পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি কেজি ২২৫ থেকে ২৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে প্রায় ১০০ টাকার মতো বেড়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এতটা বাড়তি দামে ব্রয়লার মুরগি কখনো বিক্রি হয়নি। বেড়েছে সোনালি মুরগির দামও। দেশি মুরগির দাম সাধারণের নাগালের বাইরে গেছে অনেক আগেই। বাজারে অন্যান্য গোশতের দামও বাড়তি। মুরগির দাম বৃদ্ধির কারণে এখন পরিবর্তন এসেছে গোশত কেনায়। যে ব্যক্তি এক সময় একটি অথবা একের অধিক মুরগি কিনতেন তিনি এখন ভাগে মুরগি কিনছেন।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা দুইজন মিলে একটি মুরগি কিনে ভাগ করে নিচ্ছেন। কোনো কোনো এলাকায় এখন দেখা যায় মুরগির গোশত টুকরা করে ভাগ করে বিক্রি করা হচ্ছে। পাঁচশত টাকা নিয়ে বাজারে এসেছিলেন শাকিলা বেগম, ওই টাকায় চাল, তেল আর সবজি কিনতেই শেষ ফলে কোন ধরণের মাছ-গোশত না কিনেই ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। অনেকটা মন খারাপ করেই বললেন-১৮০ টাকা করে তেলাপিয়া মাছের কেজি, আমার বাসায় ৫ জন সদস্য। এক কেজি মাছ দিয়ে দুইটা দিনই যদি না খেতে পাই তাহলে কীভাবে হবে? তাই মাছ গোশত না কিনেই চলে যাচ্ছি রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার মনির মিয়া বাজারে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। এই বাজারের বেশিভাগ ক্রেতা নিম্ন আয়ের মানুষ। ব্রয়লার মুরগির বাড়তি দামের কারণে এই বাজারের অনেক ক্রেতা আস্ত একটি মুরগি কেনার সামর্থ্য হারিয়েছেন। ফলে একটি মুরগি বেশ কয়েকজন ক্রেতা মিলে ভাগ করে নিচ্ছেন।
মুরগি বিক্রেতা মোহাম্মদ শরীফ জানান, এই বাজারে আগে থেকেই তারা মুরগি ভাগে বিক্রি করতেন যা খাসি মুরগি নামে পরিচিত। তবে এইভাবে ভাগে মুরগি কেনার লোক ছিলো অনেক কম। গেলো কয়েক সপ্তাহে ভাগে মুরগি কেনার ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে।
জানা যায়, ব্রয়লার মুরগি গত ডিসেম্বরে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ২৫০ টাকা। কিছুদিন যেতে না যেতেই প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকা এবং লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা। দাম বেড়েছে ডিমেরও। বাজারে সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মতো। গতকাল সেগুনবাগিচা ও মালিবাগ বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকায়। বাজারে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায়। গত এক মাসে দেশি মুরগির দামে অবশ্য বড় কোনো পার্থক্য নেই। এদিকে ডিমের দামও বাড়তি। ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়।
উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও অনেক খামার বন্ধ হওয়ায় বাজারে ডিম ও মুরগির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাতে একশ্রেণির ব্যবসায়ী দাম বাড়াচ্ছেন উল্লেখ করে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, খাদ্য ও বাচ্চার মূল্যবৃদ্ধির ফলে মুরগির দাম একটু বাড়তে পারে। তবে এখনকার দাম মাত্রাতিরিক্ত। এত বেশি দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হোক, সেটি আমরাও চাই না। কারণ, প্রান্তিক খামারিরা বাড়তি দাম পাচ্ছেন না।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী দেশে প্রতিবছর ফার্মের মুরগির চাষ হয় ৩১ কোটি ১৮ লাখ। গত কয়েক বছরে উৎপাদন ক্রমে বেড়েছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাজার চাহিদার সঙ্গে উৎপাদন বাড়লেও কাঁচাবাজারের মতো ডিম ও মুরগির বাজারেও সময়ে সময়ে অস্থিরতা দেখা দেয়।
ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, মুরগির খাবার ফিডের দাম ও পরিবহন খরচ বেড়েছে।
ফিড ব্যবসায়িরা বলছেন, যে হারে মুরগির দাম বেড়েছে সে হারে কিন্তু ফিডের দাম বাড়েনি। ব্যবসায়িদের হিসেবে পোল্ট্রি ফিডের যে দাম বেড়েছে তা ১ শতাংশেরও কম, তবে মুরগির দাম বেড়েছে ৭১ শতাংশের বেশি। ফিডের দামের চেয়ে মুরগির দাম ৭১ গুণ বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, আমাদের বেশি দামে খামারিদের কাছ থেকে কিনতে হয়। তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।