পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুঃখ প্রকাশ করেছে অপারেটরটি ব্যাখ্যা চেয়েছে বিটিআরসি
দেশে সচল থাকা ১৮ কোটি ৮ লাখ মোবাইল সিমের মধ্যে ৭ কোটি ৯৩ লাখই গ্রামীণফোন। অর্থাৎ, দেশের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের ৪২ শতাংশই গ্রামীণফোনের গ্রাহক। গ্রাহক সংখ্যায় শীর্ষে থাকলেও সেবার মান নিয়ে সব সময় তলানিতে থাকার অভিযোগ এই অপারেটরটির বিরুদ্ধে। কলড্রপ, মিউট কল, নি¤œমানের ইন্টারনেট সেবা, চমকপ্রদ প্যাকেজ ঘোষণার আড়ালে গ্রাহকের অর্থ লোপাট কোন অভিযোগই বাদ নেই গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে। এবার অপারেটরটির নেওয়ার্ক বিপর্যয়ে আড়াই ঘণ্টা অন্ধকারে ছিলেন তাদের গ্রাহকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত গ্রামীণফোনের সিমে কোন ধরণের নেটওয়ার্কই পাননি তারা। এর ফলে বন্ধ ছিল কল করা কিংবা কল আসা, ইন্টারনেট সেবাও। তবে নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ে কেবল দুঃখ প্রকাশ করেই দায় সারছে অপারেটরটি, অন্যদিকে এর ব্যাখ্যা চেয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা-বিটিআরসি। এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশন খাইরুল বাশার জানান, বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করেই এই অভিযোগ আসে। পরে দেখা যায়, একই সময়ে উত্তরাঞ্চলের ৪টি ভিন্ন স্থানে ফাইবার ক্যাবল কাটা পড়ার কারণে এই নেটওয়ার্ক বিপর্যয় দেখা দেয়। তিনি বলেন, ফাইবার অপটিকস কেবল বিচ্ছিন্ন হয়ে সাময়িকভাবে কল করতে অসুবিধা হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। দুপুর দুইটার দিকে খাইরুল বাশার জানান, দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক হয়েছে।
জানা যায়, গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের পর থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন গ্রাহকরা। বিভ্রাটের এই সময়টায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণফোন ব্যবহারকারীরা মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাচ্ছিলেন না। ফলে কথা বলার পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবাও পাওয়া যাচ্ছিল না। জরুরি যোগাযোগ করতে না পেরে এই সময়ে ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা। অনেকে প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পরে উদ্বেগের মধ্যে পড়েন, অনেকের ব্যবসায়িক যোগাযোগ বা পেশাগত দায়িত্ব পালনও বিঘিœতহয়।
রবিউজ্জামান নামে গ্রামীণফোনের এক গ্রাহক বলেন, তিনি গ্রামীণফোন সিম থেকে কোন কল করতে পারছিলেন না। এতে তিনি চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। কারণ তার এই নাম্বার দিয়েই তিনি গুরুত্বপূর্ণ অফিসিয়াল কাজে যোগাযোগ করে থাকেন।
নেটওয়ার্ক বিভ্রাটে ভোগান্তিতে পড়ে অনেকেই সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে অভিযোগ জানাতে থাকেন। কানিজ ফাতেমা নামে একজন ফেইসবুকে লেখেন, নেটওয়ার্ক না থাকায় তিনি কথাই বলতে পারছেন না। কাওসার শাকিল নামে একজন লিখেন, “জিপি ইজ গন।” এসকে লিমন হোসেন লিখেন, ‘গ্রামীণ সিমের নেটওয়ার্ক শূন্য’। ফরিদপুরের বাসিন্দা তরুণ লিখেন, ‘বø্যাকআউট গ্রামীণফোন।’ রাজীবুল হাসান লিখেন, ‘মোবাইল নেটওয়ার্কের কী হয়েছে?’ মোবাইল ফোনে গ্রামীণফোনের নেওয়ার্ক না পেয়ে এভাবে শতশত ব্যবহারকারী ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গ্রামীণফোনের ফেইসবুক পেইজে সে সময় এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফাইবার অপটিক কেবল বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে সাময়িকভাবে অসুবিধায় পড়েছেন গ্রাহকরা, সেজন্য গ্রামীণফোন ‘আন্তরিকভাবে দুঃখিত’। দ্রæত সমস্যা সমাধানে আমাদের টিম সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যাচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তরফ থেকে ব্যাখ্যা চেয়ে একটি জরুরি চিঠি পাঠানো হয় গ্রামীণফোনের সিইওকে। বিটিআরসির পরিচলক (ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগ) মো. গোলাম রাজ্জাক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, গ্রাহকের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায় যে, দেশব্যাপী মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রাপ্তিতে বিঘœতার সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর হিসেবে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় গ্রাহকসমূহ মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রাপ্তিতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সকল শ্রেণীর গ্রাহকগণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এমতাবস্থায়, জাতীয় জরুরি অবস্থা বিবেচনায় গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের সঠিক কারণ ব্যাখ্যাসহ অতি দ্রæত জরুরি ভিত্তিতে দেশব্যাপী গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল।
এদিকে গ্রামীণফোনের ফাইবার বিচ্ছিন্নের কারণে সারা দেশে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় হয়েছে এই বক্তব্য বা দাবি যুক্তিসঙ্গত নয় বলে মনে করে মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জিপির এই খোড়া যুক্তি মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। প্রথমত, যদি টাঙ্গাইল এবং সিরাজগঞ্জে ফাইবার কেবল বিচ্ছিন্ন হয় তাহলে সারাদেশে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় হলো কেন? দ্বিতীয়ত, ওই ফাইবার যদি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট অথবা ফাইবার এট হোমের হয়ে থাকে তাহলে অন্য অপারেটরদের একইভাবে নেটওয়ার্ক সমস্যায় পড়ার কথা কিন্তু তা হয়নি। তৃতীয়ত, জিপি ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ফাইবার কানেকশনের মাধ্যমে গ্রাহকদের সার্ভিস দিয়ে থাকে। তারা মাইক্রোওয়ে ব্যবহার করে মোবাইল নেটওয়ার্ক সক্রিয় করে রাখে। যদি ধরেও নিই সাময়িক সময়ের জন্য ফাইবার কানেকশন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাহলেও তারা মাইক্রোওয়েভ দিয়ে সার্ভিস দিতে পারতো। হতে পারে নেটওয়ার্ক অতটা স্ট্রং হতো না তবে মোটামুটি সার্ভিস দিয়ে রাখতে পারতো।
তিনি বলেন, আমাদের ধারণা গ্রামীণফোন সত্য গোপন করেছে। হতে পারে তাদের সুইচিং অপারেশনে বড় কোন বিপর্যয় ঘটেছে। কমিশনের উচিত দ্রæত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত সত্য বের করা। সেই সাথে গ্রাহকদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া জিপির দায়িত্ব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।