Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘সরকার আরও কয়েকটি ভয়াবহ আইন বানানোর পাঁয়তারা করছে’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:৩৩ পিএম

‘অবৈধ’ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সরকার ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তারই একটি মাধ্যম। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট, ডিজিটাল বিজনেস অ্যাক্ট নামে আরও কয়েকটি ভয়াবহ আইন বানানোর পাঁয়তারা করছে।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে নাগরিক স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। উদ্যোক্তা ও লেখক মুশতাক আহমেদের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। বক্তারা বলেন, এর আগে ৫৭ ধারা নিয়ে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে সরকার তা বাতিলের ঘোষণা দেয়। কিন্তু বাতিলের নামে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে আরেকটি ভয়াবহ আইন করে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে। দেশি-বিদেশি অনেক আন্দোলন, সমালোচনার মুখে সরকার বিভিন্ন সময় তা সংস্কার বা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের কথা বলে।

কিন্তু আজ পর্যন্ত এ আইন বহাল আছে বরং আরও ভয়াবহ আইন বানানোর প্রস্তুতি চলছে। এ অবস্থায় বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল গণবিরোধী, নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করতে হবে। ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্য-এর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সুশাসনের জন্য নাগরিক-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অ্যাডভোকেট সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং অধ্যাপক মানস চৌধুরী।

সভায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারের হাতিয়ার নিবর্তনমূলক আইন। সরকার এসব আইনে প্রতিবাদী মানুষদের ভুগায়, যেন আসল ক্রিমিনালরা নির্বিঘ্নে বালু উত্তোলন, পাহাড় কাটাসহ পরিবেশ এবং দেশধ্বংসী কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চালাতে পারে। এসব আইনে শুধু ভুক্তভোগীদের জীবন-অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় তা নয়, তার পরিবারসহ সমাজকে অনেক ভুগতে হয়।

অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, এ আইন দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য। তাই কেবল বাতিল নয়, সঙ্গে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ এবং মিথ্যা মামলাকারীদের বিচার করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে যারা এখনও সোচ্চার হচ্ছেন না তাদের কটাক্ষ করে ফটো জার্নালিস্ট শহীদুল আলম বলেন, চুপ থাকার জন্য তাদের প্রশ্নবিদ্ধ হতে হবে, উত্তর দিতে হবে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যারা জেল খেটেছেন, জেল থেকে বের হয়েও চুপ না থেকে সাহসের সঙ্গে মাঠে লড়ছেন, তাদের ধন্যবাদ। এ মানুষরাই একদিন দেশটাকে পরিবর্তন করবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, কেবল আইনটি বাতিল নয়, এমন নিবর্তনমূলক আইন বানানোর ক্ষমতা কাঠামোকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। রাষ্ট্রে জনগণের হক নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র ব্যবস্থার বদল লাগবে।

স্মরণ সভা সঞ্চালনা করেন আর্কিটেক্ট গোলাম মাহফুজ জোয়ার্দার। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, সমাজসেবক ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল, রাজনীতিবিদ শহিদুল হক হায়দারী, প্রীতম দাশ এবং দিদারুল ভূঁইয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ