পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঝিলাম, চেনাব, রাভী, বিয়াস ও সাতরুজ নামের ৫টি নদী পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বলে সিন্ধুকে বলা হয় পঞ্চ নদীর দেশ। এই নদীগুলোরই পৌরাণিক নাম বিতস্তা, চন্দ্রভাগা, ইরাবতি, বিপাশা ও শতদ্রু। প্রায় বৃষ্টিহীন প্রকৃতির এই নদীগুলো পাকিস্তান অঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থাপনার অপরীসিম ভূমিকা রাখে তাই এই নদীগুলোকে সেখানে জাতিগতভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। নদীগুলোকে নিয়ে গর্ব করে তারা।
একইভাবে ভারতের প্রধানতম নদী গঙ্গাকে মাতৃজ্ঞানে পূজা করা হয়।
একইভাবে বাংলাদেশের উত্তর এলাকায় ২টি সংসদীয় আসন এবং ৫টি উপজেলা এবং ৫টি মাঝারি ও ছোট নদী প্রবাহিত হচ্ছে জয়পুরহাটের ওপর দিয়ে। নদীগুলো হলো-ছোট যমুনা, চিরি, হারাবতি, তুলশীগঙ্গা ও শ্রী নদী। সুদূর অতীতকাল থেকেই এই পাঁচটি নদীকে ঘিরেই জয়পুরহাটের কৃষি, যোগাযোগের আবর্তন চক্র চলমান ছিল। নদী ৫টি ছিল মৎস সম্পদের একমাত্র প্রাকৃতিক উৎস। মোঘল ও বৃটিশ আমলে উচ্চভূমির এই জেলায় বেশকিছু বড়বড় দীঘি ও পুকুর খনন করে দেওয়া হয় মানুষের পানির চাহিদা মেটানোর জন্য।
আজ থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর আগেও বর্ষাকালে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হত তখন জয়পুরহাটের নদীগুলো সারাবছরই থাকতো পানিতে টইটম্বুর স্রোতস্বিনী।
কিন্তু কালের পরিক্রমায় ও আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বিবর্তনে সারাদেশের তুলনায় উত্তরাঞ্চলে এবং জয়পুরহাটে বছর বছর কমছে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের হার। এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত টানা সাড়ে তিন মাস হয়ে বৃষ্টির দেখা মেলেনি জয়পুরহাটসহ উত্তরাঞ্চলে। অবশ্য নদীগুলোর উৎস এলাকা অর্থাৎ ভারতেও বৃষ্টির দেখা নেই মোটেও। ফলে চৈত্র মাসের অনেক আগেই শুকিয়ে গেছে খাল, বিল, পুকুর। সেই সাথে পানিশুণ্য হয়ে গেছে জয়পুরহাটের ৫টি নদীর বুক। জয়পুরহাটের নদীকুলবর্তি মানুষের টানা খরায় ধুঁকছে জয়পুরহাটের নদীগুলো ।
নদ/নদীর সুরক্ষা, দখলদারীর মনোবৃত্তির অবসানে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধি খুবই জরুরি বলে মনে করেন জয়পুরহাটের সমাজকর্মী ‘নদী ঘোরাও নদীর পথে’ নামক একটি জাতীয় নদী রক্ষা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম সোহেল। তিনি জানান, তারা সাংগঠনিকভাবে নদী রক্ষায় সভা, সেমিনার, বইপত্র প্রকাশ ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ করে যাচ্ছেন অনেকদিন ধরেই।
জয়পুরহাট সদরের খঞ্জনপুরের একটি নার্সারীর মালিক ও পরিবেশ আন্দোলন কর্মি গোলাম মওলা মুন্না বলেন, যেভাবে প্রতিবছর বৃষ্টির হার কমছে, এমতাবস্থায় আবার কৃষিকাজের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বাড়ছে, এতে করে শেষ পর্যন্ত এই জনপদে গুরুতর পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে বলে মনে করেন তিনি।
জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, জয়পুরহাটের নদীগুলি বৃষ্টি নির্ভর, তাই এই সময়টায় নদীগুলিতে পানির প্রবাহ থাকেনা। তবে স্বাভাবিক মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হলে নদীগুলোর নাব্যতা বজায় রাখতে সম্প্রতি ব্যাপকভাবে ড্রেজিং করা হয়েছে। তিনি জানান, তুলশীগঙ্গা, ছোট যমুনা, চিরি ও হারাবতি নদী পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২২ এই তিন বছরে ১২৭ কোটি ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩০ দমমিক ৩৫ কিঃ মিঃ পর্যন্ত পুনঃ খননের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৩০ দশমিক ৬৭ কিঃ মিঃ বাঁধ পুনরাকৃতিকরণসহ তুলশীগঙ্গাং ৫৪ কিঃ মিঃ, ছোট যমুনায় ৩৮ দশমিক ৬০ , চিরি ২১ দশমিক ৭০ কিঃ মিঃ এবং হারাবতি নদীর ১৬ দশমিক ০৫ কিঃ মিঃ এলাকা পুনঃখনন করা হয়েছে।
জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এবং জয়পুরহাট সদর আসনের সংসদ সদস্য শামসুল আলম
দুদু বলেন, উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষায়ও সরকার সচেতন। সে কারণে ইতোমধ্যেই জয়পুরহাটের নদীগুলোর পুনঃখননের কাজ করা হয়েছে। এর ফলে নদীগুলোর অবলুপ্তি বা অপমৃত্যুর আশঙ্কা দূর হয়েছে।
জয়পুরহাটের মৎস্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী এ জেলায় মোট ১৪ হাজার ৪৪৬টি পুকুরের সবকটিতেই এখন মৎস্যচাষ হচ্ছে। এখান থেকে বছরে গড়ে ১২ হাজার ৫৭০ মেট্রিক টন মাছের সরবরাহ আসে। তবে নদীপাড়ের মানুষের বক্তব্য যদি জয়পুরহাটের ৫টি নদীতে স্বাভাবিক পারি প্রবাহ থাকে তাহলে বিনা চাষেই এর চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে মাছের সরবরাহ পাওয়া যেত ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।