পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদ- বহাল থাকা দুই আসামিসহ দ-িত তিনজনের রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা হলেন, অধ্যাপক তাহেরের সাবেক ছাত্র ও বিভাগীয় সহকর্মী মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও তাহেরের বাসভবনের তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া অপর দুই আসামি আব্দুস সালাম ও নাজমুলের যাবজ্জীবন কারাদ- বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করতে কোনো বাধা থাকলো না বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিনউদ্দিন। দ-িতদের সামনে এখন মহামান্য প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হলে কার্যকর হতে পারে মৃত্যুদ-।
গতকাল রায় ঘোষণাকালে অধ্যাপক এস তাহেরের স্ত্রী সুলতানা আহমেদ ও তার মেয়ে অ্যাডভোকেট শেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আসামিদের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আদেশের জন্য ২ মার্চ ধার্য করেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় আদেশ দিলেন সুপ্রিম কোর্ট।
শিক্ষক তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদ- ও দু’জনের যাবজ্জীবন কারাদ- বহাল রেখে গত বছরের ৫ এপ্রিল রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে তাহেরের একসময়ের ছাত্র, পরে বিভাগীয় সহকর্মী মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও তাহেরের বাসভবনের তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদ- বহাল রাখা হয়। সালাম ও নাজমুলের যাবজ্জীবন কারাদ- হয়।
মৃত্যুদ- বহালের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর এবং যাবজ্জীবন সাজা পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবদুস সালাম পৃথক আবেদন (রিভিউ) করেন। আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট শুনানির জন্য বিষয়টি আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত ২০০৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়ার্টারের বাসার বাইরের ম্যানহোলে তাহেরের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তাহেরের ছেলে মতিহার থানায় মামলা করেন। মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে চারজনকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়। দু’জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদ- অনুমোদনের জন্য ২০০৮ সালে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদ- অনুমোদন ) হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে দ-াদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল করেন। ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল এ হত্যা মামলায় রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদ- বহাল রাখা দুই আসামি হলেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
দ- কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ পাওয়া দু’জন হলেন মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালাম।
পরে আসামিরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল আবেদন করেন। পাশাপাশি যাবজ্জীবন দ-িত দুই আসামির দ-বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে সরকারপক্ষ। শুনানি শেষে গত বছরের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় বহাল রাখেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়। এরপর আসামিরা রিভিউ করেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রিভিউর ওপর শুনানি শুরু হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, আসামিদের স্বীকারোক্তি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, হত্যার ষড়যন্ত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন। শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হতে ড. তাহেরকে এ পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেন তিনি। তার ধারণা ছিল যে, তাহের বেঁচে থাকলে অধ্যাপক হিসেবে তার পদোন্নতি পাওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে জাহাঙ্গীর আলম এবং আব্দুস সালাম ও নাজমুল আর্থিক সুবিধা পেতে তাহেরকে হত্যার জন্য মহিউদ্দিনের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন।
এরপর একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দু’জনকে খালাস দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।