Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ওএমএসের চাল-আটা বিক্রির নির্দেশনা

৪৪ দেশে দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা পাবেন বাংলাদেশিরা কাতারে নিয়োগ পাবেন ১১২৯ সেনাসদস্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

অনিয়ম রোধে কার্ডের মাধ্যমে ওএমএসের (খোলা বাজারে বিক্রি) চাল ও আটা বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো.মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। সরকারের তরফ থেকে আমরা ওএমএস যেটি করি সেটি চলমান আছে। কিন্তু এটার ব্যবস্থাপনার কিছু ঘাটতি সরকারের নজরে এসেছে। কাজটা করতে গিয়ে এ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই। তিনি বলেন, এটি কেবিনেটে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন এ ব্যবস্থাপনা ঘাটতির উন্নতি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন এক কোটি পরিবারকে টিসিবির কার্ডের মাধ্যমে যেভাবে সহযোগিতা করা হয়, ওএমএসটাও সেভাবে কার্ডের মাধ্যমে দেওয়া। যেন লোকজনকে অহেতুক দীর্ঘমেয়াদি ভিড়ে না থাকতে হয়। তাদের মধ্যে যেন একটা শৃঙ্খলা থাকে। সেজন্য কার্ডের মাধ্যমে এটা দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এখন এ ব্যাপারে বাকি কাজটুকু আমরা করবো। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্ডের মাধ্যমে ওএমএসের চাল-আটা বিক্রি পরিচালনার জন্য বলেছেন। যেন পরিচালনার ঘাটতি না থাকে। কার্ড কীভাবে হবে, কারা পাবে- জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, সেই অংশটুকু আমরা এখন মন্ত্রণালয়ের (খাদ্য মন্ত্রণালয়) সঙ্গে বসে ঠিক করবো।

অব্যবস্থাপনার ধরন বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মাহবুব হোসেন বলেন, নানারকম অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার কথা হয়তো প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেছে, তার নজরে এসেছে। এজন্য উনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। বর্তমানে সরকার ঢাকাসহ সারাদেশে ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের কাছে চাল ও আটা বিক্রি করছে। একজন সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ও ৩ কেজি আটা কিনতে পারেন। প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা ও আটা প্রতি কেজি ২৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য সরকারের খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ওএমএসের বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে সুলভ মূল্যে চাল ও আটা বিক্রি করা হচ্ছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল, বলছেন ভোক্তারা। এছাড়া ওএমএসের চাল ও আটা পেতে ক্রেতাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পরও অনেককে চাল ও আটা না পেয়ে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে। ওএমএস পণ্যের ক্রেতারা বলছেন, তারা প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা দরে সর্বোচ্চ ৫ কেজি কিনতে পারেন। তাতে তাদের ব্যয় হয় ১৫০ টাকা। অথচ বাজারে একই পরিমাণ চালের দাম ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা। তারচেয়েও বেশি সাশ্রয় হচ্ছে আটায়। কারণ, প্রতি কেজি ওএমএসের আটার দাম ২৪ টাকা, যা বাজারে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। ফলে ওএমএসের ৫ কেজি আটায় তাদের সাশ্রয় হয় ২০০ টাকারও বেশি। বর্তমান ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে ওএমএসের চাল ও আটার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষের অপেক্ষা নতুন নয়। এসব ডিলারের দোকানের সামনে বিশৃঙ্খলাও এখন নিত্যদিনের চিত্র। বিশেষত বাজারে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে এসব পণ্যের চাহিদা তুঙ্গে। কিন্তু বরাদ্দ কম থাকায় নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সরকারের ভর্তুকি দামে চাল-আটা বিক্রির উদ্যোগে খুব বেশি সুফল মিলছে না। এক্ষেত্রে পণ্যের বরাদ্দ বাড়ানোর বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষ ও ডিলাররা বলছেন, ঢাকার ৭০টি স্থানে বিক্রি করা হয় ওএমএসের পণ্য। তবে নিম্নবিত্ত ও বস্তি এলাকায় ওএমএসের ট্রাকে পণ্য বিক্রির পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। এখন ওএমএসের ট্রাকের সামনে মানুষের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। বরাদ্দ কম থাকায় পণ্য কিনতে না পেরে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ খালি হাতে ঘরে ফিরছেন।

৪৪ দেশে দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা পাবেন বাংলাদেশিরা॥ মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, আরও ৪৪টি দেশে দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা পাবেন বাংলাদেশিরা। এজন্য এসব দেশ যুক্ত করে বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে এসআরও জারির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, এর আগে ৫৭টি দেশে বাংলাদেশিদের দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা ছিল। নতুন করে ৪৪টি দেশ যুক্ত হওয়ায় এখন মোট ১০১টি দেশের নাগরিকত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশিরা দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা পাবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক যদি বিদেশে কোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে, তাহলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চলমান রাখতে পারবে। কোন কোন দেশের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে সেটা এসআরওর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। আগে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ মোট ৫৭টি দেশ ছিলো। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর অন্য অনেক দেশে বাংলাদেশের নাগরিকরা গিয়েছেন। তারা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চলমান রাখতে চান। সেটা বিবেচনায় নিয়ে আরও ৪৪টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আগের ৫৭টি দেশের সঙ্গে নতুন করে ৪৪টি দেশ অন্তর্ভুক্ত করে মোট ১০১টি দেশ। সেটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন এই ১০১টি দেশে বাংলাদেশের নাগরিকরা চাইলে দ্বৈত নাগরিকত্ব নিতে পারবেন। নতুন ৪৪ টি দেশের মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশের ১৯টি দেশ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, মিশর, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, আলজেরিয়া, সুদান, মরক্কো, ঘানা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তিউনিসিয়া, সিয়েরা লিয়ন, লিবিয়া, কঙ্গো, লাইবেরিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ইরিত্রিয়া, গাম্বিয়া, বতসোয়ানা ও মরিশাস। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ১২টি দেশের মধ্েয রয়েছে, ব্রাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, সুরিনাম, আর্জেন্টিনা, পেরু, ইকুয়েডর, চিলি, উরুগুয়ে ও গ্যায়ানা। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের ১২টি দেশের মধ্েয রয়েছে, কিউবা, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, হাইতি, বাহামা, জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, ডমিনিকা, সেন্ট লুসিয়া, বার্বাডোস, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস ও নেভিস এবং ওশেনিয়া মহাদেশের ফিজিসহ মোট ৪৪টি দেশকে এসআরওতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, কাতারে নিয়োগ পাবেন বাংলাদেশের এক হাজার ১২৯ জন সেনাসদস্য। এ সংক্রান্ত একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে এরকম একটি চুক্তি রয়েছে এবং এর আওতায় পাঁচ হাজারের বেশি আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্য সেখানে কাজ করেন। একইভাবে কাতারের সঙ্গেও আজকে একটি চুক্তি সই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যার আওতায় এক হাজার ১২৯ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ওখানে (কাতারে) লিওনে বা ডেপুটেশনে (প্রেষণ) কাজ করবেন। এ চুক্তির মেয়াদ হবে সাধারণত পাঁচ বছর। তবে এটি অটোমেটিক্যালি রিনিউ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ