পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৯৮ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে। ২০১৬ সালকে হিন্দু নির্যাতনের বছর হিসেবে বর্ণনা করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
সংগঠনটির পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছর হুমকি দেয়া হয়েছে এক হাজার ৯ জন হিন্দুকে। হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ১৮ জনকে। ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৬টি। নিখোঁজ রয়েছেন ২২ জন। প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে ২০৯টি। ৩৬৬টি মন্দিরে পূজা বন্ধ করা ও ৩৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি বছর ১৫ হাজার ৫৪টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর-২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশে বসবাসরত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের চিত্র প্রকাশ করা হয়। লিখিতভাবে বাংলাদেশে বসবাসরত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের এ চিত্র তুলে ধরেন সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি সুকৃতি কুমার ম-ল। তিনি বলেন, ২০১৬ সাল এদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ছিল এক নির্যাতনের বছর।
কারণ এই বছর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘু নির্য়াতন হয়েছে। যার কারণে বহু হিন্দু পরিবার দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে এ বছর। অনেকে এই বছরকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বছর হিসেবে অভিহিত করেছেন। সম্পত্তি দখলের ঘটনা ঘটেছে ৮৬টি। এর মধ্যে ভূমি দখল ৬১টি, ঘরবাড়ি দখল পাঁচটি এবং দখলের তৎপরতার ঘটনা ঘটেছে ২০টি। উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে ২১০টি, উচ্ছেদের তৎপরতার ঘটনা ঘটেছে ৩২৬টি, উচ্ছেদের হুমকি তিন হাজার ৪৩১টি, দেশ ত্যাগের হুমকি ৭১১টি। মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, চুরি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১৪১টি। বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, চুরি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৩২৮টি।
প্রতিমা ভাঙচুর ২০৯টি, প্রতিমা চুরি ২২টি, মন্দিরে পূজা বন্ধ করা হয়েছে ৩৬৬টি, অপহরণ ৩৮টি, অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে সাতটি। গণধর্ষণ হয়েছে চারটি। জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত বা ধর্মান্তকরণের চেষ্টা এক হাজার ২৫১টি।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে ধর্ষণ, হত্যা, প্রতিমা ভাঙচুরসহ ৩০টি ক্যাটাগরিতে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরা হয়। এতে আরো জানানো হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৩৫৭ জনকে জখম, আটজনকে কারাগারে আটক, ৯৯ জনকে চাঁদাবাজি-মারধর ও আটকে রেখে নির্যাতন, ১৬৫টি লুটপাটের ঘটনা ও বসতঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ১৩টি হামলা হয়েছে।
চাকরির নামে ধর্ষণ, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ, মা- মেয়েকে নৌকায় তুলে একসঙ্গে ধর্ষণ, হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, মাঠ-মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দিরের রথের জায়গা দখল করা হয়েছে। চাকরির নামে ধর্ষণ, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ, হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, মঠ-মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর, ধামরাইয়ে মাধব মন্দিরের রথের জায়গা দখল, দিনাজপুরের পুজা ও ধর্ষণ, সিলেটে ইসকন মন্দিরে হামলা, চট্টগ্রামে চকবাজারে শিব মন্দির ভাঙচুরও দখল, প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর যে তা-ব চালিয়েছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়।
সাংবাদিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ড. প্রভাস চন্দ্র রায়। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আনন্দ কুমার বিশ্বাস, প্রধান সমন্বয়কারী শ্যামল কুমার রায়, পলাশ কান্তি দে মুখপাত্র, সহ-সভাপতি ডিসি রায়, সুশীল মাহাতো, বাদল দত্ত, যুগ্ম-মহাসচিব সমীর সরকার, অখিল ম-ল, ফণিভূষণ হালদার , ডা: নিমাই চন্দ্র আয়্য, কেনেডি ঘোষ, ব্রিটিশ কর্মকার রামকৃষ্ণ দাস, উজ্জল কুমার পাল, জগন্নাথ হালদার হিন্দু মহিলা জোটের সভাপতি মীনা দেবী ছেত্রী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।