পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোভিড-১৯ আঘাত হানার আগে দশ যাবৎ বছর বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ঘটেছিল, যা চীনের ৮শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় খুব কম নয়। বাজার মূল্যে বাংলাশের জিডিপি মাথাপিছু প্রায় ২ হাজার ৫শ’, যা ভারতের চেয়ে বেশি। ২০২৬ সালে এটির জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে আসার কথা। ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার উচ্চাকাক্সক্ষা প্রশংসনীয় হওয়া উচিত। তবে সেই সম্ভাবনাগুলো এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পীড়িত করে এমন ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয়, স্বল্প মূলধন এবং অর্থপ্রদানে ভারসাম্যের চাপ সহ অনেক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ জানুয়ারিতে আইএমএফ থেকে ৪হাজার ৭শ’ কোটি ডলার ঋণ নিশ্চিত করতে বাধ্য করা হয়েছে। যদিও দেশের অর্থনীতি পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো সংকটাপন্ন নয়, তবে এর উচ্চতর মানদণ্ডে থাকা উচিত। বাংলাদেশের অগ্রগতি ধরে রাখতে হলে তার অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে হবে। তবে, এর সংকটগুলো কাঠামোগত এবং রাজনৈতিক দুর্বলতাগুলোকে উন্মোচিত করেছে, যা অবনতির গুরুতর ঝুঁকি নির্দেশ করে।
বাংলাদেশ পোশাক শিল্পের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল, যা তার মোট পণ্য রপ্তানির প্রায় ৮৫শতাংশ। কিন্তু, খাতটি শীঘ্রই বাংলাদেশের স্বল্প-উন্নত অবস্থার সাথে যুক্ত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধাগুলো হারাতে পারে। এমনকি, কম্বোডিয়ার মতো স্বল্প মূল্যের উৎপাদকদের সাথে এর প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এবং ওষুধ ও ইলেকট্রনিক্সের মতো উচ্চ-মূল্য-সংযোজিত শিল্পে বৈচিত্র্য আনার জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টা দুর্নীতি, লাল ফিতা, ঋণ প্রাপ্তিতে অসুবিধা এবং একটি লাগাতার মেধার অবমূল্যায়ন দ্বারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর একটি সাধারণ কারণ হল, ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতিগ্রস্ত ও দমনমূলক শাসন।
বাংলাদেশকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য তার নিহত পিতা দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ করার প্রয়াস হিসাবে অর্থনীতির প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার করা হয়েছে। চাকরি, অনুমোদন এবং সরকারি চুক্তি উপলব্ধ করার ক্ষমতা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মাধ্যমে পেতে হয়। অনেক দেশীয় ব্যাংকের কার্যক্রম ক্ষমতাসীনদের সাথে সংযুক্ত ঋণ সরবরাহের জন্য পরিচালিত হয়। বিগত কয়েক বছরে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করেছে। ব্যবসা বানিজ্যের মাণদণ্ডে দেশের অবস্থা দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে খারাপ।
আগামী বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিপর্যস্ত বিরোধীরা রাজপথে নামার কারণে সহিংসতার ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ৭৫ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রীর শক্তিশালী সরকারের জন্য প্রতিশ্রুতি অযৌক্তিক নয়। ২৯টি সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা সহ বাংলাদেশ অস্থিতিশীলতায় ভুগছে। তবুও, তিনি বহুত্ববাদ ও বিতর্কের গভীর ঐতিহ্যবাহী সমাজে স্বৈরাচারকে এর সীমায় সর্বোচ্চ সীমায় নিয়ে গেছেন। তার দলের দখল থেকে মুক্ত করা হল একটি আরও টেকসই শাসক সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পরবর্তী পদক্ষেপ, এবং এটি যোগ করা যেতে পারে যে, তার পরিবারের উত্তরাধিকার এবং সম্ভবত এর সুরক্ষার জন্যও।
দেশের ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধির ভিত্তি হতে পারে, এমন স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুদ্ধার করাও অপরিহার্য, যা এখন উন্নয়ন করার চেয়েও সৃষ্টি করা কঠিন হতে পারে। কিন্তু, পশ্চিমা সরকারগুলো চাপ প্রয়োগ করতে নারাজ। তারা পশ্চিমে শেখ হাসিনার প্রভাব এবং বাংলাদেশে চীনের ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগের বিষয়ে সতর্ক। দেশের উচ্চবিত্ত সদস্যরা ব্যবসার সুযোগ থেকে শুরু করে তাদের সন্তানদের শিক্ষিত করা পর্যন্ত পশ্চিমের সাথে তার সম্পর্ককে পুরস্কৃত করে এবং বাংলাদেশ অতীতের তুলনায় বিদেশী পুঁজির উপর এখন অনেক বেশি নির্ভরশীল।
আবহাওয়া উষ্ণ হওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশের পরিবেশগত হুমকি দেশের অগ্রগতি ছাড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক বলছে যে, প্রাক-শিল্প স্তর পার করে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভবানার সাথে বাংলাদেশ ১ কোটি ৩০ লাখ আবহাওয়া অভিবাসী দেখতে পাবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে এর এক তৃতীয়াংশ কৃষি উৎপাদন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এই ধরনের বিপর্যয় একটি তীব্র সংবেদনশীল অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। সেই ঝুঁকি কমাতে গেলে একদলীয় নিপীড়নমূলক রাজনীতিতে নিমজ্জিত হওয়ার সামর্থ্য নেই বাংলাদেশের। রাজনৈতিকভাবে এটি আরও দ্রুত ধনী হওয়া দরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।