Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকাসহ ৫ জেলার অবৈধ ইটভাটা ২ সপ্তাহে উচ্ছেদের নির্দেশ

ঢাকার বায়ূদূষণ রোধে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অসন্তোষ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ঢাকাসহ দেশের ৫ জেলার সমুদয় ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া রাজধানীর দূষণ রোধে বালুময় রাস্তায় পানি ছিটানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রিটের শুনানি শেষে গতকাল সোমবার বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। জেলা হচ্ছে, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর। ইটভাটা উচ্ছেদের পর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ’র প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। সরকারপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার শুনানিতে অংশ নেন। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট আমাতুল করিম।

আদেশের বিষয়ে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, বায়ুদূষণ রোধে ঢাকাসহ পাঁচ জেলার সব অবৈধ ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ধুলোবালিময় রাস্তায় ভালো করে পানি ছিটাতে বলেছেন আদালত। একই সঙ্গে নির্মাণকাজ চলা বাড়ি বা রাস্তা এবং মাটি-বালু বহনকারী গাড়িগুলো ঢেকে রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের এসব আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শুনানিতে আদালত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের দেয়া প্রতিবেদনে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আদালত বলেন, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের ডাকতে এখন লজ্জ্বা লাগে। ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৬-৭ বার দূষণরোধে বিভিন্ন আদেশ দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।

এর আগে ২০২১ সালে হাইকোর্টে জমা দেয়া প্রতিবেদনে ১০০টির বেশি অবৈধ ইটভাটা থাকার কথা বলা হয়। উচ্ছেদের পর এখনও (২০২৩ সালে) ২০০টির বেশি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। তাই দুই সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের আবারও দূষণরোধে আদেশ কার্যকর করে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দেন। রিটকারী এই আইনজীবী আরও বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা ‘যথেষ্ট নয়’ বলেছেন আদালত। কয়েকটা গাড়ির কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু অবৈধ ইটভাটার উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেয়নি। তাই দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার আশপাশের পাঁচ জেলায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে পরিবেশ অধিদপ্তরকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। সিটি করপোরেশনকে বলেছেন সড়কে পর্যাপ্ত পানি ছিটাতে। ঢাকা শহরের মধ্যে বালু বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলো ঢেকে পরিবহন করা, যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গা ঢেকে রাখাসহ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

এর আগে ২০২০ সালে বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এগুলো হচ্ছে (১) ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহন করতে হবে। (২) যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গা ঠিকাদাররা ঢেকে রাখবেন । (৩) ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিলো, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। (৪) সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণকাজ এবং কার্পেটিং যেসব কাজ চলছে, যেসব কাজ যেন আইন কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। (৫) যেসব গাড়ি কলো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে বলা হয়েছে। (৬) সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরোনো হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ। (৭) লাইসেন্সবিহীনভাবে চলা ইটভাটাগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ কওে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। (৮) পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকিলিং বন্ধ করতে হবে এবং (৯) মার্কেট ও দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে এবং তা মার্কেট ও দোকান বন্ধের পর সিটি করপোরেশনকে অপসারণ করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ