Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ইসি গঠনের আশাবাদ প্রেসিডেন্টের

| প্রকাশের সময় : ১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : একটি নিরপেক্ষ, দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট মো: আবদুল হামিদ। নতুন ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার চলমান সংলাপের প্রসঙ্গ টেনে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তাব ও মতামত তুলে ধরছে। আশা করি এসব মতামত ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে’।
গতকাল শেরেবাংলা নগরে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইসি গঠনের উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ‘আপনারা জানেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ অচিরেই সমাপ্ত হচ্ছে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আমি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু করেছি। নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইসিকে ‘সজাগ’ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে নির্বাচন। তবে গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশের জন্য শুধু নির্বাচন আয়োজনই যথেষ্ট নয়। গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করতে হলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার পাশাপাশি প্রক্রিয়াগত পরিবর্তনেরও প্রয়োজন। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে সজাগ থাকতে হবে’।
প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ দেশব্যাপী জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন করায় আমি কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই। জনগণ সবসময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে এবং গণতন্ত্রের জন্যও এটি অপরিহার্য’।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি সকল রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, সমর্থকসহ সাধারণ জনগণের সদিচ্ছা ও সহযোগিতা অত্যাবশ্যক। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সকল মহলের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তা দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমি মনে করি, আগামী যে কোনো নির্বাচনের জন্য এই নির্বাচন একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে।’
গণতন্ত্রে নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করে কেবল গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা ও অগ্রযাত্রা রক্ষা করে না, জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিতেও বিশাল ভূমিকা পালন করে। কারণ নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে, স্বৈরশাসনের উত্থান ঘটে, জাতির আশা-আকাক্সক্ষা ভূলুণ্ঠিত হয়। দেশে আজ যে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, দেশ ও জনগণের স্বার্থে তা সম্মিলিতভাবে অব্যাহত রাখতে হবে।’
নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ, নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারক, ইআরসি’র জাতীয় প্রকল্প পরিচালক এস এম আশফাক হোসেন প্রমুখ।
প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ নতুন ভবনের ফলক উন্মোচনের পর ভবনের সামনে একটি ‘লালপাতা’ গাছের চারা রোপণ করেন। পরে তিনি ভবনের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশন বিদায়ের আগেই ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো।
প্রসঙ্গত, পশ্চিম আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাশে দুই একর ৩৬ শতাংশ জমিতে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দুই লাখ ৫৮ হাজার ৭৭ বর্গফুট বিশিষ্ট ভবনটিতে সোলার এনার্জি এবং রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং এর ব্যবস্থা রয়েছে।
১১ তলাবিশিষ্ট এ ভবনটির চত্বরে ভাস্কর মৃণাল হকের তৈরি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের দুটি ভাস্কর্য রয়েছে। দু’ভাগে বিভক্ত ভবনটির পূর্ব অংশে কমিশন অফিস এবং পশ্চিম অংশে ইসি সচিবালয় মাঝখানে থাকছে সুদৃশ্য ফোয়ারা। আধুনিক রেফারেন্স লাইব্রেরি, মিডিয়া সেন্টার, কনফারেন্স কক্ষ, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় সার্ভার স্টেশন ও ন্যাশনাল আইডি উইংও থাকছে এ ভবনে।
বর্তমানে শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশন চত্বরের ৫ ও ৬ নম্বর ব্লকে ইসি ও ইসি সচিবালয়ের অফিস রয়েছে। জেলা নির্বাচন, থানা নির্বাচন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত উইংয়ের কাজ ভাড়া বাড়িতে চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ