ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-৫) এর সাউদার্ন রুটের নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা টাকার অঙ্কে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। মোট খরচের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবি। কিন্তু সরকার এই প্রকল্পে বিনিয়োগ চায় ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এজন্য বাকি আরও ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করতে এডিবিকে অনুরোধ করেছে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ। আর বাকি ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করার কথা সরকারের।
গতকাল রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এমআরটি রুট-৫ (সাউদার্ন)-এর দ্বিতীয় কর্মশালায় ডিএমটিসিএল এমডি এম এন ছিদ্দিক এসব এসব তথ্য জানান। এসময় এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর ঝিয়াংগু মেইন এবং সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী উপস্থিত ছিলেন।

২০৩০ সালের মধ্যে এমআরটি-৫ (সাউদার্ন) রুটের নির্মাণ সম্পন্ন করার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে এম এন ছিদ্দিক বলেন, এবিডির অর্থায়নে এই প্রথম মেট্রোরেলের কোনো প্রজেক্টে বিনিয়োগ করছে। এই প্রকল্পে এডিবির কাছে অনুরোধ, বিনিয়োগ আরও ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যেন তারা বাড়ায়। এডিবির জন্যে এটি বড় কোনো অর্থ নয়। আশা করি এডিবি তাদের সহয়তা অব্যাবহ রাখবে। এম এন ছিদ্দিক বলেন, এডিবি বর্তমানে যা অর্থ দিচ্ছে, তার থেকে অল্প কিছু দিলে পুরো প্রকল্প এডিবির অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

এদিকে, মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজের জন্য রাজধানীর অদূরে পূর্বাচল এক্সপ্রেস হাইওয়ের তেমন ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।
তিনি বলেছেন, যেকোনো কাজ করতে গেলেই কিছু সমস্যা হয়। পূর্বাচল অংশে মেট্রো রেলের কাজ চলাকালে হয়ত রাস্তার সামান্য ব্যত্যয় হতে পারে। সেখানে ব্যারিকেড দেওয়া হবে। আইল্যান্ড ভাঙা পড়বে। রাস্তার কিছু অংশ ভাঙা পড়বে। এটাকে রাস্তা কাটা বলা যাবে না। গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে এমআরটি লাইন-৫ এর স্টেক হোল্ডারদের মিটিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে কারও জমি, কারও ভবন আবার কারও বাড়ি ভাঙা পড়ে। তার জন্য অবশ্যই আমরা ক্ষতিপূরণ দিই। তার আগে কতটুকু ক্ষতি হবে, তা স্টাডি করি। এ ক্ষেত্রে ৩০০ ফিট সড়কের তেমন ক্ষতি হবে না। সামান্য ক্ষতি হবে। এতে রাস্তার বিশাল ক্ষতি হবে, এটা বলা যাবে না।

প্রসঙ্গত, এমআরটি-৫ দুটি রুটে বিভক্ত। প্রথমটি নর্দার্ন রুট এবং দ্বিতীয়টি সাউদার্ন রুট। ২০২৮ সালের মধ্যে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত পাতাল ও উড়াল সমন্বয়ে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ (পাতাল ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার এবং উড়াল ৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার) এবং ১৪টি স্টেশন (পাতাল নয়টি এবং উড়াল পাঁচটি) বিশিষ্ট মেট্রোরেল নির্মাণে নর্দার্ন রুট। হেমায়েতপুর ডিপো ও ডিপো এক্সেস করিডোর নির্মাণের জন্য ৯৯ দশমিক ২৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

২০৩০ সালের মধ্যে গাবতলী থেকে আফতাব নগর পশ্চিম পর্যন্ত ১২ দশমিক ৮০ কিলোমিটার পাতাল এবং আফতাবনগর সেন্টার থেকে দাশেরকান্দি পুর্যন্ত ৪ দশমিক ৬০ কিলোমিটার উড়াল মোট ১৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৫ এবং ১৫টি স্টেশন (পাতাল ১১টি এবং উড়াল ৪টি) বিশেষ্ট মেট্রোরেল নির্মাণে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে।