Inqilab Logo

শনিবার, ২২ জুন ২০২৪, ০৮ আষাঢ় ১৪৩১, ১৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মন্ত্রী-এমপিদের বেতন বাড়লে গার্মেন্টস শ্রমিকদের কেন নয় : মেনন

| প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপিদের বেতন বাড়লে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বাড়বে না কেন? মন্ত্রী-এমপিদের বেতন বাড়লে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর এই প্রশ্নটি আসতে পারে। তবে, কতটা বাড়বে সেটা আলোচনার বিষয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গতকাল শুক্রবার দুপুরে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ১৫তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন পোশাক কারখানার মালিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কারখানা বন্ধ করে দিয়ে মনে করেছেন আপনাদের জিত হয়েছে, হয় নাই। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে আপনারা মনে করেছিলেন শ্রমিকদের চিরদিনের জন্য স্তব্ধ করে দেবেন। আপনারা শ্রমিকদের সঙ্গে পারেন। কই বায়ারদের সঙ্গে তো আপনারা পারেন না? বায়াররা যে আপনাদের দাম দেয় না, সেখানে তো কথা বলেন না আপনারা?
তিনি আরও বলেন, আপনাদের সংগঠন আছে, বিশাল বিল্ডিং রয়েছে। সেখানে আনন্দ-উপভোগের সমস্ত কিছু রয়েছে। কিন্তু শ্রমিক দমন ছাড়া, শ্রমিকদের স্বার্থের উল্টোপথে হাঁটা ছাড়া কিছুই করেন না আপনারা। দুর্ভাগ্যজনক যে, এই দেশে শ্রমিকদের আপনারা আপনাদের ঘরের দাস মনে করেন।
সাম্প্রতিক আশুলিয়ায় শ্রমিক আন্দোলনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত শ্রমিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, যদি আমরা (শ্রমিক) ঐকবদ্ধ থাকি, আমাদের নিয়ত সঠিক থাকে এবং সঠিকভাবে চলি তাহলে শ্রমিকদের অধিকার আদায় নিশ্চয়ই হবে। শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধির দাবি ও ট্রেড ইউনিয়নের দাবি পূর্ণ হবে।
তিনি বলেন, অনেকেই বলে থাকেন, শ্রমিকরা বাড়াবাড়ি করছেন। কিন্তু কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়ার জন্য বাড়াবাড়ি করেছেন কারখানা মালিকরা। শ্রমিকরা মুচলেকা দেননি, দেবেনও না।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের একটা ধারা আছে, তা বুঝতে হবে। নিয়ম মেনে, আইন মেনে আন্দোলন করলে দাবি অবশ্যই আদায় হবে। এজন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ১৯৮৪ সালে বেতন ছিল ৫৭০ টাকা। ধাপে ধাপে তা এখন অনেক বেড়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে কারখানা মালিকদের সঙ্গে দর কষাকষি করেছেন। আশা করি, ২০১৮ সালের প্রথম দিকেই ওয়েজ বোর্ড হবে। শ্রমিক ছাড়া গার্মেন্টস চলবে না। তেমনি মালিক না থাকলে গার্মেন্টস হবে না। তবে অবশ্যই শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আইন ও বিধি-বিধানের বাইরে গিয়ে কোনো আন্দোলন করলে তা সফল হয় না। তাই বেতন বাড়ানোর দাবিতেও আন্দোলন, আইন ও বিধি-বিধানের মধ্যে থেকেই করতে হবে। আন্দোলনের নামে ভাঙচুর করা যাবে না।
ফ্রান্সের বৃহৎ শ্রমিক সংগঠন সিজিটি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ফেবিয়েন ক্রু বলেন, শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব অনেক। কিন্তু তারা তাদের দায়িত্বগুলো পালন করছে না। শ্রমিকের শ্রমের মূল্যের চেয়ে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য অনেক বেশি। কিন্তু তার সবটুকুই নিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানি। তাই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আপনাদের সংগ্রাম, আমাদেরও সংগ্রাম।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আমিরুল হক আমিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক নাইমুল হাসান জুয়েল, সদস্য ড. ওয়াজেদুল ইসলাম প্রমুখ।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হাজির হতে থাকেন জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠান চলাকালে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ