৎ।’
মুহিত বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের দুটি উদ্দেশ্য ছিলÑ গরীবদের ঋণ পাওয়া অধিকার, ঋণ পরিশোধের অভ্যাস গড়ে তোলা। এই দুটাই ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত।
‘দেশে এখন গ্রামীণ ব্যাংকের মতো বহু কর্মসূচি রয়েছে। অসংখ্য ক্ষুদ্র্র ঋণ প্রকল্প আছে। এটার অগ্রদূত হচ্ছে গ্রামীণ ব্যাংক, একে এখন নতুন করে সাজাতে হবে। এটা করার ইচ্ছা আমাদের।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।