Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই ভাঙা হচ্ছিল ভবন!

দেয়াল ধসে ২ জনের মৃত্যু

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৩ এএম

কোনো প্রকার নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই নগরীর ব্যস্ততম জামালখান সড়কের পাশে পরিত্যক্ত একটি ভবন ভাঙা হচ্ছিল। এ সময় একটি দেয়াল ধসে ফুটপাতে পড়লে চাপা পড়ে মারা যান দুইজন। তারা হলেন ভবন মালিকের ভাতিজা রণ ভট্টাচার্য ও ভবন ভাঙার দায়িত্বে নিয়োজিত সুপার ভাইজার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
গতকাল বুধবার বিকেলে জামালখান সিকদার হোটেলের পাশে এ ঘটনা ঘটেছে। মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের ভোলার লালমোহনে। চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল হালিম জানান, ভবনের একাংশ ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে। এসময় একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। রণ ভট্টাচার্যকে গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থলে থাকা জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন জানান, দোতলা ভবনটি প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো। প্রায় ১৫ বছর আগে সেটি কেনেন রতন ভট্টাচার্য নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি ভবনটিকে পণ্যের গুদাম হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। মাসখানেক আগে ভবনটি ত্রিপল দিয়ে মুড়িয়ে ফেলা হয়। ভবনের পেছনের অংশ প্রায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। সামনের দিকে অর্থাৎ ফুটপাতের দিকে আসার পর ত্রিপল খুলে বাঁশের ঘেরা দেয়া হয়েছিল। এখন দেখছি বাঁশও নেই। ভাঙার সময় কার্নিশের অংশ ভেঙে পড়ে একজন নিহত হয়েছেন। বিকেল ৪টার দিকে জামালখানে তিন-চারটি স্কুল ছুটি হয়। শিশুদের নিয়ে অভিভাবকেরা জামালখানের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যান। শিশু কিংবা তাদের অভিভাবকদেরও বড় ধরনের বিপদ হতে পারতো। এভাবে ভবন ভাঙার কাজ করা উচিৎ হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, ভবনটা একদম জরাজীর্ণ ছিল। এটা ভাঙার জন্য যে নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকার কথা, তার কিছুই ছিল না। বিল্ডিং কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে না।
কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল কবীর বলেন, ফুটপাতের পাশে ভবনের দেয়াল ভাঙার সময় একাংশ ভেঙে ফুটপাতে পড়ে। একজন নিহত হয়েছেন। নিহত জসিম ভবন ভাঙার দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপার ভাইজার। জনবহুল এলাকায় এ ধরনের ভবন ভাঙার সময় নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়া হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ওই ফুটপাত হয়ে প্রতিনিয়তই অসংখ্য মানুষ চলাচল করে। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওসি।
উল্লেখ্য, নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই চট্টগ্রাম নগরীতে ভবন ভাঙা-গড়ার কাজ চলছে। সম্প্রতি বাকলিয়ায় কল্পলোক আবাসিক এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে পরে একই সাথে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও এসব তদারকির দায়িত্বে যারা থাকেন তারা নির্বিকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ